শেষ সপ্তাহে বইমেলা
প্রত্যাশার চেয়েও প্রাপ্তি বেশি
প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০২২, ০০:০০ | আপডেট: ১০ মার্চ ২০২২, ১০:১৪
বুধবার শেষ সপ্তাহে পা দিয়েছে অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২২। শুরুতে সময় কমানো হলেও অবশেষে মাসব্যাপী মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় আয়োজক বাংলা একাডেমি। ফলে শেষ মুহূর্তের বই সংগ্রহে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করছে পাঠক দর্শনার্থীরা। অন্যদিকে মেলার শেষটা জমজমাট রাখতে কোনো কমতি রাখছে না প্রকাশনা সংশ্লিষ্টরা। নতুন বই আনার পাশাপাশি প্রচার-প্রচারনা বৃদ্ধিসহ দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ছাড়। প্রকাশকরা বলছেন, স্বাভাবিকভাবেই বইমেলায় শেষ সপ্তাহে বই বিক্রি দ্বিগুণেরও বেশি হয়। তবে মহামারির শঙ্কা নিয়ে মাসব্যাপী বইমেলা আয়োজন করতে পারাটাই এই শিল্পের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। শেষ যদি বইয়ের বিক্রি তেমন না হলেও প্রত্যাশার চেয়েও প্রাপ্তি বেশি। এ ছাড়া প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে থাকা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানসহ সংশ্লিষ্টরা এর ফলে ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে বুধবার বিকাল থেকেই মেলা প্রাঙ্গণে বাড়তে থাতে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়। তবে এবার ঘুরতে নয়, এসেছেন বই কিনতে। এদিন মেলায় আগত বেশিরভাগ দর্শনার্থীর লক্ষ্যই বই সংগ্রহের। এ ছাড়া বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে পাঠক বইয়ের সঙ্গে খুঁজে পেয়েছেন লেখককেও। সরাসরি বই সম্পর্কে পাঠককে ধারণা দিতে দেখা গেছে তাদের। মূলত বইয়ের প্রচার প্রকাশ ও পাঠকের আগ্রহ তৈরিতে এ উদ্যোগ নিয়েছে অনেকেই। এসময় ক্রতা-দর্শনার্থী জানান, সরাসরি লেখকের কাছ থেকে বই সম্পর্কে জানতে পারাটা দারুণ একটা বিষয়। ফলে সহজেই বইটার সঙ্গে ক্রেতার একটা সম্পর্ক হয়ে যায়। এদিকে মেলার শুরু থেকেই বই সম্পর্কে লেখককে বেশি বেশি বলা ও জানানোর সুযোগ করে দেওয়া দরকার বলে মনে করেন শিল্প সমালোচকরা। এজন্য কারণ আনুষ্ঠানিক মঞ্চের দরকার নেই বলে মনে করেন তারা। অন্যদিকে শেষ সপ্তাহে আরও বেশকিছু নতুন বই প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা। যদিও হাতে থাকা প্রায় সব বই ইতোমধ্যে মেলায় এনেছেন প্রায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই। তবে শেষ সপ্তাহে পাঠককে নতুন একটা বই দিতে কোনো কমতি রাখছে না প্রকাশনাগুলো। পার্ল পাবলিকেশন্সের প্রকাশক তুষার বলেন, বিগত বছরের লোকসান ভারে নতুন বইয়ের সংখ্যা কমিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলাম। এ ছাড়া এবারও মেলার শুরুর শঙ্কার কারণে তা আরও কম ছিল। তবে মাসব্যাপী মেলা আয়োজন ও ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহে, নতুন বইয়ের জন্য লেখা সংগ্রহ করেছি। সৃজনশীল প্রকাশনা সমিতির সভাপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, মাসব্যাপী মেলা আয়োজনে প্রায় বন্ধ হতে যাওয়া প্রকাশনাগুলো রক্ষা পাবে। এ ছাড়া সারাদেশে বই মুদ্রণ ও বিপণনে কয়েক লাখ মানুষকে তার পেশাও বদল করতে হবে। সব মিলিয়ে এবার বইমেলা সফলতা এই শিল্পের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। হয়তো শেষ সপ্তাহে কারও বিক্রি কম কিংবা বেশি হবে তবে প্রত্যাশার চেয়ে এবারের মেলায় প্রাপ্তি অনেক। বুধবার অমর একুশে বইমেলার ২৩তম দিনে নতুন বই এসেছে ৫২টি। এ ছাড়া বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। নির্ধারিত প্রাবন্ধিক সরকার আবদুল মান্নানের অনুপস্থিতিতে তার প্রবন্ধটি পাঠ করে শোনানো হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন কেরামত মওলা, গোলাম কুদ্দুছ এবং সৌম্য সালেক। সভাপতিত্ব করেন কবি কামাল চৌধুরী। এবং লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন তপন বাগচী।