প্রায় শেষের পথে অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২২। ১৭ মার্চ পর্দা নামছে মাসব্যাপী এই আয়োজনের। তাই বইমেলার শেষ ছুটির দিন রীতিমতো উৎসবে পরিণত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। প্রত্যেকেই সংগ্রহ করেছেন পছন্দের বই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ছিল তাদের উপস্থিতি। এদিকে চলমান সংকটের মধ্যেও দর্শনার্থীপূর্ণ জমজমাট একটা মেলাই বড় প্রাপ্তি হিসেবে দেখেছেন প্রকাশনা সংশ্লিষ্টরা। শনিবার সকাল থেকেই মেলায় বাড়তে থাকে বইপ্রেমীদের আনাগোনা। সবাই বই দেখেছেন এবং কিনেছেন। এছাড়াও মেলা প্রাঙ্গণে পাঠকদের সঙ্গে সময় কাটাতে দেখা গেছে লেখক-কবিদের। এদিকে শেষ ছুটির দিনে কাঙ্ক্ষিত বিকিকিনিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রকাশকরা। এবারও মেলায় প্রায় ৩ হাজার নতুন বই এলেও বিক্রির বড় অংশই ছিল পুরনো বই। এছাড়াও দর্শনার্থীর তুলনায় ক্রেতা সংখ্যা কম জানিয়েছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। মেলা প্রাঙ্গণে এ বিষয়ে কথা হয় জনপ্রিয় লেখক ও সাহিত্যিক ডক্টর মুহাম্মাদ জাফর ইকবালের সাথে। তিনি বলেন, নতুন ও তরুণ লেখকদের বড় একটা অংশ যথাযথ প্রস্তুত না হয়েই বই প্রকাশ করছেন। ফলে তা পাঠক চাহিদা হারাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে নতুন বইয়ে। তাই সময়ের আগে বই প্রকাশ না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এজন্য বস্নগসহ বিভিন্ন মিডিয়ামে লেখালেখি করে বই প্রকাশনায় আশা উচিত। এ সময় মেলায় শিশুদের উপস্থিতি ও বইয়ের প্রতি আগ্রহ তাকে মুগ্ধ করছেন বলে জানান তিনি। এদিন সকালে শিশু প্রহরের মধ্যে দিয়ে মেলা কার্যক্রম শুরু হলে রাত পর্যন্ত ছিল তাদের উপস্থিতি। দিনভর কবিতা আবৃত্তি, গান ও ছবি আঁকাসহ সিসিমপুর মঞ্চ মাতিয়ে রাখে এসব শিশুরা। এদিন শিশু কর্নারে বই বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছে এখানকার প্রকাশকরা। শনিবার অমর একুশে বইমেলায় নতুন বই এসেছে ৮০টি। এছাড়াও বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় একুশের গল্প ও উপন্যাস শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রফিকুর রশীদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নাসের রহমান, পাপড়ি রহমান এবং স্বকৃত নোমান। সভাপতিত্ব করেন ইমদাদুল হক মিলন। তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক আন্দোলন কীভাবে রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হতে পারে, তার এক মহান দৃষ্টান্ত বাঙালির ভাষা আন্দোলন। ছাত্র, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীদের মাধ্যমে শুরু হলেও ভাষা আন্দোলন এক সময় বাংলার আপামর জনসাধারণের আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে পরিণত হয়। এছাড়াও লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজের বই নিয়ে আলোচনা করেন পাপড়ি রহমান।