সখিনার স্বপ্ন

প্রকাশ | ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০০:০০ | আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০২২, ০৯:৫৮

জসীম উদ্দীন মুহম্মদ

০১ সখিনা তাড়াতাড়ি হাত চালায়। এখনো অনেক কাজ বাকি। পাশের বাড়ির মজা পুকুরে একবার যেতেই হবে। ওখানে কলমি শাক পাওয়া যায়। কারো চাষ করা নয়। একদম নিরেট প্রাকৃতিক। ভেজালের যুগে এই ঢের! কলমি শাক কদম আলীর খুব পছন্দ। যেদিন কলমি রান্না হয় সেদিন কদম আলী এমনভাবে খায় যে, এর চেয়ে মজার খাবার আর ত্রিভুবনে নেই। সখিনা ঘোমটার আড়ালে মুখ টিপে টিপে হাসে। আর মনে মনে বলে- বড় লোকেরা কোর্মা পোলাও এত মজা করে খায় না। বিয়ের আগে সখিনা ময়মনসিংহ শহরে এক স্যারের বাসায় কাজ করত। স্যারের ছোট ছেলেটি সে কি দুষ্টু! যাকে বলে কলি কালের পোলা। এই কদম আলী লোকটা সখিনার স্বামী। বিয়ে হয়েছে দুই বছর। তখন সখিনার বয়স আঠার। কদম আলীর আটাশ। এই দুই বছরে তাদের কোনো সন্তান হয়নি। অবশ্য হয়নি বললে কিছুটা ভুল হবে; কারণ সখিনা সন্তান নেয়নি। ঝামেলা ঝামেলা লাগে। সে লুকিয়ে লুকিয়ে পরিকল্পনা আপার কাছ থেকে সুখী পিল সংগ্রহ করে নিয়মিত খায়। কদম আলী বিষয়টি বুঝতে পারে না। কদম আলীর সন্তানের প্রতি খুব আগ্রহ। কিন্তু সখিনা কোনো ভুল করতে রাজি নয়। সে আধা শহুরে মেয়ে। তাছাড়া কিছুটা শিক্ষিত। গ্রামের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পাস দিয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে উঠে ছিল। বাবার অভাবের সংসার। তা না হলে রাহেলার মতো সেও এখন কলেজে পড়ত! সখিনার বিয়ের দিন তুমুল বৃষ্টি। সারা বাড়িতে কাদা। তবু বিয়ের আনন্দ থেমে থাকেনি। পাড়ার মেয়েরা দলবেঁধে গীত গেয়ে, হাসি তামাশা করে পুরো বাড়ি মাতিয়ে তুলে। মাঝ রাতে কদম আলীর সঙ্গে সখিনার বিয়ে পরানো হয়। ১০ হাজার টাকা দেন মোহর। নাকের ফুল, কানের দুল আরও ইত্যাদি ইত্যাদি মিলে পাঁচ হাজার টাকা উসুল। মা-বাবা, ভাইবোনকে কাঁদিয়ে সখিনা শ্বশুর বাড়ি যায় সেদিন শেষ রাতে। তখনও বৃষ্টি পুরোপুরি থামেনি। বাসর ঘর। এক পাশে মাটির পিদিম। সখিনা প্রায় ২৪ ঘণ্টার অভুক্ত। ঘরের এখানে সেখানে বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে। সখিনার সেদিকে ভ্রম্নক্ষেপ নেই। সারা দেহ, মনে ভয় ও আনন্দের অভূতপূর্ব মিলন মেলা। লুঙ্গি পড়া কদম আলী বাসর ঘরে প্রবেশ করে। গায়ে কোনো জামা নেই। সখিনা আড় নয়নে স্বামীর দিকে তাকায়। প্রায় অন্ধকারে কদম আলীর কালো শরীর আরও কালো লাগে। সখিনা জড়সড়। মাটির দিকে মুখ। মাথায় বারো হাত লম্বা ঘোমটা! কদম আলী সখিনার দু'হাত ধরে। ঘোমটা সরিয়ে দেয়। সখিনা একটু পেছনে যায়। কদম আলী একটু এগিয়ে আসে। বলে, এই ভয় পাচ্ছ নাকি? আমি তো তোর স্বামী। নিজের স্বামীকে আবার ভয় কিসের? এই বলে কদম আলী আরও নিবিড় হওয়ার চেষ্টা করে। সখিনা কথা বলে না। কদম আলী ফুঁ দিয়ে বাতি নিভিয়ে দেয়। আবার ডাকে আদুরে গলায়, এই সখিনা! এই সখি! এই বার সখিনা চুপ থাকতে পারে না। মুরুব্বিদের মুখে শুনেছে, আলস্নার পরে নাকি স্বামীর স্থান। আধো আধো গলায় বলে, কি বলেন? কদম আলী হা হা হা করে হেসে উঠে। বলে, এই তো আমার সখির মুখে কথা ফুটছে। আবার বলে, একখান কথা কইতাম সখি? সখিনা বলল, কী? আমারে মোহরানার টাকাটা মাফ কইরা দে। সখিনা আমতা আমতা করে বলে, মাফ করতে পারি; তবে আমারও একটা শর্ত আছে। কি শর্ত? এই বলে কদম আলী সখিনার আরও কাছে আসে। সখিনা বাধা দেয় না। স্বামীকে বাধা দেওয়ার চেয়ে বড় পাপ আর নেই। বলে, শর্তটি হলো- আমারে সারা জীবন ভালোবাসন লাগব আর- এইটুকু বলে সখিনা থেমে যায়। কদম আলী ব্যাকুল চিত্তে বলে, আর কী? সখিনা কথা বলে না। মনে মনে ভয় পায়। পাছে স্বামী মাইন্ড করে। তাকে স্বার্থপর, লোভীভাবে। কদম আলী ব্যাপারটি বুঝতে পারে। বলে, আলস্না তোরে আর আমারে জোড়া মিলাইছে। আমি কথা দিতাছি, তোরে সারা জীবন ভালাবাসবাম। আর কী সেইটা তাড়াতাড়ি কইয়া ফালা। ডরের কিছু নেই। এইবার সখিনার মন থেকে ভয়ের কালো মেঘ সরে যায়। স্বামীর বুকে মুখ রাখে। বলে, আমারে একটা জামদানি শাড়ি দেওন লাগব। আমার বহুদিনের স্বপ্ন। ময়মনসিংহ থাকতে স্যারের বউকে দেখতাম পড়ত। আহা কি সুন্দর শাড়ি! স্যারের বউ আমারে সব সময় বলত, সখি, জামদানি শাড়ি পরলে তোমাকে পরীর মতো লাগবে। আমি তোমার জন্য একদিন পরী সাজবার চাই। এক নিঃশ্বাসে এতগুলো কথা বলে সখিনা স্বামীর গলা জড়িয়ে ধরে। কদম আলী একটু হতচকিত হয়। সে জীবনে জামদানি শাড়ির নাম শুনেনি। কত দাম, কোথায় পাওয়া যায় কিছুই জানে না। একটা গাভীর দুধ ও করগাঁও বাজারে সবজি বিক্রি করে কদম আলীদের সংসার কোনো মতে খেয়ে না খেয়ে চলে যায়। ঘরে বৃদ্ধ মা বাবা। ছোট ছোট কয়েকটি ভাইবোন। বড় তিন ভাই, বউদের পরামর্শে আলাদা খায়। বলা যায়, সমস্ত সংসারের জোয়াল কদম আলীর কাঁধে। তবু আজকের এই মধুরাতে কদম আলী বউয়ের মন পূর্ণিমার আলোর মতো রাঙিয়ে দিতে চায়। বলে, অবশ্যই দিবাম। কি খুশি তো? সখিনা স্বামীর গলা আরও শক্ত করে ধরে রাখে। বলে, খুব খুশি খুব খুশি! খুব খুশি। কদম আলী বলে, আমারও একটা কথা আছে। কী কথা? আমারে কিন্তু আপনে কইরা কইতে পারবি না। পর পর লাগে। সখিনা হাসতে হাসতে বলে, না, আমি পারুম না। আমার শরম লাগে। কদম আলী আরও জোরে সখিনাকে বুকে টেনে নেয়। বলে, আয় তোর শরমটা একটু ভাঙাইয়া দেই। ০২ আজ বাদে কাল ঈদ। ঈদুল ফিতর। এইবারের ঈদ সখিনার জন্য অন্যরকম। আজ কদম বাজার থেকে ফিরলেই দুজনে মিলে ভাঙবে মাটির ব্যাংক। গত দুই বছরে জমানো টাকা গুনবে। অতঃপর কদম যাবে শহরে। কিনে আনবে সখিনার স্বপ্নের জামদানি। এখনো কদম আসছে না কেন? সখিনা যত্ন করে ভাত বাড়ে। হাতে নেয় তাল পাতার পাখা। কয়েকদিন যাবত বেজায় গরম। সখিনার শরীরে ঘামাচি। একবার ভেবেছিল কদমকে বলবে একটি ট্যালকম পাউডার কিনার জন্য। পরক্ষণেই মনকে বুঝিয়েছে- তাহলে শাড়ি কিনার টাকা যদি কম পড়ে! এই সখি, এই সখি, তাড়াতাড়ি ভাত দে- এই বলে কদম আলী ঘরে ঢুকে। সখিনা বলে, অনেক দেরি কইরা ফেললা। শহরে যাইবা না? যামুরে পাগলী যামু। অনেক আগেই আইতে চাইছিলাম। কিন্তু আইজ অনেক কাস্টমার। মেলা বিক্রি অইছে। সখিনা খিল খিল করে হাসে। বলে, আমার শাড়ির জন্যই কিন্তু আলস্না রহমত করতাছে। কদম আলীও হাসে। সে হাসিতে আনন্দ যেমন আছে; তেমনি আছে গোটা সংসারের কষ্টের মানচিত্র! দুজনে মিলে ব্যাংক ভাঙল। খুব মজা করে টাকা গুনল। কদম আলীর মনে হলো, পৃথিবীতে টাকা গুণার চেয়ে আনন্দের আর কিছুই নেই। সর্বমোট এক হাজার সাতশ একুশ টাকা। কে জানে এই টাকায় শাড়ি পাওয়া যাবে কিনা! কদম আলীর বুকটা দুরু দুরু করে। কিন্তু সখিনারে বুঝতে দেয় না। বলে, সখি আমি তাইলে শাড়ি কিনতে যাই। সখিনার চোখে মুখে বিশ্ব জয়ের আনন্দ! আমারে নিবা না- এই কথা বলে সখি অন্যদিকে মুখ ফিরায়। আকাশের এক কোণে ঘন কালো মেঘ। অনেক চিল উড়ছে। ঝড়ের আগমনী বার্তা। সখিনার বিয়ের দিনের কথা মনে পড়ে। কদম আলী মুচকি হেসে বলে, তর যাওনের কাম নেই। আব্বা রাগ করব। মেয়ে মানুষ শহরের বাজারে পুরুষ মানুষের সঙ্গে চলব এইডা আমারও ভালা লাগে না। সখিনা আর কথা বাড়ায় না। শুধু বলে, সুন্দর দেইখা কিনবা কিন্তু। কদম আলী সখিনার কপালে আলতো করে একটি চুমো খায়। সখিনা দেখে কদমের চোখে জল। বুঝতে পারে এই কান্না কষ্টের নয়; ভালোবাসার। গর্বে সখিনার বুক ভরে যায়। আর কদম আলী জোড় কদমে শহরের দিকে পা বাড়ায়। ০৩ কদম আলী পিকাপে উঠে। বসার সিট নেই। দাঁড়িয়েও থাকা যায় না। পিকাপের ছাদে মাথা লেগে যায়। গন্তব্য কিশোরগঞ্জ শহর। গৌরাঙ্গ বাজার। ড্রাইভার যথেষ্ট জোরে চালাচ্ছে। কিন্তু কদম আলীর তর সইছে না। ক্ষণে ক্ষণে ভেসে উঠছে সখিনার মায়াবী মুখ। সেই মুখ যেন কদম আলীরে জাদু করেছে। রাস্তার দু'পাশে গাছের সারি। বর্ষার পানি কিছুটা নামতে শুরু করেছে। আকাশের সেই কালো মেঘ এখন আর নেই। কদম আলীর মনে প্রশান্তির ঢেউ। ইতোমধ্যে গাড়ি কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশনের পেছনে এসে থামল। কদম আলী সবার আগে নেমে পড়ল। এই দোস, এই দোস ডাক শুনে কদম আলী পেছনে ফিরে থাকায়। একজন লোক। জীর্ণ-শীর্ণ, রোগা, পাতলা। শরীরের তুলনায় পেট অনেক বড়। হলুদ, কোটরাগত চোখ। মাথার বেশির ভাগই টাক। লাঠি ভর দিয়েও ভালোভাবে হাঁটতে পারছে না। মনে হয় প্রতিবন্ধী। কদম আলী লোকটার দিকে এগিয়ে যায়। জিজ্ঞেস করে, আমারে কিছু কইছেন? লোকটি যেন আকাশ থেকে পড়ে। বলে, আমারে চিনতে পারলা না দোস! আমি মরম আলী। ছোট কালে তোমার বাপে আর আমার বাপে আমরারে দোস্তি পাতাইছিল। অবশ্যি না চিনার অই কথা। সেই আমি আর এই আমি এক না। আকাশ পাতাল ফারাক। কদম আলীর মাথা ঝিম ঝিম করে। পায়ের তলায় মাটি আছে কিনা বুঝতে পারে না। হা ডু ডু খেলায় মরম আলী ছিল অপ্রতিদ্বন্দ্বী। গায়ে সিংহের মতো শক্তি। কেউ তাকে আটকাতে পারত না। একি হাল হয়েছে তার! কদম আলীর বিশ্বাস করতে মন চাইছে না। কদম আলী, মরম আলীকে জড়িয়ে ধরে। দু'জনেরই চোখের জল বাঁধ মানে না। দু'বন্ধু মিলে রেলস্টেশনের উত্তর পাশের বড় বট গাছটার নিচে বসে। কদম আলী জিজ্ঞেস করে, দোস এই অবস্থা কেমনে অইল? আমারে একবার খবর দিলা না কেন? মরম আলী কথা বলে না। চোখের পানি সব প্রশ্নের জবাব দেয়। অবশেষে চোখের জল বুঝি ফুরিয়ে আসে! মরম আলীর মনের ঝড় কিছুটা থামে। বটগাছে বসা একটি পাখি কদম আলীর হাতে হাগু করে দেয়। মরম আলী পাখিটাকে বিশ্রি একটা গালি দেয়। কদম আলী আবার জিজ্ঞেস করে, দোস এই শরীল নিয়া শহরে আইছ ক্যান? মরম আলী ভাবলেশহীন; অথচ দৃঢ় কণ্ঠে জবাব দেয়, তিনডা কাম ঠিক করছি দোস। কোন তিনডা? ভিক্ষা করবাম। চুরি করবাম। এই দুইডাতে কাম না অইলে রেলগাড়ির নিচে ঝাঁপ দিবাম। কদম আলীর মাথা ঘুরে যায়। বলে, দোস, একটা কামও ভালা না। এ ছাড়া আমার যে আর কিছু করার নেই। আলস্না আমারে মরণ দেয় না ক্যান? এই কথা কইতে নেই দোস। আলস্না নারাজ অইব। আসল ঘটনাডা একটু খোলাসা কইরা কও। মরম আলী একটি দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছাড়ে। আর তার অন্তরের কষ্টগুলো বাতাস ভেদ করে কদম আলীর হৃদয়ে এসে ক্ষেপা সাগরের ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ে। অতঃপর মরম আলী বলা শুরু করে- দোস, অনেক সুন্দর মেয়ে দেইখ্যা বাপ মা বিয়া দিছিল। দুই বছরে দুইডা পোলা অইল। সারাদিন কাম করি। সন্ধ্যার সময় অইলে ঘরে আই। বউয়ের সঙ্গে, পোলা পানের সঙ্গে সোহাগ করি। ভালা সুখেই দিন যাইতাছিল। এরপর আমি কডিন অসুখে পড়লাম। ডাকতর বলল, ঠিক মতো অসুধ খাইতে না পারলে বাঁচার আশা নেই। বউপোলা পানরে খাওন দিতে পারি না। কাপড় দিতে পারি না। শেষতক ভিটে মাটি বেইচা দিলাম। অহন থাহনের কোন জায়গা নেই। বউরে মিয়া বাড়িতে কামে পাডাইলাম। হে অইখানে আর যাবার চায় না। মিয়া সাব নাকি শরীর ধরতে চায়। ওর দিকে তাকানো যায় না। একটা ছিঁড়া কাপড়। বদলাইয়া গোসল দিবার পারে না। দিন রাইত আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। শুধু চইল্যা যাইতে চায়। ফাঁস দিয়া মরবার কথা কয়। এই ঈদে ্ত্ত-। কদম আলী আর শুনতে পারে না। চোখের পানি গাল বেয়ে পড়ে। সখিনার কথা ভুলে যায়। ভুলে যায় সখিনার স্বপ্নের কথা। আস্তে আস্তে হাত ঢুকিয়ে দেয় পকেটে। বের করে আনে এক হাজার সাতশ একুশ টাকা। গুঁজে দেয় বাল্যকালের দোস মরম আলীর হাতে। মরম নিতে চায় না। কদম আলীর দু'হাত ধরে কাঁদতে থাকে। ৪ সূর্য পশ্চিম আকাশে হেলে পড়েছে। কিছুক্ষণ পরই গ্রাস করবে অন্ধকার। কদম আলীর মনে আলো আর আঁধারের সমান খেলা। এক চোখে বিজয়ের হাসি। বন্ধুর জন্য কিছু করতে পারার আনন্দ। অন্য চোখে জল। কোনটির দাম বেশি কদম আলী বুঝতে পারে না। তার শুধু মনে হয়, মানুষের জীবনে কেন এমন হয়? বিধাতা তো ইচ্ছে করলেই সবাইকে সুখী করতে পারে। কদম আলী বাড়ির কাছে এসে পড়েছে। বাড়ির সামনের আম গাছটার নিচে সখিনা দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু সখিনাকে দেখে আজ তার পা কাঁপছে কেন? পা আর সামনে চলতে চাইছে না কেন? কদম আলীর অজান্তেই হাত দুটো তার পেছনে চলে যায়। সখিনা হয়তো এই হাতের দিকেই তাকিয়ে আছে।