রাজত্ব শেষ হলো আহসান মঞ্জিলের শেষ রাণীর
প্রকাশ | ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১৩:০১

অবসান নয়, ইতিহাস। একসময়ের নবাবি শান-শওকতের প্রতীক, আজ ইতিহাসের পাতায় শুধুই এক নিঃশব্দ স্মৃতি। নবাব পরিবারের শেষ দিকের সদস্য ও আহসান মঞ্জিলের শেষ রাণী সামসুন্নাহারেরও এবার প্রস্থান হলো অনেকটাই নিরবে। তার মৃত্যুর পরপরই এই রাজকীয় অধ্যায়ের পর্দা নামলো এবার।
জানা যায়, কেবল নবাব পরিবারেই নয়, গোটা ঢাকার ঐতিহ্য ও সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এই রাণী। নবাবী জীবনের শেষ সময়ে, যখন রাজনৈতিক ও আর্থিক অস্থিরতায় পরিবারটি ভাঙনের মুখে, তখন তিনিই ছিলেন ঐতিহ্যকে আগলে রাখার শেষ স্তম্ভ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে নারী নেতৃত্বের অগ্রদূতদের অন্যতম নাম সামসুন্নাহার খাজা আহসানউল্লাহ। নবাব পরিবারের ঐতিহ্যবাহী আবহ থেকে উঠে আসা এই দৃঢ়চেতা নারী শুধুমাত্র পরিবারের মর্যাদা ধরে রাখেননি বরং নিজস্ব কর্মগুণে জায়গা করে নিয়েছেন দেশের জাতীয় রাজনীতিতে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন অন্যতম সক্রিয় ও প্রভাবশালী নেত্রী হিসেবে তাঁর রাজনৈতিক জীবন হয়ে উঠেছে অনুপ্রেরণার প্রতীক। ১৯৩৪ সালে নারায়ণগঞ্জ জেলার এক শৌখিন পরিবারে জন্ম এই রাণীর। তিখর সৌন্দর্যের এই নারীর নজর কাড়ে নবাব পরিবারের রাজা খাজা আহসানউল্লাহর।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ এখন যেমন নিয়মিত ঘটনা, তেমনি এক সময় তা ছিল সাহসিকতার প্রতীক। সামসুন্নাহার ছিলেন সেই সময়ের একজন পথিকৃৎ। বিএনপির হয়ে কাজ করার সময় তিনি রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করেন এবং সমাজসেবামূলক কাজেও সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি – এসব ক্ষেত্রেই তিনি রেখে গেছেন শক্তিশালী ছাপ। শেষ বয়সে অনেকটাই একা ছিলেন তিনি। এমনকি মৃত্যুর সময়ও তার পরিবারের তেমন কেউ ছিল না বললেই চলে।
জানা যায়, তাকে নবাব ও নবাব পরিবারের সদস্যদের সমাধিক্ষেত্র পুরান ঢাকার বেগম বাজারের কেএম আজম লেনে চিরশায়িত করা হয়।
যাযাদি/ এসএম