কোরবানির আগে কমতে শুরু করেছে মসলাপণ্যের বাজারদর
প্রকাশ | ২৬ মে ২০২৫, ১৬:০৭ | আপডেট: ২৬ মে ২০২৫, ১৬:০৯

ঈদুল আজহার বেশিদিন বাকি নেই। এ সময়ে মসলাপণ্যের চাহিদা থাকে সবচেয়ে বেশি। ২০২৪ সালের শেষার্ধে ভোজ্যতেল, চাল, গমসহ একাধিক পণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখিতা খাদ্যশস্যের বাজারকে অস্থিতিশীল করেছিল। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বেশকিছু পণ্যের বাজারদর কমতে শুরু করেছে, বিশেষ করে মসলাপণ্যের।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ আয়োজনকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় মসলাপণ্যের দাম আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কম থাকায় স্বস্তি পাবেন সাধারণ ক্রেতারা।
ঈদের আগে চাহিদা বাড়লেও পর্যাপ্ত সরবরাহের কারণে দাম বাড়ছে না। এ সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে মসলাপণ্যের বুকিং দাম কমতে থাকায় দেশের বাজারে এর প্রভাব পড়েছে। অতিরিক্ত সরবরাহ ও তুলনামূলক চাহিদা কম থাকায় দাম নিম্নমুখী রয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ঈদের আগে দাম আরো কমতে পারে বলেও মনে করছেন তারা।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ মে দেশের খুচরা বাজারে দেশী পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৭০-৭৫ টাকা ও আমদানীকৃত পেঁয়াজের দাম ৭৫-৮০ টাকা। কিন্তু গত শুক্রবার প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়। আমদানীকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৬০-৬৫ টাকায়। ২০২৪ সালের একই সময়ে দেশী আদার দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪০০-৪৫০ টাকা, আমদানীকৃত আদার দাম ছিল ২২০-২৫০ টাকা। যদিও শুক্রবার প্রতি কেজি দেশী আদা মানভেদে বিক্রি হয়েছে ১১০-২৫০ টাকা এবং আমদানীকৃত আদা ১১০-২২০ টাকায়।
একইভাবে দেশী রসুনের দাম ১১০-১৬০ টাকা ও আমদানীকৃত রসুন বিক্রি হয়েছে ১৮৫-২৪০ টাকায়। ২০২৪ সালের একই সময়ে দেশী রসুনের দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৯০-২২০ টাকা ও আমদানীকৃত রসুন ২১০-২৪০ টাকা। পচনশীল মসলাপণ্যের পাশাপাশি জিরা, দারুচিনি, লবঙ্গ, ধনিয়া, গোলমরিচসহ ঈদের প্রয়োজনীয় সব মসলাপণ্যই আগের বছরের চেয়ে কম দামে লেনদেন হচ্ছে খুচরা বাজারে।
বাংলাদেশ গরমমসলা ব্যবসায়ী সমিতির সহসভাপতি অমর কান্তি দাশ বলেন, ‘পাইকারি বাজারে গরমমসলার দাম টানা কমছে। বিশেষ করে এলাচ, জিরা, দারুচিনিসহ বিভিন্ন মসলার দাম ধারাবাহিকভাবে কমছে। চাহিদার তুলনায় আমদানি ও সরবরাহ বৃদ্ধিতে দামে প্রভাব পড়েছে। ঋণপত্র খোলার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর উদার মনোভাব ছাড়াও বিশ্ববাজারের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বাজারে দাম কমছে। তবে পাইকারি বাজারে যে দামে মসলা বিক্রি হচ্ছে, খুচরা বাজারে এর প্রভাব নেই। খুচরা বাজারে দামকে আমলে নিয়ে পাইকারি বাজার মনিটরিং করা হলেও খুচরা বাজার তদারকি না থাকায় ভোক্তারা প্রকৃত সুফল পাচ্ছে না বলে মনে করছেন তিনি।
খাতুনগঞ্জের মসলা ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘কয়েক বছরের মধ্যে মসলার বাজার সবচেয়ে কম। দেশীয় পরিস্থিতি বিবেচনায় আগের তুলনায় মসলার চাহিদা কম থাকলেও বাজারে সরবরাহ বেশি। এতে প্রতিদিনই মসলার বাজার কমছে।’
দেশে ভোগ্যপণ্যের প্রধান পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, পাইকারি পর্যায়ে প্রতি কেজি জিরা ৬০০-৬১০ টাকায়, দেশী হলুদ ১৯৫-২০০, আমদানীকৃত হলুদ ২৩০-২৩৫, দেশী মরিচ ১৩৫-১৪০, আমদানীকৃত মরিচ ২৪০-২৫০, মোটা দারুচিনি ৩৮০-৩৯০, চিকন দারুচিনি ৪৫০-৪৬০, তেজপাতা ১৩০-১৪০, লবঙ্গ ১ হাজার ২৬০, গোলমরিচ ১ হাজার ৯০, ধনিয়া ১৩০, মেথি ১২০, কালজিরা ৩৬০-৩৬৫, সরিষা ৯৫-৯৭, এলাচ ৪ থেকে ৪ হাজার ১০০, জায়ফল ৫৭০ ও জয়ত্রি ২ হাজার ৬৫০ টাকায় লেনদেন হচ্ছে।