নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে উঠছে বাংলাদেশের প্রতিবেদন

আইএমএফ ঋণের দুই কিস্তি ছাড়ের অনুমোদন আজ

প্রকাশ | ২৩ জুন ২০২৫, ০৭:৫৬

বিশেষ প্রতিনিধি
ফাইল ফটো

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী পরিষদের আজকের (বাংলাদেশ সময় রাতে) বৈঠকে বাংলাদেশের অনুকূলে ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।

এ প্রস্তাব অনুমোদিত হলে পরবর্তী কয়েক দিনের মধ্যেই অর্থ ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে জমা দেবে আইএমএফ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ওই অর্থ পেয়ে যাবে। এতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাবে। দুই কিস্তিতে এবার বাংলাদেশ আইএমএফের কাছ থেকে ১৩০ কোটি ডলার পেতে পারে। এর আগে তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে আইএমএফের সদর দপ্তরে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

 


আইএমএফের শর্ত না মানায় ঋণের অর্থ ছাড়ের বিষয়টি গত বছরের ডিসেম্বর থেকে ঝুলে ছিল। দুপক্ষই দরকষাকষি করছিল। কিন্তু কোনো পক্ষই চুক্তি থেকে একেবারে সরে আসেনি। অবশেষে গত মে মাসে দুপক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়। এর আলোকে আইএমএফ ঋণের দুই কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাবটি তাদের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে উপস্থাপনের কথা জানায়।

এবারের অর্থ ছাড় করার শর্ত হিসাবে ডলারের বিনিময় হার পুরোপুরি বাজারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু এরপর বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ডলারের দাম কিছুটা বেড়েছে। রাজস্ব আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরে ব্যাপক সংস্কার আনা হয়েছে। ভর্তুকি কমানোর শর্ত রয়েছে। এটি সরকার কিছুটা কমাচ্ছে। ব্যাংক খাতের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেগুলো আইএমএফকে জানানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর শর্ত ছিল।

 

কিন্তু মূল্যস্ফীতির হার বাড়বে এই বিবেচনায় বিদ্যুতের দাম আপাতত বাড়ানো হবে না বলে বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী মূল্যস্ফীতির হার সহনীয় পর্যায়ে নেমে না আসা পর্যন্ত কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ করতে হবে। এর মানে ঋণের সুদের হার বাড়িয়ে টাকার প্রবাহ কমাতে হবে। কিন্তু বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ঘোষণা করেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে। তখন সুদের হারও কমানো হবে।

বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলার জন্য সহায়ক হিসাবে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ২০২২ সালে আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায়। ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ কঠিন শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশের অনকূলে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। ওই বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনেই ঋণের প্রথম কিস্তি ছাড় করে।