টাঙ্গাইল সমবায় ব্যাংকের সভাপতি কুদরৎ এর বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ

প্রকাশ | ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৭:০১ | আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৩, ১৭:০৭

যাযাদি ডেস্ক

টাঙ্গাইল সমবায় ব্যাংকের অনিয়ম এবং দূর্নীতি নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রচারের পর সংস্থাটির সভাপতি কুদরৎ এ এলাহির বিরুদ্ধে দুদক চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন পুরাতন সমবায় সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির আহ্বায়ক ও ব্যুরো বাংলাদেশ এর নির্বাহী রাহেলা জাকির।

দুদকে দায়ের করা ওই অভিযোগ থেকে জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের প্রায় ১১ কোটি টাকা বেহাত করা হয়েছে। সাধারণ ব্যবসায়ীদের এ অর্থ সংস্থাটির সভাপতি দ্বারা বেহাত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন রাহেলা জাকির।

জানা গেছে, টাঙ্গাইল জেলা সমবায় ব্যাংকের সভাপতি কুদরৎ এ এলাহি বিভিন্ন সময় বির্তকিত হিসাব পরিচালনা করে ব্যাংকের কোটি কোটি টাকা সরিয়ে নিয়েছেন।

সর্বশেষ অডিট রিপোর্ট থেকে জান যায়, ঠিকাদারকে ধার এবং কোর্ট খরচের নামে প্রায় ৯ কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া সমবায় ব্যংকের আওতাধীন পৌর সুপার মার্কেট এর দোকান বরাদ্ধ থেকে আরো কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে নিয়েছেন কুদরৎ।

৭ বছর আগে কুদরত এ এলাহির কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও নানা জায়গায় উপটৌকন দিয়ে তিনি স্বপদে বহাল আছেন তিনি। মূলত, স্বপদে বহাল থেকে সমবায় ব্যাংক থেকে বিশাল অংকের টাকা তছরুপ করার উদ্দেশ্য নিয়েই এমন অপকর্ম করে যাচ্ছেন কুদরৎ এ এলাহি।
 
অভিযোগে আরও বলা হয়, কুদরৎ এ এলাহি তার পর্যদকে পাশ কাটিয়ে চাচাতো বোন জামাই একাউন্টস দিদারুল ইসলামকে দিয়ে সমবায় ব্যাংকের একটি অবৈধ ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করছেন। এ হিসাব পরিচালনা করেন কর্মচারি দিদার এবং কুদরৎ নিজে। যার হিসাব হিসাব নং- ০২০০০১৮৯৫৯১০। গত ৫ মাসে এ হিসাব থেকে কুদরত প্রায় ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন নিজের ব্যক্তিগত কাজে। আইন লঙ্গন করে দিদারকে সাইনিং পাওয়ার দেওয়ায় লেন-দেন করতে জবাবদিহি করতে হয় না সভাপতিকে।  কুদরৎ সভাপতি হিসেবে সমবায় ব্যাংকের তহবিল থেকে ঠিকাদারকে হাওলাত দিয়েছেন ৬ কোটি ৮৫ হাজার ৬শত ৩৪ টাকা। অথচ ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান তাদের ৫ বছর আগের পাওনা এখনো বুঝে পায়নি।
বিভিন্ন ভাবে মামলা পরিচালনার জন্য কুদরৎ এ এলাহি আইনজীবী খরচ হিসেবে ৩ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন। বর্তমানে সমবায় ব্যাংকটির নামে একটি মামলা চলমান। যা পুরাতন দোকানদারা দায়ের করেছেন। এ মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। এর বাইরে সভাপতি নিজে স্বপদে থাকা নিয়ে দেশের শীর্ষ আইনজীবীদের নিজের পক্ষে ব্যবহার করেছেন। পদে থাকা নিয়ে মামলার রায়ে কুদরৎ এলাহি হেরে যান। পরে চেম্বার কোর্টে রায় স্থগিত করে এখনো স্বপথে বহাল আছেন কুদরৎ।

সমবায় ব্যাংকের নতুন নির্বাচন বা অডিট অনিয়ম বিষয়ে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে অধিদপ্তরের নিবন্ধক কুদরৎ এ এলাহির পক্ষেই কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
জেলা সমাবায় বাংক মূলত একজন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে পরিচালিত হয়ে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী জেলা সমাবায় অধিদপ্তরের অডিট অফিসার এ কাজ করে থাকেন। কিন্তু অধিদপ্তরে প্রভাব খাটিয়ে নিজের পছন্দমতো অফিসার নিয়োগ দেয় সংস্থাটির সভাপতি কুদরৎ। সখিপুর উপজেলা সমবায় অফিসার বর্তমানে সমবায় ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি মূলত বর্তমান চেয়ারম্যানের পরমায়েশ মেনেই কাজ কর্ম করছেন।

কুদরৎ এর অন্য কোন আয়ের তেমন উৎস না থাকলেও বর্তমানে অনেক সহায় সম্পতির মালিক হয়েছেন। নিজ স্ত্রীর নামে শহরের প্রানকেন্দ্র ১৮ শতক জায়গার উপর ৫ তলা ভবন নির্মাণ করেন। আধুনিক ফিটিংস দিয়ে বাড়িটি নির্মাণ করতে কমপক্ষে ৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এর বাইরে শহরে আরো সম্পতি কিনেছেন। তাছাড়া কোটি কোটি টাকা খরচ করে কুদরৎ তার এক ছেলেকে লন্ডনে লেখা পড়া করিয়েছেন বলে অভিযোগ থেকে জানা গেছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে চেয়াম্যান কুদরৎ এ এলাহি বলেন, তার নিজের ব্যাংকের বিষয়ে অন্যকে কেন বলবে, এটা দেখবে অধিদপ্তর।

তাছাড়া বিচারাধীন থাকায় বিষয়টি নিয়ে বেশি কিছু বলতে নারাজ এই অভিযুক্ত কর্মকর্তা।