শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বে করোনা মহামারীতেও বেড়েছে গাড়ি বিক্রি

যাযাদি ডেস্ক
  ২১ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:২৮
আপডেট  : ২১ জানুয়ারি ২০২১, ১৬:৫৮

বিশ্ব যখন করোনাভাইরাসে কাহিল তখনও বেড়েছে কোটিপতির সংখ্যা। আর তাদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হচ্ছে বৈদ্যুতিক গাড়ি। এমনকি মহামারীকালেও কমেনি এ গাড়ির চাহিদা। করোনাকালে ২০২০ সালে সব মিলিয়ে গাড়ি বিক্রি এক-পঞ্চমাংশ কমলেও বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বেড়েছে ৪৩ শতাংশ। সংখ্যার হিসাবে যা কিনা ৩০ লাখের বেশি। খবর গার্ডিয়ান।

বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি বাড়ার পেছনে অবশ্য সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে টেসলা। ২০২০ সালের আলোচিত ব্যক্তিত্ব ইলোন মাস্কের এ কোম্পানি গাড়ি বিক্রি করেছে প্রায় পাঁচ লাখ। সুইডেনভিত্তিক পরামর্শক সংস্থা দি ইভি-ভলিউমস ডটকমের দেয়া পরিসংখ্যান মতে, ইউরোপে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি।

২০২০ সালে ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক গাড়ি (বিইভিএস) এবং প্লাগ-ইন হাইব্রিড বৈদ্যুতিক গাড়ির (পিএইচইভিএস) বিক্রি গিয়ে দাঁড়ায় ৪ দশমিক ২ শতাংশে, যা কিনা ২০১৯ সালের ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেশি। দি ইভি-ভলিউমসের বিক্রি ও বিপণন বিভাগের বিশ্লেষক ভিক্টর ইরলে বলেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি বাড়ার পেছনে ভালো ভূমিকা রেখেছে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সরকারগুলোর গ্রহণ করা নীতিমালা। কিন্তু এর বাইরে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, বৈদ্যুতিক গাড়ি প্রযুক্তিগতভাবে অধিকতর সমৃদ্ধ।

তবে ২০২০ সালের প্রথমদিকে বিক্রির অবস্থা অতটা ভালো ছিল না। কভিড-১৯ সংক্রান্ত লকডাউনের কারণে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত সময়ে বিক্রি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় নিচে নেমে যায়। কিন্তু এরপর গাড়ির বাজার আবার দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে এবং ডিসেম্বরে গিয়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ অবস্থায় পৌঁছায়।

এর মাঝে অনেকগুলো দেশের সরকার আগামী এক দশকে জীবাশ্ম জ্বালানিনির্ভর গাড়ির সমাপ্তি টানার ব্যাপারে নিজেদের প্রতিশ্রুতির কথা জানায়। সেটিও বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহারে ক্রেতাদের উৎসাহিত করছে। ইরলে বলেন, রাজনৈতিক চাপও সেখানে রয়েছে। সবখানেই এখন সবুজ পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আওয়াজ শোনা যাচ্ছে।

তবে ইরলের মতে, গাড়ি বিক্রি বাড়ার প্রধান কারণটি ভিন্ন। তিনি বলেন, গাড়ির বিক্রি বাড়ার প্রধান কারণটি খুবই সরল, প্রযুক্তিগত দিক থেকে বৈদ্যুতিক গাড়ি আরো উন্নত। এখানে কোনো কোলাহল নেই, কোনো দূষণ নেই এবং চালানোর খরচও তুলনামূলকভাবে কম। ফলে কেউ যখন পরীক্ষামূলকভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ি চালায়, সে আর কখনো গ্যাসোলিননির্ভর গাড়ির কাছে ফিরে যাবে না। কিন্তু এ মুহূর্তে একটিই সমস্যা হচ্ছে, এ গাড়িগুলোর দাম একটু বেশি। কিন্তু একই সঙ্গে ব্যয়ও কমে যাচ্ছে।

এদিকে গাড়ির তুলনামূলক উচ্চমূল্য হয়তো কভিড-১৯-এর ঝড়ের মাঝেও নির্মাতাদের সাহায্য করেছে। ইরলে বলেন, মন্দাকালে স্বল্পমূল্যের গাড়ির বিক্রি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কারণ যাদের অনেক টাকা রয়েছে, তারা সাধারণত এ ধরনের গাড়িগুলো কেনেন না।

এছাড়া ফ্র্যাঞ্চাইজি ডিলারদের বাদ দিয়ে সরাসরি গ্রাহকদের হাতে গাড়ি বিক্রি করার কারণে হয়তো টেসলা বাকিদের চেয়ে বেশি সফলতা পেয়েছে, কারণ বছরের বেশির ভাগ সময় গাড়ির শোরুমগুলো বন্ধই ছিল।

দি ইভি-ভলিউমস ডট কমের উপাত্তে দেখা গেছে, শীর্ষ পাঁচ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রেতা দেশ হচ্ছে চীন (১৩ লাখ), জার্মানি (চার লাখ), যুক্তরাষ্ট্র (তিন লাখ), ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য (দুই লাখ করে)। বিশেষজ্ঞরা বৈদ্যুতিক গাড়ির এ উচ্চ বিক্রি ২০২১ সালেও বাড়তি থাকবে বলে আশা করছেন। ইরলের মতে, চলতি বছর ৪৬ লাখ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রি হতে পারে।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে