মধ্যপ্রাচ্যের সবজি স্কোয়াশ চাষ হচ্ছে এখন নওগাঁর আত্রাইয়ে

প্রকাশ | ২৫ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৩৭

নওগাঁ প্রতিনিধি

 

উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষকৃত ফসল স্কোয়াশ বাংলাদেশের মাটিতে চাষ করে ব্যাপক সফল হয়েছেন উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের রায়পুর গ্রামের বাবু ও শাহাগোলা ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের কৃষক নাহিদ হোসেন।

 

স্কোয়াশ সবজি এই প্রথমবারের মতো এ উপজেলায় চাষ হচ্ছে। শীতকালীন এই সবজি আবাদ করে মাত্র তিন মাসেই লাভের আশা করছেন কৃষক। এর সঙ্গে সঙ্গে উপজেলার কৃষিতে যোগ হলো আরেকটি নতুুুন সবজি স্কোয়াশ। স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। স্কোয়াশ মূলত উত্তর আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাষ হয়ে থাকে। স্কোয়াশ অনেকটা দেখতে শসা আকৃতির। এটি শসার মতো লম্বা হলেও রং মিষ্টি কুমড়োর মতো। উচ্চফলনশীল জাতের এ সবজি ভাজি, মাছ ও মাংসের তরকারিতে রান্নার উপযোগী, সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এছাড়া এটি সালাদ হিসেবেও খাওয়া যায়।    

      

এ নিয়ে কৃষক বাবু ও নাহিদ হোসেন বলেন, স্কোয়াশ আবাদের সুবিধা হচ্ছে অল্প সময়ে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে ফসল উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ কুমড়া লাগানো যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ স্কোয়াশ লাগানো সম্ভব। পূর্ণবয়স্ক একটি স্কোয়াশ গাছ অল্প জায়গা দখল করে। স্কোয়াশের একেকটি গাছের গোড়ায় ৮ থেকে ১২টি পর্যন্ত ফল বের হয়। কয়েকদিনের মধ্যেই খাওয়ার উপযোগী হয় এটি। বাজারে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। স্কোয়াশ দেখতে অনেকটাই লাউ আকৃতির। উচ্চফলনশীল এই জাতের ফসল ভাজি, মাছ ও মাংসের সঙ্গে রান্না করে খাওয়া যায়। এটা খেতেও সুস্বাদু।

 

বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেন্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। দেশের উচ্চফলনশীল ফসলের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি উৎপাদন করে সাড়া ফেলে দিয়েছেন আত্রাই উপজেলার ভবানীপুরের এ কৃষক। তিন মাসে এ ফসল আবাদ করে তিনি খরচ বাদে হাজার হাজার টাকা আয় করার আশা করছেন। বাজার থেকে স্কোয়াশ সবজির বীজ সংগ্রহ করে পরীক্ষামূলকভাবে সামান্য জমিতে রোপণ করেন কৃষক বাবু ও নাহিদ হোসেন। ওই আবাদে সফল হন তারা দুজনই। পরবর্তীতে তারা দুজনই বড় পরিসরে স্কোয়াশের চাষ করবেন বলে ভাবছেন।

 

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন জানান, স্কোয়াশ সবজি জাতীয় ফসল। যা কুমড়া ও ধুন্দল জাতীয় ফসলের ক্রস। দেশের প্রচলিত কোনো সবজির এমন উৎপাদন ক্ষমতা নেই। তাই এই স্কোয়াশ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে কৃষি অর্থনীতিতে বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন তিনি।

 

যাযাদি/এস