মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নানা সংকটে হুমকির মুখে যুক্তরাজ্যের ফ্যাশন শিল্প

যাযাদি ডেস্ক
  ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৬:২৪

করোনাসহ নানামুখী সংকটে হুমকির মুখে পড়েছে যুক্তরাজ্যের ফ্যাশন শিল্প। বেক্সিট-পরবর্তী বিধিবিধান ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও করোনার কারণে অস্তিত্ব সংকটে

সে দেশের ফ্যাশন শিল্পকে। এ খাতের চার শতাধিক ব্যবসায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রতি একটি খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করে এমনটাই জানিয়েছেন। জটিলতা এড়াতে এরই মধ্যে কিছু সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) স্থানান্তরিত হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ৩ হাজার ৫০০ কোটি পাউন্ড মূল্যের এ খাতে ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বরিস জনসনের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে তারা বলেছেন, বেক্সিট চুক্তিতে আমাদের অবহেলা করা হয়েছে এবং আমাদের উদ্বেগ উপেক্ষা করা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকালে উপস্থাপিত এ চিঠিতে মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, জরুরি মনোযোগ না দেয়ার বিষয়টি এ খাতের তাত্ক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যেক বিপদে ফেলবে। তারা বলেছে, বেক্সিট কার্যকরের শেষ সময়ে স্বাক্ষরিত এই বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্তভাবে ভবিষ্যৎ বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতি দিতে ব্যর্থ হয়েছিল।

সংগীত থেকে শুরু করে মাছের ব্যবসা পর্যন্ত অন্যান্য খাত থেকেও এমন উদ্বেগ উত্থাপিত হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ভাষ্য, নতুন আমলাতান্ত্রিক জটিলতাগুলো এ শিল্পের ভবিষ্যেক বিপন্ন করছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, মাছ ধরা, সংগীত, চলচ্চিত্র ও মোটর শিল্পের চেয়ে ফ্যাশন শিল্প যুক্তরাজ্যের জিডিপিতে বেশি অবদান রাখে।

মাছ ধরা শিল্পে দেয়া ক্ষতিপূরণ প্যাকেজের বিষয়টি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে মাছ ধরা শিল্পের অবদান পূর্ব লন্ডনের ফ্যাশন ও টেক্সটাইল শিল্পের অবদানের সমপরিমাণ।

ফ্যাশন শিল্পের প্রকৃতির বিষয়টি তুলে ধরে মডেল ইয়াসমিন লে বন বলেন, আমি ৩৭ বছর ধরে এ খাতে কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে এটি ভঙ্গুর অবস্থায় রয়েছে। এমনকি আমারও ইইউতে চাকরির বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে গেছে। আমি ফোন পেতে পারি, সিদ্ধান্ত নিতে পারি এবং ২ ঘণ্টার মধ্যে বিমানবন্দরে যেতে পারি। সুতরাং এ খাতকে বাঁচাতে অন্তত একবার আমাদের কথা শোনা দরকার ছিল। আমি আশা করি, খুব বেশি দেরি হওয়ার আগেই সরকার আমাদের সঙ্গে কাজ করবে।

ডিজাইনার ক্যাথারিন হ্যামনেট বলেন, অনেক সংস্থা যুক্তরাজ্যে বন্ধ হওয়ার কয়েক সপ্তাহ দূরে রয়েছে। ইইউতে পণ্য রফতানিতে ভ্যাটসহ আমাদের শুল্ক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। অন্যথায় ব্রিটিশ ব্র্যান্ডগুলো হারিয়ে যাবে।

স্পেনে স্কটিশ কাশ্মির বিক্রি করা এবং চামড়ার পণ্য তৈরি করা ফ্যাশন ব্র্যান্ড কনোলির প্রধান নির্বাহী ইসাবেল এতেডগুই বলেন, বাণিজ্য বিধিগুলো এ শিল্পকে ব্রেক্সিট দোকানে পরিণত করছে। এ ফলাফল এমনকি ব্রিটিশ রানীর জন্য পণ্য সরবরাহ করা শত বছরের পুরনো সংস্থাকেও বন্ধের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

বিষয়গুলো নিয়ে ব্রিটিশ সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, ফ্যাশন শিল্পের সঙ্গে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। এর মাধ্যমে ইউরোপের সঙ্গে কার্যকরভাবে বাণিজ্য নিশ্চিত করতে তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবে। আমরা অবগত যে কিছু ব্যবসা ইইউর সঙ্গে বাণিজ্য করতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। বিষয়টি সহজ করতে আমরা রফতানি হেল্পলাইন পরিচালনা করছি, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ওয়েবিনার করছি এবং ৩০০টি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উপদেষ্টা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যবসাগুলোয় সহায়তা দিচ্ছি। মধ্যস্থতাকারী খাত সম্প্রসারণে আমরা যে বিনিয়োগ করছি, সেই তালিকায় এ খাত উপরের দিকেই রয়েছে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে