শায়েস্তাগঞ্জে ভ্যাপসা গরমে আনারস বিক্রির ধুম সৈয়দ হাবিবুর রহমান ডিউক,

প্রকাশ | ১৫ এপ্রিল ২০২১, ১৮:১২

শায়েস্তাগঞ্জ( হবিগঞ্জ)

গলায় ঝুলানো গামছা, হাতে বটি আর মুখে মাস্ক নিয়ে দিব্যি একের পর এক আনারস বানিয়ে বিক্রি করছেন গৌরমনি। গৌরমনি বয়স ৪৫,  উনার দুই ছেলে, বাড়ি মৌলভীবাজার। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুরে হাসান মিয়ার বাসাতে ভাতিজা নিয়ে ভাড়া থাকেন। ঢাকা সিলেট মহাসড়কের অলিপুরের ফুটপাতে নিয়মিত আনারস বিক্রি করে আসছেন। গৌরমনিকে সরকারী জায়গায় দোকানদারি করে ও মাসে ১৫০০ টাকা জায়গার ভাড়া দিতে হয়।   তবুও ভ্যাপসা গরমে আনারস বিক্রি করে মোটামুটি ভালই আছেন।  তিনি সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন শ্রীমঙ্গল থেকে পাইকারিভাবে আনারস কিনে আনেন। তিনি আনারস কিনে আনেন প্রতি একশ পিস আনারসের আকার ভিত্তিক ২০০০- থেকে ৬০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।  একশ আনারস তিনি একদিনেই বিক্রি করে থাকেন, একশ আনারস বিক্রি করতে পারলে ৫০০-৭০০ টাকা তার লাভ হয়। বেচাকেনা ভাল হলে কোন কোনদিন ৫০০০-৭০০০ টাকা পর্যন্ত আনারস বিক্রি করতে পারেন গৌরমনি।

 

তার দোকানের পাশেই আনারস বিক্রি করে আসছেন গৌরমনির ভাতিজা লিপন মিয়া। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে তার দোকানে ও ভরদুপুরে ক্রেতাদের ভিড়। এই বৈশাখের গরমে আর রমজানের ইফতারে আনারসের রয়েছে বেশ কদর।

 

মো. সোহাগ মিয়া বয়স সবে মাত্র ১৬ বছর, বাড়ি হবিগঞ্জের  সুলতানশি গ্রামে। তিনি ও মহাসড়কের পাশে আনারস বিক্রি করে নিজের সংসারের দ্বায়িত্ব পালন কওে আসছেন। তিনি জানান,  রমজান আসাতে বেচাকেনা অনেক ভাল, তবে চলমান লকডাউনে মালের দাম বেশি ও গাড়ি ভাড়া ও দিতে হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি, তাই একটু অস্বস্তিতে আছেন। তিনি ও সকাল ৬ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত বেচাকেনা করেন। এই লকডাউনে পুলিশ এসে মাঝে মাঝে তাদেরকে উঠিয়ে দেয়, কিন্তু পেটের দায়ে তারা আবারও এসে নিজেদের কর্মস্থলে ঝুকি নিয়েই এসে বেচাকেনা করে থাকেন।

 

আনারস কিনতে আসা দুলাল মিয়া জানান, তিনি ইফতার করার জন্য দুই পিস বড় সাইজের আনারস কিনছেন ১০০ টাকা দিয়ে, ইফতারে খালি পেটে আনারসের উপকারিতা অনেক বেশি, তাই তিনি প্রতিদিনই কিনে থাকেন।

 

আনারস কিনতে আসা হবিগঞ্জ ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পার্কে কর্মরত মো. নাজমুল মিয়া জানান,  আমরা কোয়ার্টারে থাকি, ২ হালি ছোট সাইজের আনারস বানিয়ে নিয়ে যাচ্ছি, সবাই মিলে ইফতার করব।তিনি ২ হালি আনারস কিনছেন ২৮০ টাকা দিয়ে।

 

একদিকে শায়েস্তাগঞ্জে ভ্যাপসা গরম অন্যদিকে চলছে রমজান মাস। সারাদিনের ক্লান্তি ভুলে মানুষ আনারসের রসে তৃপ্তি মিটিয়ে ইফতার করে থাকেন। এই আনারসের আবার রয়েছে অনেক গুণ। দেশে করোনা ভাইরাস মহামারী আকারে ধারণ করায়, এই মৌসুমে অনেকেই জ্বরে ভুগছেন। জ্বরের জন্য এই আনারসের বিকল্প নেই, ছোট বড় সকলেরই আনারস জ্বর সাড়তে টনিক হিসেবে কাজ করে।

যাযাদি/এস