শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে যশোরের মণিরামপুর ঈদ বাজার। গার্মেন্টস, জুতা, শাড়ি, ছিটকাপড় এবং কসমেটিকসের দোকানে তিলধারণের ঠাঁই মিলছে না। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব মার্কেটে বেচাকেনা করতে ভিড়ে জমজমাট অবস্থা। তবে সবখানে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধির নিয়মাবলি। অধিকাংশ ক্রেতার মুখেতো মাস্ক নেই, এ অবস্থায় চলছে মণিরামপুরের ঈদ বাজার। উপজেলা প্রশাসন বলছে, নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।
কাশিপুর গ্রামের গৃহবধূ আকলিমা বেগম ছোট দুটি বাচ্চা নিয়ে শনিবার মণিরামপুর গার্মেন্টস মার্কেটে আসেন পরিবারের জামাকাপড় কিনতে। কিন্তু রোদের খরতাপ আর ভিড়ের চাপে দু’বাচ্চা নিয়ে বসে বিশ্রাম নেওয়ার ফাঁকে কথা হয় তার সঙ্গে।
আকলিমা বেগম বলেন, কষ্টে আর পারছি না, তাই বসে বসে বিশ্রাম নিচ্ছি। শ্যামলি গার্মেন্টসের মালিক পলাশ কুমরা দে বলেন, হঠাৎ করে বাজার জমে যাওয়ায় বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। একই মার্কেটের সম্রাট সু’র দোকান মালিক সাধনা বিশ্বাস বেচাবিক্রির বিষয়ে একই কথা জানালেন।
তবে, বেশি ভিড় চোখে পড়ছে গার্মেন্টসের দোকানগুলোতে। থ্রিপিস, মেয়েদের গাউন, ফ্রগ, ছোট বাচ্চাদের নানা ধরনের পোশাক কিনছেন অভিভাবকরা। এছাড়াও জুতার দোকানগুলোতেও ভিড়ের কমতি নেই। জারা সু’র দোকান মালিক কিবরিয়া মিল্টন বলেন, ঈদের আগমুহূর্তে বেচাকেনা যথেষ্ট হচ্ছে।
গার্মেন্টস দোকান মালিক সমিতির সভাপতি নির্মল ঘোষ বলেন, শেষ মুহূর্তে বেচাবিক্রি যথেষ্ট ভালো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ক্রেতারা কে-কার কথা শোনে। তবুও বারবার বলা হচ্ছে মাস্ক ব্যবহার করতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য।
গার্মেন্টস দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খান গার্মেন্টসের মালিক মহি উদ্দিন খান জানালেন, সপ্তাহখানেক আগেও তারা ব্যবসা নিয়ে হতাশায় ছিলেন। কিন্তু না, হঠাৎ করেই শেষ মুহূর্তে বাজার জমে ওঠায় বেচাবিক্রি আশানুরূপ হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এবার বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে পুরুষের তুলনায় নারী ক্রেতার সংখ্যা দ্বিগুণ।
কাপুড়িয়া পট্টির দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, এবার কৃষকের ঘরে ফসল ভালো, তাই ঈদে বেচাকেনাও ভালো হচ্ছে। সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, এবার বাজার নিয়ে যা আশা করেছিলাম, কিন্তু শেষ বেলায় দেখছি তার চেয়েও বেচাকেনা অনেক ভালো।
ছিটকাপড় ব্যবসায়ী এম আর ক্লথ স্টোরের মালিক রবিউল ইসলাম বলেন, শেষ মুহূর্তে বেচাকেনার চাপ খুব। কিন্তু কারিগরের (দর্জির) অভাবে গত তিন দিন আগে থেকে পোশাক তৈরির অর্ডার নেওয়া স্থগিত করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আগে বুঝে উঠতে পারিনি করোনার এ পরিস্থিতির মাঝেও ঈদের বাজার শেষ বেলায় এমনটা জমে উঠবে।
তবে, বাজারের সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান বলেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের কাজ অব্যাহত রয়েছে।
যাযাদি/ এস