সম্প্রসারিত হচ্ছে বৈশ্বিক স্বর্ণ উত্তোলন খাত

প্রকাশ | ১৫ জুলাই ২০২১, ১১:২২

যাযাদি ডেস্ক

 

 

করোনা মহামারীর ধাক্কায় গত বছর বৈশ্বিক স্বর্ণ উত্তোলন বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। লকডাউন ও বিধিনিষেধের কারণে ১৮ মাস ধরে বিশ্বের খনিগুলোতে মূল্যবান ধাতুটির উত্তোলন ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়। তবে ধীরে ধীরে খাতটি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। ২০১৯ ও ২০২০ সালের তুলনায় চলতি বছর উত্তোলনে বড় প্রবৃদ্ধি আসবে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফিচ সলিউশনের কান্ট্রি রিস্ক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি রিসার্চ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

 

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, মহামারীর প্রভাব কমতে শুরু করায় চলতি বছর বিশ্বজুড়ে স্বর্ণ উত্তোলন ৫ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

 

ফিচ সলিউশন জানায়, ২০২৫ সাল পর্যন্ত স্বর্ণের বৈশ্বিক উত্তোলনে প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত মূল্যবান ধাতুটির উত্তোলন বাড়বে ৩ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২৩ সালে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ, ২০২৪ সালে ২ দশমিক ৪ ও ২০২৫ সালে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আসবে খাতটিতে।

 

 

গবেষকরা জানান, চলতি বছর স্বর্ণের বৈশ্বিক উত্তোলন ১০ কোটি ৯৪ লাখ থেকে বেড়ে ১৪ কোটি ১৭ লাখ আউন্সে পৌঁছবে। ২০৩০ সাল নাগাদ গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ২ শতাংশ হারে বাড়বে। ২০১৬-২০ সাল পর্যন্ত গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল মাত্র দশমিক ৮ শতাংশ।

 

বিশ্বের স্বর্ণ উত্তোলনকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানীয় চীন। তবে চলতি বছর দেশটির স্বর্ণ উত্তোলন স্থিতিশীল থাকবে। এ সুযোগে কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববাজারে নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে সক্ষম হবে বলে ফিচ সলিউশনের গবেষণায় উঠে এসেছে।

 

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ১০ বছর ধরে স্বর্ণ উত্তোলন ক্রমে বাড়িয়েছে চীন। তবে সম্প্রতি জলবায়ু দূষণ রোধে উদ্যোগী হওয়ায় স্বর্ণসহ সব ধরনের ধাতু উত্তোলন সীমিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। ফলে চলতি দশকে উত্তোলনে পিছিয়ে পড়বে চীন। যদিও চলতি বছর চীনের স্বর্ণ উত্তোলন দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস মিলেছে।

 

জলবায়ু দূষণ ইস্যুতে বছরজুড়ে নতুন নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত রয়েছে চীনের। এর ফলে স্যানডং, ঝিংজিয়াং, হুনানসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রদেশগুলোর বেশির ভাগ স্বর্ণ খনিতে উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। তবে উত্তোলন কম বা স্থিতিশীল থাকলেও দেশটিতে স্বর্ণের চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী। অন্যদিকে স্বর্ণসমৃদ্ধ আকরিক উত্তোলন সক্ষমতাও কমছে। এসব কারণে দেশটি বিদেশে স্বর্ণ উত্তোলনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। ফিচ সলিউশন জানায়, এরই মধ্যে চীনের স্যানডং গোল্ড আর্জেন্টিনার ভ্যালাডেরো স্বর্ণ উত্তোলন খনির ৫০ শতাংশ অংশীদারিত্ব কিনে নিয়েছে।

 

এদিকে আগামী বছরগুলোতে অন্যান্য দেশের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার স্বর্ণ উত্তোলন লক্ষ্যণীয় মাত্রায় বাড়বে। স্বর্ণ খাতকে শক্তিশালী করতে বড় ধরনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে দেশটি। নয় বছরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার স্বর্ণ উত্তোলন ১ কোটি ৮ লাখ থেকে বেড়ে ১ কোটি ৩১ লাখ আউন্সে উন্নীত হবে।

 

বৈশ্বিক স্বর্ণ উত্তোলনে বড় হিস্যা রয়েছে রাশিয়ারও। ২০৩০ সাল নাগাদ স্বর্ণ উত্তোলনে দেশটি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি দেখবে। এক দশকের মধ্যে দেশটির উত্তোলন ৯৯ লাখ থেকে বেড়ে ১ কোটি ৪০ লাখ আউন্সে উন্নীত হবে।

 

এদিকে উত্তোলন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পরিকল্পনা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রেরও। দেশটি এ খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে শুরু করেছে। ২০৩০ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্র স্বর্ণ উত্তোলন সর্বকালের শীর্ষে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে ফিচ সলিউশন।

 

যাযাদি/ এমডি