বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মধুপুরের জলডুগী যাচ্ছে ইউরোপে : বিষাক্ত আনারসে আগ্রহ কমছে

জোবায়েদ মল্লিক বুলবুল, টাঙ্গাইল
  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৮:০০

টাঙ্গাইলের মধুপুরের ঐতিহ্যবাহী আনারস বিশ্বখ্যাত। মধুপুর গড়াঞ্চলে উৎপাদিত জলডুগী ও কলম্বিয়া জাতের আনারসের চাহিদা সর্বত্র। মধুপুরে মূলত: জলডুগী বা জায়ন্টকিউ জাতের আনারসই ঐতিহ্যগত। এ জাতের আনারস এখন দেশের সীমানা পেরিয়ে ইউরোপে রপ্তানী হচ্ছে। এতদাঞ্চলের চাষীরা বেশি লাভের আশায় আনারসে বিষাক্ত কেমিকেল ব্যবহার করায় ক্রেতারা আনারস থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে বিষযুক্ত আনারসের চাহিদা দিন দিন কমছে। সে জায়গা পুনরায় দখল করে নিচ্ছে বিষমুক্ত আনারস।

আনারসের রাজধানী খ্যাত মধুপুরের পঁচিশমাইল- জলছত্র হাট বিষাক্ত আনারস দখল করে নিয়েছে। এতে দিন দিন এই হাটের আনারসের প্রতি ব্যবসায়ীরা আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তাদের অভিযোগ বর্তমানে সাধারণ মানুষ বিষমুক্ত ফল খেতে চায়। তারপরও আনারস চাষীরা অধিক লাভের আশায় তাদের চাষ করা ফলে বিষাক্ত কেমিকেল ব্যবহার করছে। ফলে কাঁচা আনারস অন্তত ৩-৪ দিনেই পেকে যাচ্ছে। স্বাভাবিকভাবে চারা রোপণের পর থেকে ১৮ মাসে আনারস পরিপক্ক হয়। সেখানে কেমিকেল ব্যবহার করায় ৭-৮ মাসেই আনারস বাজারে উঠানো যায়, দেখতেও লোভনীয় হয়। কম সময়ে অধিক লাভের আশায় অনেক চাষী আনারসে কেমিকেল ব্যবহার করে থাকে। একারণে বিষযুক্ত ফল চাষ করে বাজারে বিক্রি করতে অনেকটাই হিমসিম খেতে হয়। অনেক সময় দেখা যায়, বিষমুক্ত আনারস শতকরা ১০-২০টি পঁচে যায়। এতে বিষমুক্ত আনারস ব্যবসায় লাভের চেয়ে লোকসানের হিসেবটাই বেশি দেখা যায়। তাছাড়া বিষযুক্ত আনারস দেখতে অত্যন্ত লোভনীয়। এজন্য বিষমুক্ত আনারস চাষে আগ্রহ হারায় কৃষক, ব্যবসায়ীরাও লাভ না পেয়ে কিনতে চায়না। তারপরও দেশের সীমানা পেরিয়ে ইউরোপের বাজারে যাচ্ছে মধুপুরের জলডুগী আনারস।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, রসালো আনারস ফলটি উত্তরের মেঘালয় থেকে মধুপুর গড়াঞ্চলের আদিবাসীদের মাধ্যমে প্রথম চাষাবাদ শুরু হয়। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ফল এটি। ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে এর আদিনিবাস। বৈজ্ঞানিক নাম অ্যানান্যাস সেটাইভ্যাস। পর্তুগীজ অ্যানান্যাস থেকে আনারস শব্দের উৎপত্তি। অর্থ চমৎকার ফল। রাসায়নিক বিচারে ব্রোমাইল অ্যালকোহলের জন্য আনারস স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয়। রসালো আনারস রেড ইন্ডিয়ানদের ধর্মীয় উৎসবের অন্যতম উপকরণ। তৈরি হয় উন্নত মানের মদ। খ্রিস্টোফার কলম্বাস ১৪৯৩ সালের নভেম্বরে আমেরিকা আবিস্কার করেন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে যেসব অ™ু¢ত জিনিষের সাথে তিনি পরিচিত হন তার অন্যতম আনারস। তিনি আমেরিকা থেকে আনারস চারা ইউরোপে নিয়ে আসেন। ব্রিটেনে আনারস রাজকীয় খাবারের মর্যাদা পায়। আবহাওয়া জনিত কারণে ইউরোপে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষাবাদ সম্প্রসারণ করা যায়নি। পর্তুগীজ নাবিকরা ১৫৪৮ সালে প্রথম ভারতের কেরালা রাজ্যে আনারস নিয়ে আসে।

ভারতের আবহাওয়া আনারসকে চমৎকারভাবে মানিয়ে নেয়। খ্রিস্টান মিশনারীরা সপ্তদশ শতাব্দীতে কেরালা থেকে মেঘালয়ে আনারস নিয়ে যান। গারোপাহাড়ের ভাজে ভাজে শুরু হয় সফল আবাদ। গারোরা জুম চাষে আনারসকে সম্পৃক্ত করে। ১৯৪২ সালে মধুপুর গড়াঞ্চলের মধুপুর উপজেলার ইদিলপুরের আদিবাসী গারো সনাতন মৃ মেঘালয়ের গাছোয়া থেকে প্রথম আনারস চারা নিয়ে আসেন। এভাবে ইদিলপুরের পাহাড়ি লাল মাটিতে আনারস আবাদ শুরু হয়। ১৯৫০ সালের দিকে আনারসের বাণিজ্যিক চাষাবাদ শুরু হয়। সে সময় চমৎকার রসালো ও সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয়দের মুখে মুখে ছড়া আকারে ছড়িয়ে পড়ে- ‘উত্তর থিকা আইল ফল, রসে টস্ টস/ আনা আনা বিকোয়, নাম আনারস’। বর্তমানে মধুপুর ছাড়াও গড় এলাকার মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, ঘাটাইল ও সখীপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় আনারস আবাদ হয়। দেশে ‘জায়ান্ট কিউ’ ও ‘হানি কুইন’ জাতের আনারসের চাষ হয়। এরমধ্যে ‘জায়ান্ট কিউ’ জাতটি শুধুমাত্র টাঙ্গাইলেই উৎপাদন হয়। এই জাতটি ‘জলডুগী’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের অন্য কোন জেলায় এই জাতটির ফলন হয় না। আর ‘হানি কুইন’ জাতটি সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চলে উৎপাদিত হয়ে থাকে।

সরেজমিনে আনারসের রাজধানী মধপুর বনাঞ্চলের আলোকদিয়া, আউসনারা, দিগলবাইদ, অরণখোলা, জলছত্র, মোটের বাজার, গারোবাজার, রসুলপুর, পঁচিশমাইল, ইদিলপুর সহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে আনারসের জমিতে কৃষকদের কর্ম ব্যস্ততা। তারা এখন ফল কাঁটতে ব্যস্ত। সূর্য্য উঠার আগেই কৃষকরা ভ্যান, রিকশা সহ বিভিন্ন যানবাহনে জুঙ্গা(খাঁচি) ভর্তি করে আনারস বাজারে নিয়ে এসে বেঁচাকেনায় ব্যস্ত সময় পাড় করছে। মধুপুরের আনারস স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় হওয়ায় ঢাকা, কুমিল্লা, পাবনা, রাজশাহী, সহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আনারস কেনার জন্য ব্যাপারিরা ভির জামাচ্ছে মধুপুরের পঁচিশমাইল জলছত্র আনারসের বাজারে। এদিকে চাষীরা আনারস বিক্রি করে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে সামান্য পরিমাণ লাভবান হচ্ছে। চাষীদের কাছ থেকে পাইকাররা আনারস কিনে নিয়ে কেমিকেল মিশিয়ে লোভনীয় করে তা পরবর্তীতে চড়া দামে বিক্রি করছে। কোন কোন ক্ষেত্রে চাষীদের কেমিকেল মেশানো আনারস কিনে পাইকাররা মূলধন ঘাটতির আশঙ্কায় পড়ছেন।

যতই দিন যাচ্ছে ততই মধুপুরের আনারসের চাহিদা দিন দিন কমে যাচ্ছে। আগের তুলনায় উৎপাদন বৃদ্ধি পেলেও নেই সেই স্বাদ আর গন্ধ। আনারস চাষে কৃষকদের ওষুধ প্রয়োগে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের অভাব এবং ওষুধ বিক্রেতাদের কু-পরামর্শে ঐতিহ্যবাহী আনারসের কদর কমতে শুরু করেছে। নানা প্রকারের ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে দ্রুত সময়ে অতি লাভের আশায় কৃষক ৩-৪ মাসেই আনারস বড় করে আবারও ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে পাকিয়ে ফেলছে। ফলে আনারস দেখতে সুন্দর হলেও এর স্বাদ- গন্ধ কোনটাই পাওয়া যাচ্ছেনা। যে কারণে মানুষ আনারস কিনতে গিয়ে ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগের কথা চিন্তা করে এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। আনারসের বাম্পার ফলনে চাষীদের আনন্দিত হওয়ার কথা থাকলেও দেখা যায় হতাশার ছাপ। যে আনাসের প্রতিটির মূল্য থাকার কথা ছিল ৫০-৬০ টাকা, সেই আনারস চাহিদা না থাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে ১০-১৫ টাকায়।

গারোবাজারের কৃষক আনছের আলী মিয়া জানান, ৭০ বিঘা জমিতে এবার তিনি আনারসের চাষ করেছেন। প্রতিদিন গড়ে চার থেকে পাঁচশ আনারস বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। তবে তিনি সঙ্কোচবোধ করে বলেন আনারসে কেমিকেল না দিলে প্রতিদিন হয়তো এক থেকে দুইশ’ আনারস বাজারে বিক্রি করতে হত। তাই তিনি অধিক লাভের আসায় আনারসে কেমিকেল দেন।

মহিষমাড়া গ্রামের খন্দকার মোতালেব হোসেন জানান, বিষমুক্ত আনারস আকারে অনেক ছোট হয়, রঙও আকর্ষনীয় হয়না। এর রঙ দেখে ক্রেতারা কিনতে চায় না। এই আনারস বাগান থেকে কেটে দুই-তিনদিনের বেশি রাখা যায় না। কিন্তু ফরমালিনযুক্ত আনারস ৭-৮দিন অনায়াসে রাখা যায়। এতে ক্রেতা বা বিক্রেতাদের কোন অসুবিধা হয় না। এর আকারও অনেক বড় এবং রঙ গারো হলুদ হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা আকৃষ্ট হয়। লাভও হয় অনেক বেশি। তাই বাধ্য হয়েই তার মত প্রায় চাষীই আনারসে ফরমালিন দেন।

নাটোর থেকে আসা বেপারি আহসান হাবিব জানান, তিনি প্রতিবছর মধুপুর আসেন আনারস কিনতে। কিন্তু এবার আগের তুলনায় বাজারে আনারসের চাহিদা অনেক কম। এর কারণ ব্যখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ এখন অনেক সচেতন। তারা এখন আর বিষযুক্ত কোন ফলই খেতে চান না। তবুও কৃষকরা বেশি লাভের আশায় ফলে ফরমালিন দিয়ে অল্পদিনে বিক্রি করার জন্য আনারস বড় করে ফেলছে। এখন কৃষকরা একটি বড় আনারস ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি করতে পারছেন। অথচ বিষমুক্ত আনারস আকারে অনেক ছোট, রঙও তেমন ভাল নয়। কিন্তু খেতে খুব সুস্বাদু, দামও খুব কম। প্রতিটি বিষমুক্ত আনারস ১০-২০টাকায় বিক্রি করে কৃষক। তারপরও সাধরণ মানুষ আকারে ছোট ও দেখতে ভালো না দেখার কারণে এগুলো কিনতে চায় না। এই বিষমুক্ত আনারস বেশিদিন রাখাও যায় না। তাই বাধ্য হয়ে সবাই বিষযুক্ত আনারসই বিক্রি বা চাষ করছেন।

তবে আশার কথা, ২০১৪ সাল থেকে মধুপুরের কয়েকজন চাষী রাসায়নিকমুক্ত আনারস চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এটি করতে গিয়ে শুরুতেই মোটা অঙ্কের ক্ষতির মুখে পড়েন তারা। ফলে হতাশ হলেও তারা দমে যাননি। রাসায়নিকমুক্ত আনারস চাষের প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন। বিষমুক্ত আনারসের চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়ছে। প্রয়োজনীয় সহযোগিতা পেলে আনারসের অতীত ঐতিহ্য আবার ফিরে আসবে বলে আশা করছেন মধুপুরের এ চাষীরা। মধুপুরের কৃষকরা প্রায় সবাই রাসায়নিকমুক্ত আনারস আবাদ করতে চান। কিন্তু ক্ষতির আশঙ্কায় তারা সেটা পারছেন না। ভোক্তাদের রাসায়নিকমুক্ত আনারস কিনতে উদ্বুদ্ধ করতে পারলে তাদের ভালো-মন্দ আনারস চেনানোর ব্যবস্থা করা হলে রাসায়নিকমুক্ত আনারস আবাদ বাড়বে বলে চাষীরা জানান।

মধুপুরের মহিষমারা গ্রামের চাষী ছানোয়ার হোসেন বিষমুক্ত আনারস চাষীদের একজন। ২০১৪ সালে তিনি প্রায় ২০০ শতাংশ জমিতে রাসায়নিকমুক্ত আনারস আবাদ করেন। কিন্তু আনারস আকারে বড় এবং পেকে হলুদ রং না হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা কম হয়। একই গ্রামের হাফিজ উদ্দিন জানান, তারা চেষ্টা করছেন বিষমুক্ত আনারস আবাদের। প্রথম দিকে লোকসান হলেও দমে যাননি। তাই এখন অনেকটা লাভের মুখ দেখছেন। মধুপুর চালা এলাকার দেলোয়ার হোসেন জানান, বিষমুক্ত আনারস আকারে ছোট এবং রঙও ভালো না। এছাড়া নরম থাকায় বহন করতেও সমস্যা। ফলে সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। ভোক্তাদের রাসায়নিকমুক্ত আনারস কিনতে সচেতন হতে হবে। তারা চাকচিক্য দেখে আনারস কেনেন। আকারে বড়, আকর্ষণীয় রঙ হলেই আনারস ভালো হয় না। একসঙ্গে রাসায়নিকমুক্ত ও রাসায়নিকযুক্ত আনারস রাখা হলে রাসায়নিকযুক্তটাই ক্রেতারা পছন্দ করে কিনে নেন। যদি তা না হয় তাহলে কৃষক রাসায়নিকমুক্ত আনারস চাষে উৎসাহিত হবে এবং একসময় দেখা যাবে বাজারে কোনো বিষাক্ত আনারস নেই।

জলছত্র বাজারে বাইসাইকেলে করে আনারস নিয়ে বিক্রির অপেক্ষায় থাকা কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যারা সাইকেলে বা ভ্যানে করে আনারস বিক্রি করেন তাদের সবাই চাষী বা বাগানী নন। মূলত তারা চাষীর বাগান থেকে আনারস কেটে তা হাটে এনে বিক্রি করেন। এজন্য প্রতি ১০০ আনারস বিক্রির জন্য ভ্যান বা সাইকেলওয়ালা পান ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। অনেক চাষী বা বাগানী নিজেরাই সাইকেল বা ভ্যানে করে এনে বিক্রি করেন।

সাইকেল করে আনা আনারস বিক্রেতা আনোয়ার, সাইদুল, জসিম উদ্দিন বলেন, প্রতি ভ্যানে ১০৩টি আনারস থাকে। কিন্তু বিক্রি হয় ১০০টি হিসেবে। আনারাস বিক্রি হয় আকার ও জাত ভেদে। সাধারণত জলচ্ছত্র হাটে বড় আকারের আনারস প্রতিটি পাইকারি বিক্রি হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, মাঝারিগুলো ২০ থকে ৩০ টাকায়। আবার একটু ছোট আকারের প্রতিটি বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকায়।

কৃষকরা জানান, সাধারণত ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আনারসের চারা রোপণ করা হয়। পার্শ্ব চারা, বোঁটার চারা, মুকুট চারা ও গুঁড়ি চারা দিয়ে আনারসের বংশ বিস্তার করা হয়। পার্শ্ব চারা বাণিজ্যিকভাবে চাষের জন্য বেশি উপযোগী। চাষীরা সাধারণত দুই রকমের চারা রোপণ করে থাকেন। একটি ছোট আকারের, আরেকটি বড় আকারের। বড় আকারের চারা থেকে ফল আসতে ১৮ মাস সময় লাগে। আর ছোট আকারের চারা থেকে ফল আসতে সময় লাগে ৩৬ মাস। আষাঢ় থেকে শ্রাবণ মাসে ফল সংগ্রহের পূর্ণ মৌসুম হলেও বছরের বাকি সময় চাষীরা বাগানে সাথী ফসল হিসেবে আনারসের পাশাপাশি আদা, হলুদ, কচু ও কলা চাষ করে থাকেন।

মধুপুর জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে অতিথি আসেন। হাঙ্গেরি, ডেনমার্ক, ইউরোপ বা আমেরিকা থেকেও আসেন। তাদেরকে আনারস খেতে দেওয়া হয়। বেশ কয়েক বছর আগে ইউরোপের একটি দল এসে আনারস খেয়ে খুব প্রশংসা করেন এবং সাথে করে আনারস নিয়ে যান। তারপর থেকে প্রতি মৌসুমেই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ইউরোপে আনারস যায়।

জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ইউজিন নকরেক জানান, মধুপুরে আদিবাসীদের মধ্যেও বিষমুক্ত আনারস চাষীর সংখ্যা বাড়ছে। তারা নিজেদের খাবারের পাশাপাশি বিক্রির জন্য বিষমুক্ত আনারস চাষ করছে। বিষমুক্ত আনারস বেচাকেনায় ব্যাপক প্রচারণা দরকার। এতে কৃষকরা রাসায়নিকমুক্ত আনারস চাষে উৎসাহিত হবে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে