সরাসরি কক্সবাজার সেন্টমাটিন রুটে নিরাপদেই চলছে এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস

অপ প্রচারে কান না দেয়ার অনুরোধ

প্রকাশ | ০৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৭:৫৫

যাযাদি ডেস্ক

 

 

কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন সমুদ্রভ্রমণে বিলাসবহুল জাহাজের যাত্রার মাধ্যমে পর্যটন শিল্পে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স (লিঃ)। এমন যুগান্তকারী উদ্যোগে দেশের সকল পর্যটক এবং পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীগণ অত্যন্ত আনন্দিত ও বিমোহীত যে, পর্যটন শিল্প এভাবেই ক্রমশং ঘুরে দাঁড়াবে। জাহাজটি বিগত বছরের ন্যায় এবারও অত্যন্ত সুন্দর তথা নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে আসছে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ শত পর্যটক নিয়ে এই জাহাজ চলাচল করছে।

 

উল্লেখ্য গত ২৯ ডিসেম্বর, বুধবার বিকেল ৩.৩০ টায় জাহাজটি সেন্টমার্টিন থেকে ছেড়ে গভীর সমুদ্র অতিক্রম করে কক্সবাজার সমুদ্র উপক‚লের নাজিরারটেক চ্যানেলে পৌঁছলে ভাটা থাকার কারণে হঠাৎ করেই ডুবোচড়ে আটকে যায়। ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছুক্ষণ যাত্রা বিরতি দিয়ে অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেয় জাহাজের বিজ্ঞ ক্যাপ্টেন। কিন্তু সহসা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর জোয়ার এলে পূনরায় জাহাজটি কক্স্রবাজারের বিআইডবিøউটিএ ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। পরে জাহাজ ঘাটে পৌঁছতে গভীর রাত এবং সম্পূর্ন যাত্রী নামাতে ভোর হয়ে যায়। এই অনাকাংখিত বিলম্বের কারনে কর্তৃপক্ষ  যাত্রীদের কাছে দুংখ প্রকাশসহ নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে তাদেরকে আশ^স্ত করে এবং বিনামূল্যে প্রয়োজনীয় খাবার ও পানিয় বিতরণ করে। সর্বশেষ নিরাপদ অবতরণের পর যাত্রীদের বাসযোগে গন্তব্যে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করে জাহাজ কর্তৃপক্ষ।

 

কিন্তু অত্যন্ত দুঃংখজনকভাবে কতিপয় পরশ্রিকাতর নিন্দুক, সম্পূর্ন উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিষয়টিকে তিলকে তাল করার মতই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যাচার তথা অপবেক্ষা করছে। ইঞ্জিনের ত্রæটির কারণে জাহাজ আটকা পড়েছিল মর্মে অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা। যা সম্পূর্ন মিথ্যা ও বানোয়াট। ধারণা করা হচ্ছে এটা দুস্কৃতিকারিদের হীন চক্রান্ত। তারা সরাসরি কক্সবাজার টু সেন্টমার্টিনগামী দেশের এই প্রথম নৌরুট সচল থাকুক তা চায়না। এই রুট বন্ধের জন্য তারা এসব অপপ্রয়াস চালাচ্ছে।

 

জাহাজের ইঞ্জিন নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এর অবস্থা ব্যাখ্যা করে  কর্ণফুলী শিপ বিল্ডার্স (লিঃ) কর্তৃপক্ষ বলেন, এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেসকে নিজস্ব ডকইয়ার্ডে একটি অত্যাধুনিক বিলাসবহুল জাহাজ হিসেবে প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রায় ৫৫ মিটার দৈর্ঘ্যরে ও ১৫ মিটার প্রশস্ত এই নৌযানে মেইন প্রপালেশন ইঞ্জিন- ২টি। আমেরিকার বিখ্যাত কাটার সেকশন ইঞ্জিনের একেকটির ক্ষমতা প্রায় ১৫৫০ বিএইচপি করে। জাহাজটি ঘণ্টায় প্রায় ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে ছুটতে পারে। নৌযানটি সার্ভিসে যাওয়ার আগে সি ট্রায়ালের অংশ হিসেবে কর্ণফুলী নদী থেকে পতেঙ্গার সমুদ্র মোহনায়  ট্রায়াল সম্পন্ন করে জাহাজ পরিচালনা করা হয়। ১৭টি ভিআইপি কেবিনসহ ০৩ ক্যাটাগরির প্রায় ৭৫০ আসনের এই নৌযানটিতে রয়েছে কনফারেন্স রুম, ডাইনিং স্পেস, সি ভিউ ব্যালকনিসহ আধুনিক বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা। 

 

উল্লেখ্য, পর্যটকরা গত ৩০ জানুয়ারী-২০২০ থেকে এম ভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস নামের বিলাসবহুল জাহাজে কক্সবাজার শহর থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন ভ্রমণ করছে। কক্সবাজার শহরের বিমানবন্দর সড়কের বিআইডবিøউটিএ ঘাট থেকে এক জমকালো আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে দিয়ে এই জাহাজ চলাচলের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন করেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ। এসময় কক্সবাজার, সেনটমার্টিন ও ঢাকা’র বিপুল পরিমান গণমাধ্যম কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন। সমুদ্রপথে কক্সবাজার থেকে সরাসরি সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের দাবি দীর্ঘদিনের। অবশেষে এই দাবি পূরণে এগিয়ে এসেছেন কর্ণফুলী শিপবিল্ডার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এম এ রশিদ। জাহাজটি কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন সকালে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে রওনা দিয়ে একই দিন সন্ধ্যায় ফিরে আসে।

 

যাযাদি/ এস