যুক্তরাষ্ট্র থেকে এলো রেকর্ড রেমিট্যান্স

প্রকাশ | ১০ এপ্রিল ২০২২, ১৭:৩০

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

 

 

করোনা মহামরির মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র রেমিট্যান্স প্রবাহ সবচেয়ে বেশি বেড়েছে ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ডিঙিয়ে প্রবাসী আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে দেশটি এর ধারাবাকিহতায় গত মার্চেও রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন দেশটির প্রবাসীরা

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের তুলনায় এখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে টাকা পাঠানো সহজ হয়েছে এছাড়া বৈধ পথে প্রণোদনা পাওয়া যাচ্ছে পাশাপাশি মহামারিতে দেশে স্বজনদের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রবাসীরা আগের তুলনায় বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন

বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের প্রবাসীরা ৩০ কোটি ৮৮ লাখ (৩০৮.৮২ মিলিয়ন) ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন অতীতে একক মাসে এতো পরিমাণ রেমিট্যান্স আসেনি দেশটি থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা দেশটির রেমিট্যান্স প্রবাহ শীর্ষে থাকা সৌদির কাছাকাছি চলে এসেছে

প্রবাসী কল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এক কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশে রেমিট্যান্স আহরণে বেশি ভূমিকা পালন করছেন মধ্যপ্রাচ্য আমেরিকা ইউরোপের দেশে থাকা প্রবাসীরা

স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে বরাবরই সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স আসছে এরপরই ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থান তা ডিঙিয়ে দ্বিতীয়তে এখন যুক্তরাষ্ট্র আর তৃতীয়তে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্য এক সময় দ্বিতীয় থাকা আরব আমিরাতের অবস্থায় এখন চতুর্থ অবস্থানে

বাংলাদেশের প্রবাসীদের বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ লাখের মতো বাংলাদেশি অভিবাসী সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মার্চ মাসে রেমিট্যান্স আহরণে শীর্ষে থাকা সৌদি আরর থেকে এসেছে ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার দ্বিতীয়তে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার যুক্তরাজ্যের থেকে এসেছে ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার আরব আমিরাত থেকে পাঠিয়েছে ১৮ কোট ৪১ লাখ ডলার এছাড়া মার্চে কুয়েত থেকে এসেছে ১৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, কাতার ১১ কোটি ৯৫ লাখ, ইতালি কোটি ৫৪ লাখ, মালয়েশিয়ার থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন কোটি ১৪ লাখ, ওমান থেকে পাঠিয়েছেন কোটি ৪৩ লাখ এবং বাহরাইন থেকে রেমিট্যান্স এসেছে কোটি ৭৫ লাখ ডলার 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে প্রবাসীরা ১৮৬ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন যা আগের মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশ বা ৩৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বেশি গত ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ডলার তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে রেমিট্যান্স বাড়লেও গত বছরের একই সমেয়র তুলনা করলে তা কমেছে মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১৮৫ কোটি ৯৯ লাখ (.৮৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী আয়ের অংক আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় শতাংশ কম গত বছরের মার্চে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯১ কোটি লাখ ডলার

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে মাসে (জুলাই-মার্চে) দেশে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৫২৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ২০ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা) অংক আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩০ কোটি বা প্রায় ১৮ শতাংশ কম ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল এক হাজার ৮৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার

গত ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন ছিল ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি গত অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এসেছে দেশে

২০১৯ সালের জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে শতাংশ হারে প্রণোদনা দিয়ে আসছে সরকার চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে সরকার রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে  নগদ প্রণোদনা শতাংশ থেকে বাড়িয়ে দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে অর্থাৎ এখন কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও আড়াই টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছে সুবিধাভোগী

 

যাযাদি/এস