বাণিজ্যমেলা প্রাঙ্গণে এখনো চলছে প্রস্তুতির কাজ

প্রকাশ | ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১৯:১০

যাযাদি ডেস্ক

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার (ডিআইটিএফ) ২৭তম আসরের আজ (সোমবার) দ্বিতীয় দিন। তারপরেও মেলার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ স্টল ও প্যাভিলিয়ন অসম্পূর্ণ। সেগুলোর অধিকাংশই এখনো পণ্য বিক্রি ও প্রদর্শন শুরু করতে পারেনি।

সোমবার (২ জানুয়ারি) মেলা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। বিশেষ করে মেলার মূল প্রাঙ্গণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী এক্সিবিশন সেন্টারের (বিবিসিএফইসি) বাইরে অধিকাংশ স্টলে এখনো চলছে প্রস্তুতির কাজ। সেগুলোর প্রস্তুতি সম্পূর্ণ হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।

মেলায় তুরস্কের বিদেশি প্যাভিলিয়নে কাজ চলছে। সেখানে স্টল নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সোহরাব হোসেন নামে এক কর্মকর্তা বলেন, রোববার প্রধানমন্ত্রী মেলা উদ্বোধন করেছেন। এজন্য কাল কোনো কাজ হয়নি। আজ (সোমবার) শুরু করেছি। স্টল বুকিং পেতে দেরি হওয়ার কারণে মেলা শুরুর আগে কাজ করা যায়নি।

এদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সচিব ও বাণিজ্য মেলার পরিচালক ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, একটা প্রাণবন্ত মেলার আয়োজন করার জন্য এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। কোথাও কোথাও সাজসজ্জার কাজ নিয়ে তোড়জোড় চলছে। তবে মূল কাজের সবকিছু সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

আয়োজকরা বলেন, গত বছরের চেয়ে এ বছর মেলার পরিসর, আয়োজন ও সাজসজ্জায় বড় পরিবর্তন এসেছে। গত বছর মেলায় স্টল ছিল ২২৫টি। এবার দেশি–বিদেশি স্টল বসছে ৩৩১টি। এবারের মেলায় মোট স্টল ও প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১২৮ ও বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টলের সংখ্যা ২৪৩টি। এর মধ্যে বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি ও বিদেশি প্রিমিয়ার স্টলের সংখ্যা ১৭টি। বড় পরিসরের কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছে।

এ বছর মেলায় ২১টি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, দুবাই, ইতালি ও তাইওয়ান।

মেলা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ বিদেশি স্টল তাদের পণ্য প্রদর্শন করতে পারেনি। এখনো অপ্রস্তুত ভারত, থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশের স্টল। অধিকাংশে এখনো পণ্য বেচাকেনা হচ্ছে না।

এর বাইরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, ডিজিটাল তথ্যকেন্দ্রসহ বেশকিছু সরকারি দপ্তরের স্টলের কাজ এখনো চলছে।

মেলার পূর্বদিকের অংশে বেশিরভাগ কাপড় ও কসমেটিকসের দোকানের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। দক্ষিণ পাশেও একই অবস্থা। সেখানেও নির্মাণসামগ্রী আনা-নেওয়া চলছে। কিছু স্টলের ভেতরে চলছে রং ও সাজসজ্জার কাজ।

এছাড়া মেলার মূল ফটকের বাইরে থাকা রেস্তোরাঁগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। তবে আগামী চার-পাঁচদিনের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হয়ে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, আগামী শুক্রবার মেলায় মূল ভিড় হবে। এর মধ্যে তারা কাজ শেষ করবেন।

এদিকে মেলার শুরুর পরও প্রস্তুতি সম্পূর্ণ না হওয়ায় হতাশ দর্শনার্থীরা। সেগুনবাগিচা থেকে মেলায় আসা শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, প্রতি বছর মেলা শুরুর পরেও কেন কাজ চলে সেটা বুঝি না। অনেক স্টলে পণ্য নেই। খাওয়ার রেস্তেরাঁ নেই। এখনো কাজের শব্দে মাথা ধরে যাচ্ছে। এগুলো আগেই হওয়া উচিত ছিল।

তবে বাইরের থেকে বিবিসিএফইসির মধ্যের স্টল-প্যাভিলিয়নগুলোর অবস্থা ভালো। সেখানে বেশিরভাগ স্টলের কাজ শেষ। মূল এ প্রাঙ্গণে ১৪ হাজার ৩৬৬ বর্গমিটার আয়তনের দুটি হল ছাড়াও এর সামনে পেছনে বসানো হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্যাভিলিয়ন, মিনি প্যাভিলিয়ন ও স্টল।

প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে মেলা শুরু হয়ে চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। মেলায় প্রবেশে প্রাপ্তবয়স্কদের ৪০ টাকার টিকিট কাটতে হবে। শিশুদের জন্য টিকিটের মূল্য ২০ টাকা।

যাযাদি/সৌলভ