উদ্বোধনের অপেক্ষায় রামগড় ইমিগ্রেশন

প্রকাশ | ১১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:০০

মো.জিপন উদ্দিন, ফটিকছড়ি(চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

৯ জানুয়ারী- চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি সীমান্ত ঘেঁষা রামগড়ে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর সকল প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে। শুধু মাত্র এখন উদ্বোধনের অপেক্ষা। ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালুর প্রস্তুতি দেখতে ভারত স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আদিত্য মিত্র ও কাস্টমসের প্রধান কমিশনার যোগেন্দ্র র্গাগসহ উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল ৪ জানুয়ারী  রামগড় ইমিগ্রেশন ভবন ও সাব্রুম ইমিগ্রেশন চেক স্টেশন পরিদর্শন করে গেছেন।

ভারতীয় প্রতিনিধিদলে অন্যান্য সদস্যরা হলেন- ভারত স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষর পরিচালক (প্রকল্প) গীতেশ দীপ, ভারতের কাস্টমসের অতিরিক্ত কমিশনার টমাস বাসু মিত্র, সহকারী কমিশনার অভ্যুদয় গুহ, স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী কাভার সিং, ম্যানেজার ডি নন্দী।এছাড়া চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার এইচ ই ড. রাজীব রঞ্জন এবং রামগড় ৪৩ বিজিবি’র পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. হাফিজুর রহমান ও সাব্রুমের ৯৬ বিএসএফ’র কমান্ড্যান্ট কৃষ্ণ কুমার লাল উপস্থিত ছিলেন।

 এ ইমিগ্রেশন স্টেশন চালু হলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামসহ আশপাশ এলাকার মানুষ রামগড় ও সাব্রুম সীমান্ত পথে ভারতে ভ্রমণে যেতে পারবেন। একইভাবে ভারতের ত্রিপুরাসহ আশেপাশের রাজ্যের মানুষও এ সীমান্ত পথে বাংলদেশে ভ্রমণে আসতে পারবেন। দক্ষিণ ত্রিপুরার মহকুমা শহর সাব্রুম থেকে ইতিমধ্যে আগরতলা পর্যন্ত রেল সার্ভিসও চালু করা হয়েছে বলে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়। ওখানে মহাসড়কেরও উন্নয়ন করা  হয়েছে।

রামগড় স্থলবন্দরের প্রকল্প পরিচালক মো. সরোয়ার আলম বলেন, রামগড় সাব্রুম স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন র্কাযক্রম চালুর প্রস্তুতি দেখার জন্য ভারতীয় প্রতিনিধিদলটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে গেছেন।তিনি বলেন, ইমিগ্রেশন কার্যক্রম চালু করার জন্য রামগড় ইমিগ্রেশন ভবন পুরোপুরি প্রস্তুত।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময় থেকে রামগড়ের ঐতিহাসীক পটভূমির ইতিহাস স্মরণ করে সেই ঐতিহাসীক স্থান রামগড়েই সরকার "বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু -১ "নির্মাণ  করেছে। এ সেতুকে কেন্দ্র করে সরকার "রামগড় স্থলবন্দর " গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। " এ  মৈত্রী সেতু ' চালু হলে বাংলাদেশ ও ভারত এ দু'দেশের মধ্যে সীমান্ত বানিজ্যের প্রসার ঘটবে এবং উভয় দেশ অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে।

ভারতের সাব্রুম থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, নির্মিত এ মৈত্রী সেতুর দৈর্ঘ্য ৪'শ১২ মিটার,  প্রস্ত ১৪ দশমিক ৫ মিটার এবং ডাবল লাইনযুক্ত। এ সেতুর নির্মাণ খাতে ব্যয় হয়েছে ৮৮ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা। সেতু ও দুপাশের এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ভারতের গুজরাটস্থ দিনেশ চন্দ্র আগারওয়াল কোম্পানী। এদিকে, সড়ক পথে যাতায়াত সুবিধার জন্য আপাতত মীরসরাই  করেরহাট থেকে হেয়াকো হয়ে রামগড় পর্যন্ত ডাবল সড়ক নির্মাণ কল্পে জরিপ শুরু হয়েছে। এ সড়কের সব সেতুর নির্মাণ কাজ ইতিমধ্যে আশি শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

সূত্রে প্রকাশ, রামগড় থেকে হেয়াকো হয়ে ফটিকছড়ি -- নাজিরহাট -চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত পৃথক দুইটি সড়কের কাজ বিগত দু'বছর ধরে চলছে।  চট্টগ্রাম- নাজিরহাট শাখা লাইন থেকে রামগড় স্থলবন্দর পর্যন্ত রেল লাইন স্থাপন করতে অনেক আগেই পরিকল্পনা মন্ত্রনালয় থেকে প্রাথমিক জরিপ চালাতে এবং সম্ভাব্যতা যাচাই করতে সরকারী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছিলেম। এ লাইনে  রেল  সার্ভিস চালু করা হলে এ স্থলবন্দরের গুরুত্ব আরো বেড়ে যাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।

তাছাড়া, ভারত সমুদ্র পথে বিভিন্ন পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দরকে ব্যবহার করতে পারবে। এতে পণ্য পরিবহনে ভারত সুবিধা পেলেও বাংলাদেশ রাজস্ব খাতে লাভবান হবে। অপরদিকে, এ মৈত্রী সেতু নির্ভর রামগড় স্থলবন্দরের কাজ প্রায় সমাপ্ত। দক্ষিণ ভারতের ত্রিপুরার সাব্রুম, আসাম, মেজোরাম এবং বাংলাদেশের পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড়, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, চট্টগ্রামেরফটিকছড়ি, হাটহাজারী, মীরসরাই, সীতাকুন্ড সহ বৃহত্তর চট্টগ্রাম  বিভাগের ১১ টি জেলা বানিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হবে। এমনকি, এ ইমিগ্রেশন চালু হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ভারত সুবিধা ভোগ করলেও বাংলাদেশ যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক খাতে ঘুরে দাঁড়াবে। যে কোন সময় দিনক্ষণ ঠিক করা হলে প্রধানমন্রী শেখ হাসিনা এ ইমিগ্রেশন উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।

যাযাদি/এস