বিশ্বজুড়ে কমছে খাদ্যের দাম: স্বস্তির খবর দিল এফএও

প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৫, ১৩:২৩

যাযাদি ডেস্ক
ছবি : সংগৃহিত

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, মে মাসে বিশ্বব্যাপী খাদ্যের দাম ০.৮ শতাংশ কমেছে, যা এপ্রিলের তুলনায় উল্লেখযোগ্য। এই পতন মূলত উদ্ভিজ্জ তেল, শস্য এবং চিনির দাম কমার কারণে ঘটেছে।

এফএও’র সর্বশেষ ফুড প্রাইস ইনডেক্স (Food Price Index) অনুযায়ী, মে মাসে এই সূচক ১২৭.৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে, যা এপ্রিলের ১২৮.৭ পয়েন্টের চেয়ে কম। যদিও এটি গত বছরের এই সময়ের তুলনায় ৬.০ শতাংশ বেশি, তবে ২০২২ সালের মার্চ মাসে ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল, তার থেকে এটি প্রায় ২০ শতাংশ নিচে রয়েছে।

কোন পণ্যের দাম কমেছে?

শস্য: খাদ্যমূল্য সূচকের সবচেয়ে বড় উপাদান শস্য ও খাদ্যশস্যের দাম মে মাসে ১.৮ শতাংশ কমেছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলে ভুট্টার ভালো ফলন এবং বিশ্বব্যাপী গমের চাহিদা কমে যাওয়াকে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া সরগম ও বার্লির দামও কমেছে।

উদ্ভিজ্জ তেল: উদ্ভিজ্জ তেলের দাম ৩.৭ শতাংশ কমেছে। পাম তেল, রেপসিড তেল, সয়াবিন তেল এবং সূর্যমুখী তেলের দাম কমেছে উৎপাদন বৃদ্ধি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাহিদা কমে যাওয়ায়।

চিনি: চিনির দাম ২.৬ শতাংশ কমেছে। খাদ্য ও পানীয় প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে চাহিদা কমে যাওয়া এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি অনিশ্চিত থাকায় এই পণ্যের দাম কমেছে।

কোন পণ্যের দাম বেড়েছে?

তবে, সব পণ্যের দাম কমেনি। মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্যের দাম কিছুটা বেড়েছে:

মাংস: মে মাসে মাংসের দাম ১.৩ শতাংশ বেড়েছে। গরু, খাসি ও শুকরের মাংসের চাহিদা বাড়ায় এই প্রবণতা দেখা গেছে। বিশেষ করে জার্মানিতে পা ও মুখের রোগের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় শুকরের মাংসের দাম বেড়েছে। তবে বার্ড ফ্লু সংক্রমণের আশঙ্কায় মুরগির মাংসের চাহিদা কমেছে।

দুগ্ধজাত পণ্য: দুগ্ধজাত পণ্যের দাম ০.৮ শতাংশ বেড়েছে। এশিয়ার শক্তিশালী চাহিদার কারণে মাখনের দাম রেকর্ড উচ্চতায় রয়েছে, যা পনির ও গুঁড়ো দুধের দাম বাড়াতেও সাহায্য করেছে।

চাল: সামগ্রিক সূচকে প্রভাব না ফেললেও, ইন্দিকা চালের চাহিদা বৃদ্ধি এবং মার্কিন ডলারের মূল্য পতনের কারণে চালের দাম কিছুটা বেড়েছে।

এফএও আরও পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ২০২৫ সালে বিশ্বব্যাপী শস্য উৎপাদন রেকর্ড পরিমাণে (২.৯১১ বিলিয়ন টন) পৌঁছাতে পারে, যা ২০২৪ সালের তুলনায় ২.১ শতাংশ বেশি। এর ফলে বৈশ্বিক খাদ্য সরবরাহ পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এই মূল্য হ্রাস ভোক্তাদের জন্য কিছুটা স্বস্তি বয়ে আনবে বলে মনে করা হচ্ছে।