নিরীক্ষা দুর্বলতায় অর্থপাচার ও ঋণ খেলাপি সহজ হয়েছে :আইসিএমএবি
প্রকাশ | ১৭ জুন ২০২৫, ১৬:৪৩

নিরীক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে দেশ থেকে কয়েক লাখ কোটি টাকা পাচার এবং ঋণ খেলাপি সহজ হয়েছে বলে মনে করছে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটরিয়ামে আইসিএমএবি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন আহমেদ লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি দাবি করেন, ব্যাংকগুলোর লাখ লাখ কোটি টাকা খেলাপি ঋণের দায়ও নিরীক্ষকরা এড়াতে পারে না।
‘অডিট আওতা সম্প্রসারণে সংস্কার প্রস্তাব’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে আইসিএমএবি সভাপতি বলেন, দেশের অডিট বা নিরীক্ষা প্রতিবেদন ব্যবস্থার দুর্বলতার সুযোগেই ব্যাংক, আর্থিক খাত ও পুঁজিবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া সহজ হয়। নিম্নমানের নিরীক্ষা প্রতিবেদনের কারণে পুঁজিবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। একই কারণে দেশি ভালো প্রতিষ্ঠান পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে ভয় পায়।
তিনি বলেন, বিগত দেড় দশকের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির কারণে বাংলাদেশের নিরীক্ষা ইকোসিস্টেম সম্পূর্ণরূপে অকার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতে। আনুমানিক ১৭ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। নিম্নমানের নিরীক্ষা বিনিয়োগকারীদের আস্থা ক্ষুণ্ন করেছে। এর ফলে বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, মানসম্মত নিরীক্ষা ব্যবস্থা থাকলে দেশের খেলাপি ঋণ চার লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতো না। বাংলাদেশে নিরীক্ষা করতে পারে এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার। যেখানে প্রতিবেশী দেশ নেপালে তা ৯ হাজার, পাকিস্তানে ১০ হাজারের বেশি।
এ অবস্থায় কোম্পানি আইনে যেসব প্রতিষ্ঠানে সিএ এবং সিএমএ প্রতিষ্ঠান অডিট বা নিরীক্ষা করে না সেসব প্রতিষ্ঠানে নিরীক্ষার সুযোগ দাবি করে আইসিএমএবি। এজন্য অর্থবিল পাস হওয়ার আগেই দেশের নিরীক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নের স্বার্থে আইন সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
আইসিএমএবি সভাপতি বলেন, দেশের আর্থিক খাতের দুর্বলতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এফআরসি কর্তৃক সংজ্ঞায়িত প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টেন্ট (সিএ ও সিএমএ) দ্বারা লিমিটেড কোম্পানি ব্যতীত সব প্রতিষ্ঠান নিরীক্ষা করানোর বিধান অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু একটি স্বার্থন্বেষী মহলের প্ররোচণায় অর্থবিল থেকে সিএমএ-দের বাদ দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় স্বার্থে এবং আর্থিক সুশাসন নিশ্চিতের লক্ষ্যে সিএমএ-দের সুযোগ দিয়ে বিধানটি ফের বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানান তিনি।