সাপ্তাহিক শেয়ারবাজার

 বাজার মূলধনে যোগ ১৫০ কোটি টাকা

প্রকাশ | ২১ জুন ২০২৫, ১২:১৩

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক
ছবি: সংগৃহীত

ঈদের ছুটি শেষে গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ৩ কার্যদিবসেই ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে। এতে সপ্তাহজুড়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়ছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে বেড়েছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা দুই সপ্তাহ শেয়ারবাজারে মূল্য সূচক বাড়লো। তবে এর আগে ৮ সপ্তাহ পতনের মধ্যে থাকে শেয়ারবাজার।
গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন বেড়েছে ১৫০ কোটি টাকার বেশি। আর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় ৫০ পয়েন্ট। দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় ২০০ প্রতিষ্ঠান। আর দৈনিক গড় লেনদেন বেড়ে ৩০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
এর আগে, গত ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদের পর থেকে শেয়ারবাজারে টানা ৮ সপ্তাহ দরপতন হয়। টানা ৮ সপ্তাহের পতনে ডিএসইর বাজার মূলধন কমে ২৬ হাজার ৮৮২ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫৮২ পয়েন্ট। টানা ৮ সপ্তাহ পতনের পর ঈদুল আজহার ছুটি শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহে শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মেলে। ওই সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়ে ৩ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা।
এমন পরিস্থিতিতে গত সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও অন্য সূচক কমে। তবে দ্বিতীয় ও চতুর্থ কার্যদিবসে সবকটি মূল্য সূচক বাড়ে। আর তৃতীয় ও পঞ্চম কার্যদিবসে সবকটি মূল্যসূচক কমে। উত্থান-পতনের এই বাজারে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৯৪টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টির। আর ৪২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৫০ হাজার ৭৪৩ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৫০ হাজার ৫৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ১৫২ কোটি টাকা বা দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি গত সপ্তাহে প্রধান মূল্যসূচকও বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৩২ পয়েন্ট বা দশমিক ৯৬ শতাংশ। ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ৭১ দশমিক ১৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এতে দুই সপ্তাহে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বাড়লো ১১৬ পয়েন্ট।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৮ দশমিক ৮০ পয়েন্ট বা দশমিক ৮৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
আর বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ১৯ দশমিক ৮৩ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩২ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩২৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ২৪১ কোটি ১ লাখ টাকা। অর্থাৎ, প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৮৪ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বা ৩৫ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৯ দশমিক ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১২ কোটি ৯৮ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অগ্নি সিস্টেম, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্ট, ওরিয়ন ইনফিউশন, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন।