‘ডোনাল ট্রাম্পের শুল্কনীতি পোশাক শিল্পের জন্য মরণফাঁদ’

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৫, ১৬:৪০

যাযাদি রিপোর্ট
জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন আয়োজিত মানববন্ধন

 

যাযাদি রিপোর্ট
ডোনাল ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প এবং ৪০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকের জন্য মরণফাঁদ বলে অভিযোগ করেছেন এই শিল্পের শ্রমিকরা। একই সঙ্গে তারা মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্যর শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার দাবি করেছেন।

শুক্রবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক প্রতিবাদী মানববন্ধনে তারা এই দাবি জানান। জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গার্মেন্টস শিল্প বাংলাদেশের প্রধান এবং একমাত্র শিল্প, যা দেশের ৮৪ শতাংশ রপ্তানি কাভার (পূরণ) করে। এই সেক্টরে কাজ করেন ৪০ লাখ শ্রমিক, যাদের অধিকাংশই নারী এবং গ্রাম থেকে আসা স্বল্পশিক্ষিত পুরুষ। পুঁজিবিহীন গরিব মানুষের একমাত্র উর্পাজনের মাধ্যম এই পোশাক খাত।

তারা বলেন, গার্মেন্টস শিল্প শুধু বাংলাদেশের অর্থনীতি নয়, নারীমুক্তি এবং নারীস্বাধীনতার মেরুদণ্ড। বাংলাদেশি গার্মেস্টস পণ্যের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্র। বর্তমানে দেশটির বাজারে বাংলাদেশি গার্মেস্টস পণ্যের শুল্ক ১০ শতাংশ। গত এপ্রিলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশি পণ্যে ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করেন। পরে ৩ মাসের জন্য এটি স্থগিত করলেও ৩ মাস প্রায় শেষ। অথচ ট্রাম্প ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ১৩টিসহ মোট ৬৩টি দেশের জন্য তিনি শুল্ক নির্ধারণ করেছেন অনেক কম।

শ্রমিকরা বলেন, তুরস্ক, ব্রাজিল, মেক্সিকো, মরক্কোর মতো গুরুত্বপূর্ণ পোশাক রপ্তানিকারক দেশের জন্য শুল্ক বৃদ্ধি না করে আগের শুল্ক বহাল রেখেছেন। এছাড়া বিশ্বে আরও ১৫টি দেশে শুল্কহার একই রেখেছেন। অথচ বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশের জন্য শুল্ক নির্ধারণ করেছেন ৩৭ শতাংশ। এটি চরম বিবেচনাহীন, অমানবিক এবং নারীমুক্তির বাধা বলেও অভিযোগ করেন তারা।

তাদের দাবি, এই শুল্ক কার্যকর হলে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের নারীমুক্তি, নারীর স্বাধীনতা, নারীর অগ্রগতি স্তব্ধ করে দেবে। তাই আমরা এবং দেশের গার্মেন্টস শ্রমিকরা উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠিত, ভীত-সন্ত্রস্ত।

বক্তারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প এবং ৪০ লাখ গার্মেন্টস শ্রমিকের জন্য মরণফাঁদ উল্লেখ করে মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি গার্মেস্টস পণ্যের শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের দাবি জানান।

কর্মসূচি থেকে তারা মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি গার্মেন্টস পণ্যের শুল্ক এবং কোটামুক্ত সুবিধার দাবিতে আগামী ১৫ জুলাই মার্কিন দূতাবাসে স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. হোসেন, আইনবিষয়ক সম্পাদক রবিউল চৌধুরী, সিবিএ সম্পাদক মো. কাশেম, কোষাধ্যক্ষ মনিরা মুন্নি, মো. সবুজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।