শুল্ক স্থগিতাদেশের ডেডলাইন সামনে

যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ন্যায্য বাণিজ্য চুক্তির আহ্বান বাংলাদেশের

প্রকাশ | ২৭ জুন ২০২৫, ১৭:২৪

যাযাদি রিপোর্ট
ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর (ইউএসটিআর) প্রস্তাবিত 'রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যাগ্রিমেন্ট'-এর খসড়ার জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ এবং বেশকিছু শর্তে পরিবর্তনের প্রস্তাব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আরও ন্যায্য একটি চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নিজস্ব আইন বাংলাদেশকে অনুসরণ করার প্রস্তাব দেয় ইউএসটিআর। তবে এ ক্ষেত্রে অন্য একটি দেশের আইন অনুসরণ করার সুযোগ নেই উল্লেখ করে রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে  সীমিত রাখার প্রস্তাব করে প্রস্তাবিত চুক্তির সংশোধিত খসড়া যুক্তরাষ্ট্রে পাঠিয়েছে সরকার।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত এপ্রিলের শুরু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও ন্যায্য বাণিজ্য চুক্তি নিশ্চিত করতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের ওপর অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) আরোপ করেন, যা পরে তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়।

আলোচনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানায়, খসড়া চুক্তি চূড়ান্ত করতে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় ৬:৩০টায় ইউএসটিআর এর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। আগামী ২৯ জুন তাদের মধ্যে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। তারপর এ চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

এর আগে, গত ১২ জুন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক শুল্ক সংক্রান্ত একটি 'নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট' (গোপনীয়তা চুক্তি) স্বাক্ষরিত হয়,  যা কোন দেশের সরকারই প্রকাশ করবে না বলে চুক্তিতে উল্লেখ রয়েছে। এরপর, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে প্রস্তাবিত পারস্পরিক শুল্ক চুক্তির (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ অ্যাগ্রিমেন্ট) খসড়া পাঠানো হয় এবং ১৭ জুন অনলাইনে মিটিংয়ে দুই দেশ চুক্তিটি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে 'রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ এগ্রিমেন্ট' নামে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দিয়ে তার খসড়া বাংলাদেশকে পাঠিয়েছে। সেখানে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আইন বাংলাদেশকে অনুসরণ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে এতে রাজী না হয়ে ওই খসড়ার উপর বাংলাদেশের মতামত ২৫ জুন খলিলুর রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে, যা গতকাল বৃহস্পতিবারের সভায় ইউএসটিআরের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি। তাতে বাংলাদেশের ওপর রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত রাখার অনুরোধ করা হয়েছে, যা বর্তমানে কার্যকর রয়েছে।

এছাড়া, ইউএসটিআরের কার্মকর্তাদের মৌখিক সম্মতির ভিত্তিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষর করার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র বাংলোদেশের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরে রাজি হয়নি বলে বুধবার টিবিএসকে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। আলোচনা চূড়ান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাড়তি সময় চাওয়া হবে কি-না, এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে তিনি বলেন, বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য বাংলাদেশের একজন প্রতিনিধি (ড. খলিলুর রহমান) যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন।