টানা পাঁচ কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার

প্রকাশ | ২৯ জুন ২০২৫, ১৬:০৪

যাযাদি রিপোর্ট
ছবি: সংগৃহীত

 

যাযাদি রিপোর্ট
টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে দেশের শেয়ারবাজারে। একই সঙ্গে বাড়ছে লেনদেনের গতি। রোববার (২৯ জুন) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে দুই বাজারেই প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিললো। একই সঙ্গে ডিএসইতে ৩২ কার্যদিবসের মধ্যে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে।

এর আগ গত ২১ জুন রাতে ইরানের তিন পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে ২২ জুন বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হতেই আতঙ্কে বিক্রির চাপ বাড়ান বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ। ফলে দেশের শেয়ারবাজারে ঢালাও দরাপতন হয়। সড়ে তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৭৬ পয়েন্ট কমে যায়।

তবে পরের চার কার্যদিবস টানা ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার। মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বাড়ে। এক সপ্তাহেই ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১০ হাজার ৮২২ কোটি টাকা। এ পরিস্থিতিতে রোববার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের বড় উত্থান হয়।

তবে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটের পর এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার তালিকা থেকে দাম কমার তালিকায় চলে আসে। ফলে কমে মূল্যসূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। অবশ্য এরপরও দাম বাড়ার তালিকায় অধিক সংখ্যক প্রতিষ্ঠান থাকার পাশাপাশি সবকয়টি মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৮৬ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৮টির। এছাড়া ৬০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮৭টির দাম কমেছে এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ৩৫টির দাম কমেছে। এছাড়া ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৯টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ২টির দাম কমেছে এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।


এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৩৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৮১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

প্র্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ৪৯৪ কোটি ৩৪ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৭৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকার। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ৭ মে’র পর ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হলো।

এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ৩৭ কোটি ৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিচ হ্যাচারির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকার। ১৭ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, লিগাসি ফুটওয়্যার, ড্রাগন সোয়েটার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।


অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৭৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৩টির এবং ৩১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৩৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।