ভারতের ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক বসাতে পারেন ট্রাম্প
প্রকাশ | ০২ জুলাই ২০২৫, ০৯:৫২

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে—এবার তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বজায় রাখলে ভারত ও চীনের মতো দেশগুলোর ওপর ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।
এতে ভারতের অর্থনীতি ও শেয়ার বাজারে বড়সড় ধাক্কা লাগার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি মার্কিন সিনেটে একটি বাণিজ্য বিল পেশ হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে—যেসব দেশ রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করবে এবং ইউক্রেনকে সাহায্য করবে না, তাদের রপ্তানি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করা হবে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বিলকে অনুমোদন দিয়েছেন এবং জানিয়েছেন, অগস্ট মাসে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে সিনেটে উত্থাপিত হবে। সিনেটের ৮৪ জন সদস্য ইতোমধ্যে বিলটির পক্ষে সমর্থন দিয়েছেন।
এর মূল উদ্দেশ্য, রাশিয়ার যুদ্ধ অর্থনীতিকে চাপের মুখে ফেলা এবং মিত্র দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
এই পদক্ষেপের পেছনে রয়েছেন রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম।
এবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আপনি যদি রাশিয়া থেকে তেল বা অন্য পণ্য কেনেন এবং ইউক্রেনকে সাহায্য না করেন, তাহলে আপনার দেশের পণ্যের ওপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক বসানো হবে।”
তিনি আরও বলেন, ভারত ও চীন বর্তমানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ৭০ শতাংশ তেলের বড় ক্রেতা, যা রাশিয়ার যুদ্ধমেশিন সচল রাখতে সাহায্য করছে।
গ্রাহাম জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাকে ব্যক্তিগতভাবে বলেছেন, “এখন আপনার বিলটি পেশ করার সময় এসেছে।”
তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প প্রশাসন প্রথমে চেয়েছিল এই বিলের ভাষা আরও নরম করতে, যেমন ‘হবে’ শব্দের পরিবর্তে ‘হতে পারে’ ব্যবহার করা—যাতে আইনের কঠোরতা কিছুটা কমে।
নতুন এই বিল ভারত ও চীনের ওপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে।
কারণ, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ৬৮.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা মহামারির আগের ১০.১ বিলিয়নের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি।
এই বাণিজ্য মূলত বেড়েছে রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল, সার ও কয়লা আমদানি এবং ভারতের ওষুধ ও ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যের রপ্তানির মাধ্যমে।
উভয় দেশ ইতোমধ্যেই ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে।
কিন্তু ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতি বাস্তবায়ন হলে এই লক্ষ্য ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। তথ্যসূত্র : আনন্দবাজার