ডিএসইতে ৫০০ কোটি টাকা ছাড়ালো লেনদেন
প্রকাশ | ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৮:০৬

নতুন অর্থবছরের (২০২৫-২৬) শুরুতে দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে। মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বাড়তে দেখা যাচ্ছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩৫ কার্যদিবস পর ৫০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেনের দেখা মিলেছে।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে। আর অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক বেড়েছে। এর মাধ্যমে নতুন অর্থবছর ২০২৫-২৬ এর প্রথম দুই কার্যদিবসেই মূল্যসূচক বাড়লো।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। অবশ্য এ পরিস্থিতিতেও দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। এতে দাম কমার তালিকা বড় হলেও প্রধান মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮১টির। আর ৬২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ৯৩টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১০৩টির দাম কমেছে এবং ২১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৩২টি কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে ৩৯টির দাম কমেছে এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ২৯টির শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৯টির এবং ২৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর তালিকাভুক্ত ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২২টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৫টির দাম কমেছে এবং ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৩৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৮ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে ৫০৬ কোটি ১৮ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৭৯ কোটি ৫২ টাকার লেনদেন হয়েছে। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ৭ মে এর পর ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ব্র্যাক ব্যাংক। কোম্পানিটির ২৪ কোটি ৮৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেম শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৪১ লাখ টাকার। ১৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকার শেয়ার নদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মিডল্যান্ড ব্যাংক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিচ হ্যাচারি, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, লাভেলো আইসক্রিম, ফাইন ফুডস, ইসলামী ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৯৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৫ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১৮টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৯টির এবং ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।