চবির হিসাব নিয়ামক প্রধানকে ছাত্রলীগের মারধর

প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০২১, ২০:০৪

চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হিসাব নিয়ামক দফতরের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল আলম চৌধুরীকে মারধর করেছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর দেড়টার দিকে হিসাব নিয়ামক অফিসে ঢুকেই 'জামাতের এজেন্ট' উল্লেখ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে তারা। এবিষয়ে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিকে দ্রুত সময়ের ভেতর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

 

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই ৮-১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী হিসাব নিয়ামক প্রধানের অফিসকক্ষে ঢুকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত এবং গালিগালাজ শুরু করে। তাদের দাবি ফরিদুল আলম জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং দীর্ঘদিন ধরে তাদেরকে আর্থিক অনুদান প্রদান করে আসছে। পরবর্তীতে উক্ত দফতরের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

 

অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। উক্ত ঘটনা তদন্তের জন্য চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরকে কমিটির প্রধান হিসেবে এবং প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়া, গোপনীয় শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৈয়দ ফজলুল করিম, অফিসার্স সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাবেদকে সদস্য করা হয়েছে।

 

মারধরের শিকার ফরিদুল আলম চৌধুরী জানান, কোন কারণ ছাড়াই তারা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে মারধর করে। জাবেদ ভাই না আসলে হয়ত এখান থেকে আমার লাশ বের হতো। জামায়াতের রাজনীতি কিংবা অর্থনৈতিক প্রনোদনার কোন ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তি দাবি করেন।

 

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী চবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি এবং তদন্ত কমিটির সদস্য রশীদুল হায়দার জাবেদ জানান, দুপুরে অফিস সময়ে হঠাৎ করে ৮-১০ জন ছাত্র ফরিদ সাহেবকে টানাহেঁচড়া শুরু করে। তাকে চেয়ার থেকে টেনে তুলে ধ্বস্তাধস্তি এবং গালি দিতে থাকে। আমি তখন একটা অফিসিয়াল ফাইল নিয়ে সেখানে যাই এবং তাদের উদ্দেশ্য জানতে চাইলে কোনরকম আলোচনা করতে রাজি হয়নি। অফিসার্স সমিতির পক্ষ থেকে আমরা আগামী তিনদিনের মধ্যে সঠিক ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছি। অন্যথায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে আমরা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।

 

অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু জানান, ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি। এর সাথে কারা জড়িত সে সম্পর্কে আমি নিশ্চিত নই। দোষীদেরকে তদন্ত কমিটি খুঁজে বের করুক, তবে ফরিদুল আলম জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত কিনা সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার।

 

এব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব রবিউল হাসান ভূঁইয়া জানান, আমরা উক্ত ঘটনা তদন্তে কাজ করছি। এর সাথে জড়িতদের চিহ্নিতকরণ এবং তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখব।

 

যাযাদি/এস