​জবি ভিসির কার্যালয়-গাড়ি ট্রেজারারের দখলে

প্রকাশ | ২০ এপ্রিল ২০২১, ১৪:২৪

মহিউদ্দিন রিফাত, জবি প্রতিনিধি

 

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৯ মার্চ। এরপর থেকেই শূণ্য রয়েছে জবির ভিসি পদ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০৫ এর ১০ (৩) ধারা মতে ভিসির অনুপস্থিতিতে শূণ্যপদে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দিন আহমেদ দ্বায়িত্ব পালন করছেন। সেক্ষেত্রে তিনি তার কার্যালয়ে বসেই বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্য যতটুকু কাজ করা প্রয়োজন তা করবেন। তার জন্য বাড়তি কোন সুযোগ সুবিধা পাবেন না। কিন্তু  ট্রেজারার অধ্যাপক মো. কামালউদ্দিন আহমদ ১৮ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে দ্বায়িত্ব পালনের অফিস আদেশ পাওয়ার দ্বিতীয় দিনের মাথায় (২০ মার্চ) নিজের কার্যালয় ছেড়ে উপাচার্যের কার্যালয় ও গাড়ি ব্যবহার করছেন।

 

এছাড়াও তিনি নিজেকে জবির ভারপ্রাপ্ত ভিসি হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন সবজায়গায়। কার্যালয়ের নেমপ্লেটে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেও ভারপ্রাপ্ত বলে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অফিস আদেশের কোথাও ভারপ্রাপ্তের কথা উল্লেখ করা হয়নি।

 

এসব বিষয়ে জানার জন্য ট্রেজারার মো. কামালউদ্দিন আহমদেকে মোবাইলে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি। পরে মোবাইলের ক্ষুদেবার্তা পাঠালে তিনি জানান, ‘আমার মনে হয়  নিয়োগটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমেই হয়েছে। এবং আমার নিয়োগপত্র টিতে implied যে একজন নিয়মিত উপাচার্য যা যা সুবিধা ভোগ করতেন আমি সবই করতে পারবো।’

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নুর ই আলম স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে দেখা গেছে তার নিয়োগের কথা বলা হয়নি। অফিস আদেশে বলা হয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানের মেয়াদ পূর্তিতে পরবর্তী উপাচার্য নিয়োগ ও নবনিযুক্ত উপাচার্য কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০৫ এর ১০ (৩) ধারামতে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার মো. কামাল উদ্দিন আহম্মেদ উপাচার্যের দ্বায়িত্ব পালন করবেন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, ‘বর্তমান ট্রেজারার কামালউদ্দিন নিয়োগ পাবার আগে জবির ট্রেজারার হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন অধ্যাপক সেলিম ভুইয়া। তখন ভিসি দেশের বাহিরে গেলে বা ছুটিতে গেলে ট্রেজারার ভিসির দ্বায়িত্ব পালন করতেন। সেই কাজ তিনি তার কার্যালয়ে বসেই সম্পন্ন করতেন। কখনো ভিসির কার্যালয় বা গাড়ি ব্যাবহার করেননি। তিনি কেন করছেন?’

 

সার্বিক বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সরকার আলী আককাস বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত আর দায়িত্ব প্রাপ্ত এক নয়। বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্য যতটুকু কাজ করা দরকার সেইটুকু উপাচার্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে ট্রেজারারের মূল দায়িত্বের পাশাপাশি উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করবেন। তবে উপাচার্যের সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন না। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হলে সকল সুযোগ সুবিধার পাশাপাশি উপাচার্যের যেকোন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারবেন।’

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ‘ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব নয়, ফুল দায়িত্ব পালন করছেন। যেকারণে তিনি উপাচার্যের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছেন।’

 

যাযাদি/এসএইচ