মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ইবিতে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অবস্থান

শাহাব উদ্দীন ওয়াসিম, ইবি প্রতিনিধি
  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৯:৫৮

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী চাকুরিজীবী পরিষদ (ডে লেবাররা)। সোমবার বেলা ১২টায় প্রশাসন ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত ভিসি অফিসের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে তারা।

জানা গেছে, বেলা ১২টায় রাসেল জোয়াদ্দার ও টিটুর নেতৃত্বে প্রায় পঁচিশ জন ডে লেবার এ অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেয়। এসময় তারা ভিসি অফিসের সামনে বসে অবস্থান করেন এবং ভিসি ড. আবদুস সালামের সাথে দেখা করতে চান। অফিসের সামনে শোরগোল শুরু হলে উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে আসেন। এসময় তিনি অবস্থানকারীদের কাছে শোরগোলের কারণ ও কেন তারা হটাৎ করে ভিসি অফিসের সামনে অবস্থান নিল তা জানতে চান? ড. জাহাঙ্গীর বলেন, আমি বিভিন্ন সময়ে তোমাদের ভিসি স্যারের সাথে দেখা করার সুযোগ করে দিয়েছি। তাহলে তোমরা হুট করে ভিসি অফিসের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতেছো এর মানে কি? এরপর প্রক্টর তাদেরকে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন এবং তাদের পক্ষ থেকে দুইজন প্রতিনিধিকে ভিসি স্যারে সাথে দেখা করতে বলেন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যায়।

অস্থায়ী চাকুরিজীবীদের পক্ষ থেকে দুইজন নেতা ভিসি স্যারের সাথে দেখা করেন। এরপর তারা প্রশাসন ভবনের সামনে এসে আবার শোরগোল শুরু করেন। ভিসি স্যার তাদেরকে ‘হু আর ইউ বলেছেন’, আমরা এই ক্যাম্পাসের কে সেটা দেখিয়ে দেবো, আমরা দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্ভিস দিয়ে আসছি, আমরা ছাত্র অবস্থায় ছাত্রলীগের কর্মী ছিলাম, আমাদের চাকুরি কেন দিবে না?, ইত্যাদি বক্তব্য শোনা যায়।

এসময় তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেলা দুইটার সময় ছেড়ে যাওয়া শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বাস ও মেইন গেট অবরোধের চেষ্টা করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অস্থায়ী চাকুরিজীবী পরিষদের সভাপতি রাসেল জোয়াদ্দার গাড়ির ভিতরে আছেন এবং গাড়ি থেকে নেমে প্রতিবেদকের সাথে কথা বলবেন বলে জানান। পরবতীতে তার ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বলেন, “আজকের আন্দোলনের প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ভুল ছিলো। কর্তৃপক্ষ নিয়মের মধ্যে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টির ব্যাপারে তিনি বলেন, “আগামীতে যদি এরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চাইবো।”

ভিসি প্রফেসর ড. আবদুস সালাম বলেন, “ডে লেবার মানে কি? বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজনে তাদেরকে দৈনিক মজুরি দিয়ে ডেকে আনা হয়েছে। আমি তো চাইলেই তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানোগ্রামের বাইরে গিয়ে নিয়োগ দিতে পারি না। তারা ছাড়াও তো বিশ্ববিদ্যালয়ে এডহোক ও থোকে অনেকে প্রায় বিশ থেকে পঁচিশ বছর কাজ করতেছে। আমি তাদেরই চাকরি দিতে পারছি না।

ইউজিসির পক্ষ থেকে আপাততো তাদের কোন চাকুরি দেওয়ার কোন নির্দেশনা নেই। কাউকে চাকুরি দিতে হলে নিদিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বা একটা এজেন্সির মাধ্যমে দিতে হবে। আমরা যখন সার্কুলার দেবো তখন তাদের কথা বিবেচনায় রাখবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হলে অবশ্যই প্রশাসনের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারীর সময়কালে দৈনিক মজুরিতে আন্দোলনরত ডে লেবাররা কাজের সুযোগ পায়। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ব থেকেই তারা স্থায়ী নিয়োগের জন্য আন্দোলন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে।”

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে