শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জবির নতুন ক্যাম্পাসের মাস্টারপ্ল্যান দ্রুত বাস্তবায়নের ছাত্রলীগের বিক্ষোভ

জবি প্রতিনিধি
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:০৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের মাস্টারপ্ল্যান সহ সকল উন্নয়ন কাজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে উপাচার্য বরাবর একটি স্মারকলিপিও দেন তারা। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় উপাচার্যের দপ্তরের সামনে এই বিক্ষোভ করেন তারা।

এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরে বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিভিন্ন জাতীয় গণমাধ্যমের খবরে আমরা জানতে পেরেছি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের প্রকল্পের তিন দফায় মেয়াদ বাড়লেও এখন পর্যন্ত মাষ্টারপ্ল্যানের কোম্পানী নিয়োগ হয়নি। কোম্পানী নিয়োগে জটিলতা তিন বছরে মাস্টারপ্ল্যান কোম্পানী নিয়োগ দিতে পারেনি। ২০১৯ সালে ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন: ভূমি অধিগ্রহন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের জন্য ২৯ কোটি ৫৮ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকার ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরবানাকে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসাবে নিয়োগে সুপারিশ করে। গত ১১ মার্চ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ২০২০-২১ আর্থিক বার্ষিক কর্মসূচির সভায় নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ ও মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের জন্য ক্রয় প্রক্রিয়া পিপিআর অনুযায়ী না হওয়ায় বিষয়টি মন্ত্রনালয় থেকে অনুমোদন দেয়নি।

পরবর্তীতে মাস্টারপ্ল্যানের কাজের জন্য সিঙ্গেল চয়েজের ভিত্তিতে আরবানা কোম্পানীকে প্রায় ৫ কোটি টাকায় কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কিন্তু নিয়মের ব্যতয় ঘটায় এ সিদ্ধান্তও বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ২০২১ সালের ৩ জুন মাস্টারপ্ল্যানের কোম্পানী নিয়োগে জটিলতা ও অনিয়মের কারণে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল করেন।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, গত ২৩ আগস্ট মাস্টারপ্ল্যানের জন্য পুনঃদরপত্র আহ্বানের কথা থাকলেও পুনঃবিজ্ঞপ্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল করে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাহায্যে মাস্টারপ্ল্যানের কাজের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। এর মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিন দফায় বৃদ্ধি হয়েছে। মাস্টারপ্ল্যান না হওয়ায় লেক নির্মাণের টেন্ডার বাতিল হয়েছে। আটকে আছে পুরো কাজ। নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় এই কাজটি না করা গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজ আরও দীর্ঘায়িত হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প পরিচালক এবিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। মাস্টারপ্ল্যানের কাজ টেন্ডারের মাধ্যমে হলে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত করা যাবে। মাস্টারপ্ল্যান প্রক্রিয়াটির কাজ শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে যাবে। এভাবে কাজটি করলে অনেক দীর্ঘায়িত হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আমরা এ বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত।

শাখা ছাত্রলীগের সম্মেলন প্রস্তুত কমিটির আহ্বায়ক আশরাফুল ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের প্রাণের স্পন্দন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের নতুন ক্যাম্পাসের জন্য কেরানীগঞ্জে জায়গা বরাদ্দ দেয়ার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো মাস্টারপ্ল্যান ঠিক হয়নি। এখন আবার মাস্টারপ্ল্যান তৈরির কাজ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় না করলে অনেক দীর্ঘ সময় চলে যাবে শুধু মাস্টারপ্ল্যান ঠিক করতে। এতে করে ৫-৭ বছর আর কোনো কাজই হবে না। এজন্য আমরা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি জানাচ্ছি নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় অতিদ্রুত সকল উন্নয়ন কাজের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার একটি জাতীয় দৈনিকে 'মাস্টারপ্ল্যান তৈরির প্রতিষ্ঠান নিয়োগ হয়নি তিন বছরেও' শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। যাতে মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে জটিলতার বিস্তারিত তথ্য উঠে আসে।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে