বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আগামী মাসে খুলছে ইবি’র হল, প্রস্তুতি কতটুকু?

শাহাব উদ্দীন ওয়াসিম, ইবি প্রতিনিধি
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১৭:৩০

আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে আবাসিক হল খোলা হতে পারে বলে জানিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) প্রশাসন। এদিকে গত জুনের আগে ইউজিসি থেকে আবাসিক হল, একাডেমিক ভবন সংস্কারসহ শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণে বাজেট আসলেও ক্যাম্পাসে দৃশ্যমান কোন কাজ শুরু হয়নি। আবাসিক হল বন্ধ রাখার শর্তে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ইতোমধ্যে ২০টির অধিক বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাস পাশ্ববর্তী এলাকায় মেসগুলোতে সিট সংকট এবং নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবারের অভাবে হল খোলার প্রতীক্ষায় রয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

প্রশাসন সূত্রে, গত ১৪ তারিখ মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেন। এসময় তিনি বলেন, আগামী ২৭ তারিখের মধ্যে সকল শিক্ষার্থীদেরকে এক ডোজ টিকা ও কমপক্ষে টিকার রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী পরিচয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে টিকা গ্রহণের অনুরোধ করেন তিনি। এছাড়াও যারা এনআইডি কার্ডের জটিলতায় নিবন্ধন করতে পারছেন না তারা ইউজিসি প্রদত্ত লিংকের (যঃঃঢ়://ঁহরাধপ.ঁমপ.মড়া.নফ/) মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে পরবর্তীতে সুরক্ষা অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। ২৭ তারিখের পর একাডেমিক কাউন্সিলের সভা করে টিকা নিতে কেউ বাকি থাকলে বঞ্চিতদের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল থেকে টিকা দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

এদিকে আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাস পাশ্ববর্তী অঞ্চলে আবাসন সংকট, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে বলেও জানা গেছে। অধিকাংশ মেসগুলোতে রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় পরীক্ষার সময় সমস্যায় পড়ছে পরীক্ষার্থীরা।

ইতোমধ্যে যেসব আবাসিক শিক্ষার্থীরা কমপক্ষে এক ডোজ টিকা গ্রহণ করেছে তাদের কার্ড দেখে হলে থাকার ব্যবস্থা করলে পরীক্ষার সময়ে ভোগান্তি অনেকটা কমে যেতো বলে মনে করেন সচেতন শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

বাজেট শাখা সূত্রে, আবাসিক হল, একাডেমিক ভবনসহ অন্যান্য ভবন মেরামত করে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে গত জুনের আগে ইউজিসি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে ২কোটি ১৫লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। ইতোমধ্যে গত সপ্তাহে একাডেমিক ভবন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিতকরণে ডিনদেরকে এবং বিভাগগুলোকে বরাদ্দ দিয়েছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ২৫টি বিভাগকে ২লাখ এবং নতুন ৯টি বিভাগকে ১লাখ করে টাকা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ছেলেদের ৫টি ও মেয়েদের ৩টি আবাসিক হলের সংস্কার ও মেরামতের জন্য ইউজিসি বরাদ্দ দিয়েছে ১কোটি ৩৫লাখ টাকা। তবে সাড়ে তিন মাসের অধিক সময় পেরিয়ে গেলেও এখন এর কার্যক্রম শুরু হয়নি। টেন্ডারের মাধ্যমে এ কাজ বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানা গেছে।

টেন্ডারের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী সহিদ মো. তারেক বলেন, “গত ১৪ তারিখে আবাসিক হলের বিষয়ে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। ২৭ তারিখে এটি ওপেন করা হবে এবং এর এক সপ্তাহ পর কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।”

হলে কি ধরণের কাজ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আবাসিক হলগুলোর বাইরের পাশ ও কমন স্পেসগুলো রং করা, পানির লাইন ও বিদ্যুত লাইন মেরামতসহ হলের অন্যন্যা টুকিটাকি মেরামত ও সংস্কারের কাজ করা হবে।”

ক্যাম্পাস খোলার পূর্ব মূহুর্তে আবাসিক হলগুলোর প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. তপন কুমার জোদ্দার বলেন, “ইতোমধ্যে আমরা হলে থাকার মত পরিবেশ তৈরি করেছি। বিদ্যুত ও পানির যে সামান্য সমস্যা আছে তা সমাধানের জন্য প্রকৌশল অফিসকে জানানো হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা হলে ওঠার সময় তাদেরকে ওয়েটিং রুমে রেখে রুমে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করা হবে।”

কবে নাগাদ হল খুলতে পারে জানতে চাইলে ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, “আমরা শিক্ষার্থীদেরকে ২৭ তারিখের মধ্যে টিকার প্রথম ডোজ নিশ্চিত করা এবং কমপক্ষে রেজিস্ট্রেশন করার কথা বলেছি। টিকা নিশ্চিত হলে এবং সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা এবং এর দুই একদিন আগে হল খোলার চিন্তা ভাবনা আছে।”

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে