প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষা অফিসারের পদ বাড়ছে

প্রতি ১৫টি বিদ্যালয়ের জন্য একজন করে নিয়োগের পরিকল্পনা

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০ | আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:৩৮

আমানুর রহমান

দেশের প্রতি ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একজন করে সহকারী শিক্ষা অফিসার নিয়োগের পরিকল্পনা করছে সরকার। এজন্য বিদ্যমান নিয়োগ বিধি সংশোধন এবং কারা এ পদের জন্য যোগ্য হবেন, তা নিয়ে নানা চিন্তা-ভাবনা চলছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে মনিটরিং বাড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক অধিদপ্তর (ডিপিই)। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সর্বশেষ বৈঠকেও মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে কার্যক্রম দ্রম্নত শেষ করার সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে। এদিকে, মন্ত্রণালয়ের অধীন শূন্য পদের বিপরীতে এবং ছাত্র সংখ্যা অনুপাতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষকসহ অন্য সহায়ক জনবলের পদ সৃষ্টি ও নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজও শুরু হয়েছে। শিগগিরই পর্যায়ক্রমে এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। সহকারী শিক্ষা অফিসার পদে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সিনিয়র প্রধান শিক্ষকদের এ পদে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কিন্তু বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে 'যোগ্য সহকারী শিক্ষকদের'ও বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তারা আগের নিয়মে এ পদোন্নতি দেওয়া না হলে অনেক প্রধান ও সহকারী শিক্ষক বঞ্চিত হবেন বলে আশঙ্কা করছেন। কারণ বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে অনেক প্রধান শিক্ষকও বাদ পড়বেন। এতে শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা বাড়বে। কারণ প্রধান শিক্ষক পদে দীর্ঘদিন কাজ করার পর জীবনের শেষ পদোন্নতি জেলা শিক্ষা অফিসার হতে চান তারা। এ সুযোগ না পেলে হতাশা নিয়েই তাদের বিদায় নিতে হয়। মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যমান উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের অধীন যে জনবল রয়েছে, তা দিয়ে সব প্রাথমিক বিদ্যালয় সঠিকভাবে তদারকি বা মনিটরিং হচ্ছে না। বর্তমানে সারাদেশে প্রায় প্রতিটি গ্রামে একটি করে প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এগুলো তদারকি করছেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। সেখানে ১ জন করে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও একাধিক সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রয়েছেন। কিন্তু বিদ্যালয়ের আধিক্যের কারণে সঠিক তদারকি হচ্ছে না। ফলে প্রাথমিক শিক্ষার কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন মান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে ইতোপূর্বে নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও কোনোটিই কার্যকর ও ফলদায়ক হয়নি। তাই সংখ্যাভিত্তিক মনিটরিং শুরু করার লক্ষ্য নিয়ে সহকারী শিক্ষা অফিসার নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই আলোকে দেশের প্রতি ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একজন করে সহকারী শিক্ষা অফিসার নিয়োগ করতে যাচ্ছে সরকার। ডিপিই'র দেওয়া তথ্যানুসারে, দেশের অনেক উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা সর্বনিম্ন অর্ধশত এবং সর্বোচ্চ প্রায় ৩শ' পর্যন্ত রয়েছে। দেশের অন্যতম ঘনবসতি পূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত লক্ষ্ণীপুর সদর উপজেলায় রয়েছে ২৫১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেগমগঞ্জ উপজেলায় আছে ২১৮টি, নোয়াখালী সদরে রয়েছে ১৯৯টি। এত বিপুলসংখ্যক প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ জন করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও একাধিক সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার দিয়ে মনিটরিং বা তদারকি মোটেই সম্ভব হচ্ছে না। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) রতন চন্দ্র পন্ডিত যায়যায়দিনকে বলেন, এ অবস্থায় গত কয়েক বছর থেকেই সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নিয়োগ নিয়ে কাজ চলছে। বিষয়টি এখন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এ ব্যাপারে দ্রম্নত পদক্ষেপ নিতে সুপারিশ করেছেন। \হ