উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) প্রবেশের জন্য দৃষ্টিনন্দন ফটক নির্মাণ করা হলেও সামনের গড়ে উঠেছে আবর্জনার স্তূপ।বছরের পর বছর এমন নোংরা পরিবেশে চলছে সকল কার্যক্রম। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সহ সামাজিক সংগঠনগুলো পরিষ্কার -পরিছন্নতার জন্য বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নিলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয় নাই। ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারে এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ থাকায় বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের মহাসড়কের দুই পাশে ব্রয়লার মুরগী,বিভিন্ন ভাসমান দোকান ও অস্থায়ী মাছের দোকানের উচ্ছ্বিষ্ট বর্জ্য দোকানীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের ড্রেনে ফেলছে।এছাড়াও সম্পূর্ণ ড্রেনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ময়লা আবর্জনা, যেগুলো থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চলাচলের জন্য বিকল্প রাস্তা না থাকায় মুখ,নাক কাপড় দিয়ে চেপে ধরেই চলাচল করছেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সংগঠন 'গ্রীন ভয়েস'র সভাপতি রবিউল ইসলাম বলেন,পরিচ্ছন্নতা আত্মিক উন্নতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। পরিচ্ছন্নতা কেবলমাত্র শরীরের ব্যাপারে নয়। এটি আমাদের চারপাশের পরিবেশের একটি বড় অংশ।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস লেখা পড়ার জন্য মনোরম পরিবেশ তৈরির পাশাপাশি সকলের কাছে দৃষ্টিনন্দিত হয়। অথচ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গেট পার হলেই বিশ্রী দূরগন্ধের কারণে নাক-মুখে হাত দিয়ে রাস্তায় চলাচল করতে হয়। স্থানীয়দের অপরিকল্পিত বাজার,ক্যম্পাসের মূল ফটকের সামনে মুরগির দোকান, টিএসসির পিছনেই মাছের বাজার ক্যম্পাসের সৌন্দর্য নষ্টের পাশাপাশি একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে।যা সকলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।বিশেষ করে শিক্ষার্থীদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষার্থীদের সুস্থ পরিবেশ এবং ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য রক্ষার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেট থেকে দুই নম্বর গেটের ঠিক বাহিরের অংশে সৌন্দর্য বর্ধক গাছ এবং চলাচলের জন্য ফুটপাতের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ অনুষদের শিক্ষার্থী একরামুল হক জীম জানান, এবারে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আমার এলাকার দুই জন শিক্ষার্থী আমাদের ক্যাম্পাস কেন্দ্রে পরীক্ষা দেয়।পরীক্ষা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং গেইটের সামনে তারা আমাকে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের পরিবেশ সুন্দর হলের বাইরে এত নোংরা কেন জানতে চাইলে লজ্জায় উত্তর দিতে পারি নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের উচিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের পরিবেশের পাশাপাশি সামনের পরিবেশও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনাসহ দ্রুত উদ্যোগ নেয়া।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ও কেন্দ্রীয় ভান্ডার শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. জাফর আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের পরিবেশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নিয়েছি। অন্যতম ক্লিন ক্যাম্পাস কর্মসূচি এছাড়াও বিভিন্ন সময় পরিষ্কার করার পরও সামনের বিভিন্ন পোল্ট্রির দোকান ভাসমান দোকানগুলোর জন্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ধরে রাখা সম্ভব হয় না। আমরা আগামীকাল ক্যাম্পাসের সামনের পরিবেশ পরিষ্কারের জন্য আবারো কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি'র সহযোগিতায় স্থায়ী ভাবে এই পরিচ্ছন্ন পরিবেশ বজায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
যাযাদি/এস