তোপের মুখে ছাত্রীদের ১১ দফা দাবি মেনে নিল খুবি প্রশাসন

প্রকাশ | ১৭ আগস্ট ২০২২, ১০:৩৯

যাযাদি ডেস্ক

ছাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের জন্য প্রাধ্যক্ষ বডির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ১১ দফা দাবি মেনে নিয়েছে হল কর্তৃপক্ষ প্রায় ঘণ্টা ধরে চলা বিক্ষোভের পর হল কর্তৃপক্ষ ছাত্রীদের দাবি দাওয়া মেনে নেয় মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) রাত ২টার দিকে মেয়েদের হলে ঢোকার ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

 

রাত ২টার দিকে ১১ দফা দাবি সংবলিত নোটিশে হল প্রাধ্যক্ষ প্রাধ্যক্ষ বডির সব সদস্য সই করেন মেয়েদের এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল ছাত্রদের একাংশ

 

জানা যায়, টানা বিক্ষোভের মুখে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চলে আসেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হল প্রাধ্যক্ষ বডির সদস্যরাএসময় ছাত্রীরা তাদের দাবিগুলো চলমান সমস্যা তুলে ধরেনপরবর্তীতে ছাত্রীদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন অপরাজিতা হলের সহকারী প্রাধ্যক্ষ মাহফুজা খাতুন এরপর রাত ২টা মিনিটের দিকে ছাত্রীরা ক্যাম্পাসের হাদী চত্বর ছেড়ে হলে ফিরে যান

 

এর আগে, অপরাজিতা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা মধ্য রাতে হলের তালা ভেঙে বিভিন্ন সময় হল প্রোভেস্টের বাজে আচরণ, রান্নার সরঞ্জাম জব্দ করার নোটিশের প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু করে মঙ্গলবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে ছাত্রীরা প্রথমে হলের ভেতরের তালা ভেঙে বাইরে আসে পরবর্তীতে হলের গেট খুলে প্রতিবাদ শুরু করে

 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জনা যায়, হলের প্রোভোস্ট, সহকারী প্রোভেস্ট ছাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে ধমক দেওয়া থেকে শুরু করে সিট বাতিলের হুমকি দেনমঙ্গলবার এক ছাত্রী ওই হলে বটি দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করেএর পরিপ্রেক্ষিত্রে ছাত্রীদের রান্না করার সরঞ্জাম জব্দ করার নিদের্শ দেয় হল কর্তৃপক্ষ ইলেকট্রনিক ডিভাইসসহ রাইস কুকার যার কাছে পাওয়া যাবে তার সিট বাতিল হবে বলে জানানো হয়এছাড়াও কিছুদিন আগে ফেসবুকে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রীকে ৪৫ মিনিট ধরে জেরা করা হয় এর পরিপ্রেক্ষিত্রে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করেএছাড়াও বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে জানালে উল্টো শাসানো হয় সমস্যা সমাধান না করে

 

বিষয়ে অপরাজিতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক রহিমা নুসরাত রিম্মি বলেন, আমরা ছাত্রীদের ১১ দফা মেনে নিচ্ছি সময় তিনি খারাপ আচরণ করার জন্য প্রভোস্ট বডির পক্ষ থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চান

 

শিক্ষার্থীদের ১১ দফা দাবিগুলো হলো-

 

>> যৌন হয়রানির প্রতিবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলার কারণে ব্যক্তিগত আক্রমণ পারিবারিক শিক্ষা তুলে কথা বলার ঘটনায় ক্ষমা চাইতে হবে

 

>> রাইস কুকার রান্নার সরঞ্জাম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে

 

>> পানির পোকা খাবারের সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে

 

>> হলে প্রয়োজনে অভিভাবক নারী আত্মীয়দের থাকার অনুমতি দিতে হবে

 

>> হলের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে

 

>> প্রাধ্যক্ষ তার নিজ ডিসিপ্লিনের (বিভাগ) শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত অ্যাকাডেমিক বিষয়ে হয়রানি করেন এটা বন্ধ করতে হবে ক্ষমা চাইতে হবে

 

>> ছাত্রীদের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে

 

>> যে কোনো পরিস্থিতিতে সিট বাতিলের হুমকি দেওয়া বন্ধ করতে হবে

 

>> হলের মিল খাওয়া বাধ্যতামূলক থাকবে না

 

>> আজকের আন্দোলনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কোনো ছাত্রীকে ব্যক্তিগতভাবে হুমকি দেওয়া যাবে না

 

>> দাবিগুলো দ্রুত না মানলে প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগ করতে হবে

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক . সালমা বেগম বলেন, ভবিষ্যতে হলের যে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে শিক্ষার্থীদের মতামতকে প্রাধান্য দেওয়া হবে

 

যাযাদি/ এস