স্বমহিমায় ফিরছে বইমেলা

প্রকাশ | ২৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১০:২৭

তাহমিদ জায়িফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হাতুড়ি-পেরেকের ঠুকঠাক আওয়াজ আর শ্রমিকদের ব্যস্ততা জানান দিচ্ছে- বইমেলা চলে এসেছে। আর দুদিন পরই শুরু হবে বাঙালির প্রাণের এ বইমেলা।  বইমেলার প্রস্তুতিও প্রায় শেষের দিকে। শেষ মূহুর্তের সাজসজ্জা ও স্টল নির্মাণে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা।   

করোনা মহামারির কারণে বিগত দু’বছর বইমেলা চিরাচরিত নিয়ম থেকে অনেকটাই ব্যতিক্রম হলেও মহামারী না থাকায় এবার ফিরছে আপন নিয়মে।

 
শনিবার বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায় স্টল নির্মাণকারী শ্রমিকদের ব্যস্ততা। কোথাও রঙের তুলিতে চলছে স্টলের শৈল্পিক কারুকাজ,  কোথাও হাতুড়ি-পেরেক-শাবালের ঠুকঠাকে চলছে স্টল নির্মাণ, আবার কোথাও চলছে লাইট বসানোর কাজ। শ্রমিকদের যেন এক মূহুর্তের জন্যও দম ফুরানোর হুঁশ নেই। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণেও ঠিক একইরকম ব্যস্ততা দেখা যায়।

স্টল শ্রমিক ইমন জানান, প্রতিদিন সকাল ৯-১০ টা থেকে রাত ৯-১০ টা পর্যন্ত একটানা চলে কাজ। তারা কয়েকজন এবার মেলায় প্রায় ছয়টি স্টল নির্মাণ করছেন।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কথা হয় জাগৃতির প্রকাশনীর স্টল নির্মাণের তদারকিতে থাকা খালেদুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, আমরা ২২ তারিখ(২২ জানুয়ারি) লটারিতে স্থান বরাদ্দ পাওয়ার পরপরই কাজ শুরু করে দিয়েছি। আমাদের কাজ প্রায় শেষের দিকে। আজকের মধ্যেই (২৮ জানুয়ারি) স্টল সম্পুর্ণ রুপে প্রস্তুত হয়ে যাবে।

তবে সব স্টলের প্রস্তুতি সমান নয়। কোনো কোনো প্রকাশনী স্টলের কাজ মাত্রই শুরু করেছে। তবে তারাও ৩১ তারিখের মধ্যেই সম্পুর্ন স্টল নির্মাণ হয়ে যাবে বলে আশা করেন প্রকাশকরা।

বরাবরের মতো এবারও মেলার মূল অংশ থাকবে বাংলা একাডেমিতে। আর গ্রন্থ উন্মোচন ও লেখক বলছি মঞ্চ থাকবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে।

তবে প্রতিবার স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিশ্রভাবে থাকলেও এবারের স্টল ও প্যাভিলিয়নের জন্য আলাদা সারি করা হয়েছে। যা মেলার সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

 এবার বইমেলায় অংশ নিচ্ছে মোট ৫৭৫ প্রতিষ্ঠান। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৭২টি প্রতিষ্ঠানকে ৭১০টি স্টল ও বাংলা একাডেমিতে ১০৩টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪৭টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এবারের বইমেলায় সর্বমোট ৮৫৮টি ইউনিট স্টল বরাদ্দ দিয়েছে বাংলা একাডেমি। এছাড়া মেলায় ছোট-বড় প্যাভিলিয়ন থাকবে ৩৪টি।

গত বছরের বইমেলায় ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭৬টি ইউনিট স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ছিল ৩৫টি।

সেদিক বিবেচনায় চলতি বছর বইমেলাতে একটি প্যাভিলিয়ন সংখ্যা কমেছে। তবে এবছর প্রতিষ্ঠান ও স্টল সংখ্যা দুটোই বেড়েছে।


এদিকে একটি বইতে ‘ভিন্নমত’ থাকার অভিযোগে ‘আদর্শ’ প্রকাশনীকে এবার বইমেলায় স্টল বরাদ্দ দেয়নি বাংলা একাডেমি। বিষয়টি ব্যপক আলোচনার জন্ম দেয়। পরে আদর্শ প্রকাশনী কর্তৃপক্ষের আপত্তি থাকা বইটি সরিয়ে নেওয়ার ঘোষনা দিয়ে স্টল বরাদ্দের আবেদন জানায়। কিন্তু ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এর সুরাহা হয়নি।

যায়যায়দিন পত্রিকাকে তা নিশ্চিত করেন আদর্শের প্রকাশক মাহবুবুর রহমান। 

যাযাদি/ এস