জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক প্রশিক্ষণ নিয়ে মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন হচ্ছে: উপাচার্য মশিউর রহমান

প্রকাশ | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৭:৩১

গাজপুর প্রতিনিধি

দেশের সকল কলেজ শিক্ষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ‘শিক্ষক প্রশিক্ষণ মাস্টার প্ল্যান’ প্রণয়ন করছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ‘খুব শিগগিরই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক এবং ফিজিক্যাল মাস্টার প্ল্যানের মতো করেই ‘শিক্ষক প্রশিক্ষণ মাস্টার প্ল্যান’ চূড়ান্ত করা হবে। একটা মাস্টার প্ল্যান থাকলে আমরা বুঝতে পারবো- কতবছরে কতজন শিক্ষককে কীভাবে আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। 

শনিবার বিকালে অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) এর অধীন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত বিষয়ভিক্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের ২৬ ও ২৭তম ব্যাচের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের চাহিদার আলোকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে চালু করেছে জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ের শিক্ষকদের জিআইএস প্রশিক্ষণ, মেন্টাল হেলথ, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসের প্রশিক্ষণ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। গবেষণার উপর খুব শিগগিরই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। 

ইতোমধ্যে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের কোর্স আউট লাইন তৈরি হয়েছে। বিজ্ঞানের বিষয়ে আরও কিছু প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এছাড়া আইসিটি এবং প্যাডাগোজির বিষয়ে সিইডিপির উদ্যোগেই আলাদা প্রশিক্ষণ চালু হবে। প্রয়োজনে জাতীয় বিশ^বিদ্যালয় নিজস্ব অর্থায়নে আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ শুরু করবে। কারণ এগুলোই আমাদের অগ্রাধিকার।’   

উপাচার্য আরও বলেন, ‘জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বৃহৎ জায়গা। এটিকে এগিয়ে নিতে হলে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকা আবশ্যক। আজকের এই প্রশিক্ষণে ৮জন কোর্স উপদেষ্টা যুক্ত ছিলেন। গত ২৮ দিনে তাঁদের সার্বক্ষণিক অংশগ্রহণ; মেধা, মনন এবং পরিশ্রম দিয়ে প্রশিক্ষণার্থীদের ঋদ্ধ করেছেন। আপনারা শিক্ষকতা পেশায় দেশ-বিদেশে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন, সেসবের আদান-প্রদানে আমাদের শিক্ষকেরা নিশ্চয়ই আরও বেশি সমৃদ্ধ হয়েছেন।’

উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র কারিকুলাম পরিবর্তনই সব না। কারিকুলাম তৈরি করে সেখানে কনটেন্ট দিতে হবে। ভিডিও লেকচারগুলো দিতে হবে। ই-বুক, ই-জার্নালের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।  মনিটরিং এবং পরীক্ষা পদ্ধতি পুরোটা একটা সফ্টওয়্যারের মধ্যে আনতে হবে। আমরা এল এম এস নিয়ে কাজ করছি। এটি চালু হলে বাংলাদেশের কলেজ শিক্ষায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হবে বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের অপার সম্ভাবনার দেশ। অদম্য সাহসের দেশ। আসুন আমরা মানসিক বিপ্লবের পথটি সুচারু করি। উন্নয়ন, শিক্ষা এবং প্রকৃত জ্ঞান অর্জনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বদলে দেই।’ 

একসঙ্গে ২টি ব্যাচের ৮টি বিষয়ের বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম গত ৮ জানুয়ারি শুরু হয়। এই প্রশিক্ষণে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের মোট ৩০৫ জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। ২৮দিনব্যাপী চলা প্রশিক্ষণের গতকাল ছিল সমাপনী দিন। 

এই সমাপনী অনুষ্ঠানে স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার, সিইডিপির প্রকল্প পরিচালক। ২৬তম ব্যাচের কোর্স উপদেষ্টাবৃন্দ হলেন বোটানির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. রাখহরি সরকার, ইতিহাসের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. আকসাদুল আলম, অর্থনীতির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ইংরেজির ইউজিসি অধ্যাপক ড. ফখরুল আলম। 

২৭তম ব্যাচের কোর্স উপদেষ্টারা হলেন ব্যবস্থাপনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো. সেলিম ভুঁইয়া, ইসলামিক স্টাডিজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রশিদ, পদার্থ বিজ্ঞানের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ইশতিয়াক এম সৈয়দ, প্রাণিবিদ্যার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. দেবাষীশ কুমার কুন্ড। এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষক প্রশিক্ষণ দপ্তরের পরিচালক মো. হাছানুর রহমান।  
যাযাদি/ এম