ইউনেস্কোর অনুদানকৃত গবেষণায় দারুণ সাফল্য পেয়েছে হাবিপ্রবির গবেষকরা

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:২১

হাবিপ্রবি প্রতিনিধি

কোনো রকম বিষ, হরমোন ব্যবহার ছাড়াই খুবই স্বল্প মাত্রায় ইউরিয়া (টিএসপি, পটাশ) ও ব্যাক্টেরিয়ার ব্যবহার করে টমেটো চাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) গবেষক ড. আজিজুল হক ও তার দল। এই গবেষণায় অনুদান দিয়েছে ইউনেস্কোর দ্যা ওয়ার্ল্ড একাডেমী অফ সায়েন্সেস (টিডব্লিউএএস)।

'বিপুল প্লাস' জাতের টমেটো চাষে খুবই সহজলভ্য কিছু নাইট্রোজেন স্থায়ী করণ ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে এমন অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন বলে জানান গবেষণা দলটি।

গবেষণা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করে চাষ করা টমেটোর গাছ গুলো সাধারণভাবে নিয়ন্ত্রিত টমেটোর গাছগুলোর থেকে আকার আয়তনে অনেক বড় এবং অধিক সবুজ। সেই সাথে গাছের কাণ্ড থেকেই শাখা প্রশাখার উৎপত্তির কারণে সাধারণ গাছের থেকে ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগকৃত গাছে টমেটোর ফলন প্রায় চার গুন। একেকটি গাছে প্রায় ২৬০ টির মত টমেটো পাওয়া গেছে। 

টমেটো গুলোর অভ্যন্তরীণ পরিবর্তন ও লক্ষ্য করা গেছে। টমেটো ফলে পানির পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে সাধারণের থেকে অনেক কম, ফলের সলিড অংশই বেশি এবং খেতেও সুস্বাদু বলে জানিয়েছেন গবেষক দলটি। ফলে শতকরা পানির পরিমাণ কম হওয়ায় গবেষকরা আশা করছেন এই টমেটো ফ্রিজে না রেখেই এক মাস সময় পর্যন্ত ভালো থাকবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক গবেষক ও কৃষি অনুষদের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহ মইনুর রহমান বলেন, ড. আজিজুল হকের নেতৃত্বে টাওয়াসের এই গবেষণা প্রকল্পে টমেটোর ফলন ও গাছের শাখা প্রশাখার ওপর ব্যাকটেরিয়ার এই প্রত্যক্ষ প্রভাব আসলেই অভাবনীয়। অন্যান্য যে কন্ট্রোলড টমেটো চাষে আমি এইটার মত এত ফলন ও গাছের এত শাখা উপশাখা বৃদ্ধি দেখিনি। আসলেই এটা অনেক বড় একটা অর্জন। ব্যাক্টেরিয়ার এই যে প্রভাব এটা যদি মাঠ পর্যায়ে, কৃষক পর্যায়ে পৌঁছাতে প্রতিফলন ঘটাতে পারে তাহলে আমি মনে করবো এইটা একটা যুগান্তকারী গবেষণা।

এই গবেষণার বিষয়ে গবেষক ড. আজিজুল হক বলেন, আমাদের এই প্রজেক্ট টি ইউনেস্কোর দ্যা ওয়ার্ল্ড একাডেমী অফ সাইন্স এর অনুদানে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা বিষ, হরমোন মুক্ত ও স্বল্পমাত্মার ফার্টিলাইজার প্রয়োগে সুস্বাদু টমেটো এই টমেটোর ফলন ও গাছের শাখা উপশাখা বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি ১ মাস পর্যন্ত ফ্রিজে রাখা ছাড়াই সংরক্ষণ করতে পারবে সাধারণ মানুষ। 

তিনি আরো বলেন, টেকসই উন্নয়ন এ যেতে হলে এইরকম গবেষণা কৃষক এর হাতে তুলে দিতে হবে, আর এখন সেই দিন টির অপেক্ষায়।

উল্লেখ্য যে, গত বছর ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশনাল সাইন্টিফিক এন্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (ইউনেস্কো) থেকে আন্তঃবিভাগীয় ও আন্ত:মহাদেশীয় যৌথ গবেষণার জন্য দ্য ওয়ার্ল্ড একাডেমী অফ সায়েন্সেস (TWAS) গবেষণা অনুদানের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) কৃষি অনুষদের বায়োকেমিস্ট্রি এন্ড মলিকিউলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল হক এবং তার এই গবেষণা। এর আগে এই গবেষক ব্যাকটেরিয়া প্রয়োগ করে বেগুন চাষে উল্লেখযোগ্য সফলতা পান।

যাযাদি/ এসএম