স্বাধীনতা দিবসে বেরোবি হল শিক্ষার্থীদের খাবারে পোকা ও নিম্নমানের

প্রকাশ | ২৭ মার্চ ২০২৩, ১৯:০৭

বেরোবি প্রতিনিধি

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করা হলে ৩ হলের মধ্যে ছেলেদের শহীদ মুখতার ইলাহী হল প্রশাসন নিম্নমান ও অস্বাস্থ্যকর প্যাকেটে খাবার পরিবেশন করেন। পরিবেশন করা খাবারে পোকা পাওয়া যায় এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আবাসিক শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে চলছে নানান আলোচনা ও সমালোচনা।

জানা যায়, রবিবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি আবাসিক হলে বিশেষ খাবারের ব্যবস্থা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তিন হলের খাবারে তিন রকমের ভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। এরমধ্যে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের শিক্ষার্থীদের জন্য ইফতার সামগ্রী ও বিরিয়ানির প্যাকেট'সহ ১ বোতল করে জুস, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ১ প্যাকেট বিরিয়ানি, শহীদ মুখতার ইলাহি হলেও এক প্যাকেট করে বিরিয়ানি এমনকি আধা সিদ্ধ চাল ও অস্বাস্থ্যকর ৩৭০ প্যাকেটে খাবার বিতরণ করা হয়।

সুত্রে জানা যায়, খাবারের জন্য প্রতি হলে ৫০ হাজার টাকা করে বাজেট ছিলো। তার মধ্যে শহীদ মুখতার ইলাহি হলে ৩৭০ প্যাকেট করা হয়েছিলো। হলের ফান্ডে টাকা না থাকায় কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বকেয়া টাকা দিতে বাজেটের টাকা থেকে খাবারের জন্য কম খরচ করা হয়েছে।

শিক্ষার্থী জানায়, শহীদ মুখতার ইলাহী হলের খাবার সবচেয়ে নিম্নমানের ও অস্বাস্থ্যকর প্ল্যাস্টিকের প্যাকেটে খাবার পরিবেশন করা হয়েছে।

শহীদ মুখতার ইলাহি হলের অধিক শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা জানায়, প্যাকেট হাতে পেয়ে দেখি দুইটি খেজুর, অর্ধসিদ্ধ পোলাও, একটি পোড়া মুরগীর রোস্ট , সাথে গন্ধযুক্ত মশুর ডাল ভুনা। এই খাবার খেয়ে একাধিক শিক্ষার্থীর পেটে সমস্যার বিষয়টিও জানান তারা।

খাবারে পোকা পাওয়া শহীদ মুখতার ইলাহি হলের শিক্ষার্থী রাইসুল ইসলাম স্বাধীন বলেন," বিশেষ খাবারে এমনটা হবে আমি প্রত্যাশা করিনি। আমাকে দেয়া খাবারের প্যাকেটটি ইফতার করার উদ্দেশ্য বের করতে গিয়ে পোকা পেয়েছি। খাবার না খেয়ে সাথেসাথে ফেলে দিয়েছি। এমন খাবার হল প্রশাসনের কাছে কাম্য নাহ। বিষয়টি অত্যন্ত দু:খজনক।

আবাসিক শিক্ষার্থী আবু আব্দুল্লাহ সুজন জানায়, যে খাবার খাওয়ার খাওয়া যায় না তা দেয়ার দরকার কি? রমজান মাসেও শিক্ষার্থীদের সাথে খাবার নিয়ে প্রতারণা মোটেই কাম্য না। এগুলো প্রভোস্টের অদক্ষতা ও দায়িত্বহীনতার পরিচয়। তিনি হলে নিয়মিত খাবার ডাইনিংয়েও কোন খোঁজ রাখেন না।

আরেক আবাসিক শিক্ষার্থী আসাদ জানান, এই নিম্নমানের খাবার খেয়ে শারিরীক ভাবে অস্থ হয়ে পরেছি। পেটের অবস্থা ভালো নাহ। টানা কয়েকবার টয়লেটে যেতে হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করে এক শিক্ষার্থী পোস্ট করেন, প্রভোস্ট স্যার রা তো নিজেরা এ খাবার খাবে না তাই শিক্ষার্থীদের এমন অস্বাস্থ্যকর খাবার দিতে পেরেছে।

এ বিষয়ে শহীদ মুখতার ইলাহী হলের সহকারী প্রভোস্ট জহির উদ্দীন নিম্ন মানের খাবার ও খাবারে পোকা পাওয়ার বিষয়ে বলেন, এমন হয়ে থাকলে তা ঠিক হয়নি। এবার খাবারের বিষয়ে প্রভোস্ট স্যার নিজেই দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বিষয়টি ভালো বলতে পারবেন।

এ বিষয়ে জানতে শহীদ মুখতার ইলাহি হলের প্রভোস্ট ড. রশীদুল ইসলাম কে তার কক্ষে পাওয়া যায়নি। তাকে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ উপদেষ্টা আনোয়ারুল আজিম বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক, আমি বিব্রতবোধ করছি, এর দায় হল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ বলেন, এখন আমি তো ঢাকায় আছি ক্যাম্পাসে ফিরে বিষয়টি দেখবো।

 


যাযাদি/এসএস