সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ-মানববন্ধন

প্রকাশ | ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৯:৩০

জাবি প্রতিনিধি

সাভারে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৯ মার্চ) বিকাল সাড়ে তিনটায় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে মানববন্ধন ও বিকাল চারটায় বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াহিয়া জিসানের সঞ্চালনায় বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী জহির ফয়সাল বলেন, সিকিউরিটি অ্যাক্টের নামে একটি কালো আইন করে সাংবাদিকদের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। স্বাধীন দেশে স্বাধীনতা দিবসে আমাদের লেখার ও মত প্রকাশের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে সাংবাদিক শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানাই। চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খালিদ মাহমুদ তন্ময় বলেন, স্বাধীনতা দিবসে একজন সাংবাদিকের কথা বলার স্বাধীনতা নাই, লেখার স্বাধীনতা নাই। আজ দেশে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির এ পরিস্থিতিতে যখন একজন সাংবাদিক মানুষের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে তখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।

এদিকে একই ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা। বিকাল ৪ টায় বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবহণ চত্ত¡র থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে শহিদ মিনারের সামনে এসে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাপসী দে প্রাপ্তি বলেন, সাদা পোশাকে গুম করার সংস্কৃতি অনেক আগে থেকেই চলে আসছে। যারা সঠিক কথা বলছে এবং রাষ্ট্রের চিত্র তুলে আনছে সে সাংবাদিকদের টুটি চেপে ধরা হচ্ছে। এই রাষ্ট্রের সরকার যখন মনে করবে কোন সাংবাদিক তার বিরুদ্ধে নিউজ করছে, কোন সাংবাদিক সত্যি কথা বলার চেষ্টা করছে তখনি তার মুখটা বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রতিবেদনটি দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে ছিলো, যা দেশের সকল মানুষের এখন বর্তমান ভোগান্তির কারণ।

প্রতিবেদনটি করার কারণে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনের উপস্থিতিতে তুলে নেওয়া হয় এবং পুলিশকে ওয়ারেন্টের কথা জিজ্ঞেস করলে পুলিশ স্পর্ধা দেখিয়ে বলে ‘ওয়ারেন্টের প্রয়োজন নেই’। এমনকি তুলে নিয়ে যাওয়ার পর ডিবি, সিআইডি তা অস্বীকার করে। এতে আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় দেখা দেয়।

গ্রেফতারের ঘটনাকে নিকৃষ্ট হিসেবে উল্লেখ করে প্রতœতত্ত¡ বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী ঋদ্ধ অনিন্দ্য গাঙ্গুলি বলেন, নিজ বাসা থেকে একজন সাংবাদিককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে যেখানে বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন সরাসরি সহায়তা যুগিয়েছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের দোহাই দিয়ে এভাবে মানুষকে তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এটি তখনই করা হয় যখন রাষ্ট্রের গদি টলমল করে। এর আগেও সাংবাদিক ও আলোকচিত্রী শহীদুল আলমসহ অনেককেই এভাবে এই আইনে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই সরকারকে স্বৈরচার বলেছি, এখনও বলছি, কারণ এ সরকার রাতের আঁধারে জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে। আইয়ুব খান টিকে নাই, এরশাদ টিকে নাই সেখানে এই সরকারের গদি টলমল করার আর বেশিদিন নাই।

এছাড়াও সমাবেশে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৯ ব্যাচের শিক্ষার্থী তামিম স্রোত এর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন প্রতœতত্ত¡ বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী সুদিপ্ত দে প্রমুখ।

 

যাযাদি/এসএস