সাংবাদিক শামসুজ্জামানের মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ

প্রকাশ | ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৭:১৪

জাবি প্রতিনিধি

প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার (৩১ মার্চ) বেলা ৩ টায় বিশ^বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনের মহাসড়ক দীর্ঘ এক ঘন্টা অবরোধ করে রাখেন তারা।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্ত¡র থেকে একটি মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি শহীদ মিনার হয়ে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। ঘন্টাব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির কারণে সড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে এসময় রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

অবরোধ কর্মসূচি থেকে শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি উত্থাপন করেন। দাবিগুলো হলো; সাংবাদিক শামসুজ্জামানের নিঃশর্ত মুক্তি, শামসুজ্জামান ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দায়ের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা প্রত্যাহার এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা।

অবরোধ কর্মসূচিতে অর্থনীতি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাপসী দে প্রাপ্তি বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপনের চিত্র একটি প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। আর সেই প্রতিবেদনের দায়ে একজন সাংবাদিককে তার বাসা থেকে রাতের আঁধারে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জিজ্ঞাসা করা হলেও তারা বার বার অস্বীকার করেন। রাষ্ট্রদোহী অপরাধ হলে কেন তারা তাকে সঠিক পন্থায় নিয়ে গেলো না? এই প্রশ্নটি এখন বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের।

তিনি আরও বলেন, তাকে আটকের পর রাষ্ট্র, সরকার, সিআইডি, পুলিশ সবাই আমাদের সাথে নাটক করেছে। তারা জানেনা শামস কোথায় আছেন। অথচ আমরা দেখেছি পরবর্তীতে শামস ভাইকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়েছে। তাহলে প্রশ্নটি হচ্ছে এই যে পুরো একটি দিন একজন সাংবাদিক নিখোঁজ, গুম ছিলো; তখন তার জান-মালের নিরাপত্তা কে দিয়েছে?

ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, সাংবাদিক শামসুজ্জামান দিনমজুরের বরাতে যে কথা লিখেছেন তা এদেশের কোটি কোটি মানুষের মনের কথা। সত্য বললে তার গলা টিপে ধরার রাজনীতি বন্ধ করতে হবে। সত্যের জয় ৭১ এ হয়েছে, ৯০ এ হয়েছে স্বৈরাচার পতনের মাধ্যমে। গণতন্ত্রের যে বুলি আওড়ানো হয়, কোথায় সেই মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা? ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মাধ্যমে মুখ চেপে ধরার সাহস করলে আবার একটি গণঅভ্যুত্থান দেখবে এই দেশ। অনতিবিলম্বে শামসকে মুক্তি না দিলে জাহাঙ্গীরনগরের এই আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদ জাবি শাখার সভাপতি জহির ফয়সাল বলেন, স্বাধীনতা দিবসে একটি রিপোর্ট করার অপরাধে শামসুজ্জামানকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমরা বলতে চাই, দেশে আইয়ুব খানের শাসন চলছে? নাকি ইয়াহিয়া খানের শাসন চলছে? যদি তাই না হয়, তবে কেন একজন সাংবাদিককে স্বাধীনতা দিবসে রিপোর্ট করার জন্য তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অনতিবিলম্বে শামসুজ্জামানের মুক্তি চাই।

আগামী রোববার কোর্ট টাইমের মধ্যে শাসসুজ্জামানকে মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

যাযাদি/ এসএম