জাবি ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ

প্রকাশ | ১০ মে ২০২৩, ২০:০০

জাবি প্রতিনিধি

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের দুই নেতার বিরুদ্ধে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগ করেছেন এক ইন্টারনেট ব্যবসায়ী। চাঁদা না পেলে ব্যবসা বন্ধ ও ওই ব্যবসায়ীর হাত-পা ভেঙে ফেলার হুমকিও দিয়েছের ঐ দুই নেতা। 

এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী। ভুক্তভোগী ইন্টারনেট ব্যবসায়ী মো. মমিনউল্লাহ মমিন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান-পানধোয়া এলাকায় ডিস লাইন সংযোগের ব্যবসা করেন।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ ব্যাচের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী হাছিবুর রহমান এবং ৪৬ ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শান্ত মাহবুব। হাছিব শাখা ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক এবং শান্ত ত্রাণ ও দূর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক। তারা উভয়েই শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটনের অনুসারী। পোষ্য কোটায় ভর্তি হলেও নিয়ম বহির্ভুতভাবে উভয়েই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের ব্লকে থাকেন।

অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী মমিন উল্লেখ করেন, আমি আমবাগান এলাকায় ডিস লাইন সংযোগের ব্যবসা করি। গত ১৫ এপ্রিল হাসিব ও শান্ত ৭/৮ জন লোক নিয়ে আমার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় ডিস সংযোগের লাইন কেটে দেন। 

পরে গত পহেলা মে আমবাগান এলাকা থেকে অফিসের স্টাফ মো. খাইরুল ডিসের বিল সংগ্রহ করতে গেলে হাছিবুর রহমান তাকে তুলে নিয়ে যায় ও তার কাছে থাকা নগদ সাড়ে আট হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। এসময় খাইরুলকে পা ভেঙ্গে ফেলার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে তারা ৫ মে ডিস লাইনের তার ও মেশিন কেটে নিয়ে যায়। এছাড়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের লোকজনের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

মমিন বলেন, চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ৭-৮ জন ব্যবসা বন্ধ রাখতে হুমকি দিয়ে গেছে। তবুও আমরা ব্যবসা পরিচালনা করায় ডিসের লাইন কেটে দিয়েছে এবং লাইনম্যানকে তুলে নিয়ে যায়। গত একমাস যাবৎ ডিস ব্যবসা একেবারেই বন্ধ আছে। প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ায় ।

অফিসের স্টাফ খাইরুল বলেন, ডিসের বিল কালেকশনে গেলে হাছিব আমাকে এসে জিজ্ঞাসা করে, কার বিল তুলতেছিস? তখন সে আমার হাত থেকে বিলের খাতাটি ছিনিয়ে নেয় এবং আমাকে বাইকে উঠিয়ে নিয়ে গিয়ে মারধর করে। আমি তাদের বলেছি, তাদের ব্যবসায়িক ঝামেলা তারা সমাধান করুক। আমার কি দোষ ছিলো। তবুও তারা আমাকে মারধর করেছে।

অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে অভিযুক্ত হাছিব বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। মমিন নামে কাউকে চিনি না।

অপর অভিযুক্ত শান্ত বলেন, আমরা কোন চাঁদা দাবি করিনি। এই ব্যক্তির সাথে ঈদের আগে কোন কথা হয়নি। কয়েকদিন আগে প্রথম কথা হয়েছে। হাছিবুর রহমান মাসুদ নামের এক ভাইয়ের সাথে পানধোয়া এলাকায় ডিস লাইন ব্যবসার অংশীদার হয়েছে। সেখানে মাসুদের সাথে অন্য অংশীদারদের ঝামেলা হওয়ায় তারা লাইন কেটে দিয়েছে। এখানে চাঁদা দাবি বা লাইন কেটে দেওয়ার কোন ঘটনা ঘটেনি।

ঘটনার ব্যাপারে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ছেলেরা তার কাছে চাঁদা দাবি করেছে তা ঐ ব্যবসায়ী এসে প্রমাণ করুক। অভিযোগ প্রমাণ করতে পারলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো। যদি মিথ্যা হয় তবে তার শাস্তি তাকে পেতে হবে।

মামলার বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গত সোমবার অভিযোগপত্র পেয়েছি। অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার তদন্তের জন্য আমরা সেখানে গিয়েছি। তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যাযাদি/ এম