চিরকুট লিখে রাবি শিক্ষার্থীর গলায় ফাঁস
প্রকাশ | ০৯ জুন ২০২৩, ০৯:৫৫
"শেষ করলাম সবকিছু। এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য এই সিদ্ধান্ত, আর কোন উপায় ছিল না আমার কাছে। শেষমেষ একাকীত্ব আমাকে গিলে খেলো"। এমন এক চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) এক শিক্ষার্থী।
বৃহস্পতিবার (০৮ জুন) দিবাগত রাতে বিনোদপুরে স্টুডেন্ট প্যালেস মেসে এ ঘটনা ঘটে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম মো. তানভীর ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাসা নীলফামারী জেলার সদর থানার কাঞ্চন পাড়ার আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে। মৃত্যুর আগে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছেন এমন একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
এতে লেখা রয়েছে,'প্রিয় বাবা-মা আপনাদের অনেক ভালোবাসি। জানিনা কোথায় কমতি ছিল। আম্মুর জন্য বেশি খারাপ লাগতেছে। আমাদের ফ্যামিলিটাই আম্মুর অবদানই বেশি বলে আমি মনে করি। কথাটা বলার অনেক কারণ আছে সেটা আব্বু জানে। তোমাদের জন্য কিছু করতে তো পারলামই না উল্টো ফ্যামিলিটাকে শেষ করলাম। ছোট বোনটার কথা আর বললাম না। কান্না পাচ্ছে..
দিনের পর দিন আপনাদের ঠকায়ে গেছি। এসব আপনারা জানতে পারলে হয়তো ভিতর থেকেই মরে যেতেন। সব সময় ভয়ে ভয়ে থাকতাম গলা দিয়ে খাবার নামতো না। শেষ করলাম সবকিছু। এসব কিছু থেকে বাঁচার জন্য এই সিদ্ধান্ত, আর কোন উপায় ছিল না আমার কাছে। শেষমেষ একাকীত্ব আমাকে গিলে খেলো। মনের শক্তি ফুড়িয়ে এলে দেহের শক্তি যতই থাকে সম্ভব না বাঁচা। যদিও ক্ষমার যোগ্য না আমি,পারলে ক্ষমা করে দিয়েন। আপনাদের অযোগ্য সন্তান।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, আমরা দড়ি দিয়ে ফ্যানের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে পেয়েছি। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। আত্মহত্যা করার আগে নিহত শিক্ষার্থী একটি সুইসাইড নোট লিখে যান। যেখানে আসলে কাউকে দোষারোপ না করে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছেন বলে লেখা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ এখন পোস্টমর্টেমের ব্যবস্থা করবে। পরে আমরা তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মতিহার থানার পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন বলেন, আমি বিষয়টি অবগত আছি এবং মেডিকেলেও গিয়েছিলাম। এখনো আমরা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে পারিনি। সঠিক কারণ জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
যাযাদি/ এস