সীমান্তে স্বর্ণা দাস ও শ্রী জয়ন্তকে হত্যার প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন 

প্রকাশ | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৫:০৬

রাবি প্রতিনিধি
ছবি : যায়যায়দিন

বিএসএফ কর্তৃক স্বর্ণা দাস ও শ্রী জয়ন্তকে নির্মমভাবে খুন এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং কর্তৃক বাংলাদেশকে জঘন্য ও বেআইনী হুমকি প্রদানের প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মানববন্ধন করেছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিরাজী ভবন থেকে মিছিল নিয়ে  সিনেট সংলগ্ন প্যারিস রোডে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন করেন তারা।

এসময় পাক-চীন সীমান্তে কাপো থরো থরো, বাংলার সীমান্তে কেন শিশু মারো? স্বর্ণা আমার বোন, জয়ন্ত আমার ভাই। ভাই বোনকে মারলি কেন মোদির কাছে জবাব চাই। সীমান্তে আর কত বাংলাদেশী মারবে ভারত? বাংলাদেশ কতকাল নিশ্চুপ থাকবে? ফেলানী থেকে স্বর্ণা, স্বর্ণা থেকে জয়ন্ত তারপর? বাংলাদেশের জলসম্পদ নিয়ন্ত্রণ কারী আগ্রাসী দিল্লির দখলদারিত্ব নিপাত যাক। এসব লেখা সম্বলিত প্লেকার্ড হাতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের।

এছাড়া, "দিল্লি না ঢাকা?" "আমার বুকে তিস্তার জল কাইড়া নিল কে?", "দিল্লির দাদাগিরি মানি না মানব না", "সীমান্তে লাশ কেন, কসাই মুদি জবাব দে", সীমান্তে মানুষ মরে বিজিবি কি করে?  "দিল্লির আগ্রাসন, জনগণ রুখে দাও ", "ভারতীয় আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও" এমনসব স্লোগান দিতে শোনা যায়।

এসময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, ভারত বর্ডারে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়েছে। আবার যদি দাঁড়াতে হয় সারাদেশের শিক্ষক সমাজ, শিক্ষার্থী সমাজ আবার রুখে দাঁড়াবে। ভারতের চামচারা তাদের বন্ধুত্বের নমুনা দিচ্ছে। আগে ভারতকে হাজার টন ইলিশ পাঠালে ওরা আমাদের আবরার, স্বর্ণা, জয়েন্ত, ফেলানীর মতো লাশ উপহার দিয়েছে। আমরা শেখ হাসিনা-মুদির মতো বন্ধুত্ব চাই না। বন্ধুত্ব করতে হবে দেশের সাথে দেশের। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতে তারা প্রচেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছে। ভারতের আগ্রশন বন্ধ করতে হবে। স্বর্ণা, ফেলানীর হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভারতের সাথে বন্ধুত্বের সিদ্ধান্ত নিবে না। এতদিন পর্যন্ত যত হত্যা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে। 

এসময় রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তারেক ফজল বলেন, ২০২৪ সালের ছাত্রদের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা এ স্বাধীনতা অনুভব করতে পাচ্ছি। বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তে স্বর্ণা, জয়েন্ত খুন এবং ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিং কর্তৃক বাংলাদেশকে জঘন্য ও বেআইনি হুমকি প্রদানের বিরুদ্ধে এখানে রাষ্ট্রনীতি বিজ্ঞানীদের পক্ষ থেকে আমরা তীব্র ও নিন্দা জানাচ্ছি। 

তিনি আরো বলেন, ভারতীয় প্রতিমন্ত্রী রাজনাথ সিং কে আমরা বলতে চাই আপনি আপনার নিজের চর্কায় তেল দিন। আপনি নিজেই নিজের দেশকে বাঁচান। বাংলাদেশকে নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। একই সাথে তিনি বলেন, বাংলাদেশে যদি একটা বুলেট ছোড়া হয় তাহলে আমরা ১০টা বুলেট ছুড়বো।

অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, দিল্লি না ঢাকা শ্লোগান আমাদের জন্য অবমাননাকর। আমরা ঢাকা কে দিল্লির তুলনা করতে চায়না। এখন বাংলাদেশ আর সেই পর্যায়ে নেই যে আমরা চুপ করে বসে থাকবো । আমরা ব্যক্তির সাথে ব্যক্তির বন্ধুত্ব চায় না, আমরা দেশের দেশের বন্ধুত্ব চায়। বাংলাদেশ এখন আর ফ্যাসিবাদের সরকার অধিনে নেই। আজকে যে হত্যাকাণ্ড গুলো হচ্ছে তা পৃথিবীর আর কোথায় হয়না। এগুলা আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে। আমরা চায় ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা করে এর সুষ্ঠু বিচার করা হোক।

এসময় মানববন্ধনে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষকসহ চার শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

যাযাদি/ এসএম