শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ৪ মাস পেরোলেও ব্যবস্থা নেয়নি শাবি প্রশাসন

প্রকাশ | ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭:১৪

শাবি প্রতিনিধি
ছবি: যায়যায়দিন

১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, অস্ত্র, মাদক উদ্ধার এর ঘটনায় চার মাস পেরোলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযুক্তরা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছে প্রকাশ্যে। অংশগ্রহণ করছেন ক্লাস-পরীক্ষায়। আবাসিক হলে ছাত্রলীগের দখলকৃত কক্ষ থেকে অস্ত্র-মাদক উদ্ধার হলেও মামলা করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

এর আগে গত ১৫ জুলাই দিবাগত রাতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী পতিত সরকার শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদেরকে ’রাজাকারের বাচ্চা’ আখ্যা দেয়ার পর এর প্রতিবাদে শাবি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করলে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। এ ঘটনায় ২ জন শিক্ষার্থী আহত হয়।

কোটাসংস্কার আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নেতাকর্মীরা, পরবর্তীতে ৮ ও ১০ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহপরান হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে অভিযান চালায়। অভিযানে হলগুলোতে ছাত্রলীগের দখলকৃত কক্ষ থেকে ১টি রিভলবার, ১টি শটগান, ২০০ জিআই পাইপ, ১৪ টি চাকু, ৩ টি চেইন, ১টি হাতুড়ি, ১টি হেলমেট, দেড়শতাধিক খালি মদের বোতল, ১০০ গ্রাম গাজা পাওয়া যায়।

দুইধাপে অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় চার মাস পেরোলেও বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এখনো কোনো মামলা করেনি। ফলে দোষীরা শাস্তির আওতা থেকে পার পেয়ে যাচ্ছে বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ।

গনিত বিভাগের শিক্ষার্থী মো. হাফিজুল ইসলাম বলেন, ”জুলাই বিপ্লবের পরে যারা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে দায়িত্বে এসেছেন তাদের মাঝে শিক্ষার্থীবান্ধব কোনো সিদ্ধান্ত নিতে দেখছিনা। আমরা প্রশাসনের কাছে খুব দ্রুত সময়ের মাঝে হলে অস্ত্র-মাদকের সাথে সম্পৃক্ত এবং শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত শাস্তির আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে গত ২৪ সেপ্টেম্বর একটি তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করে। কমিটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিলেও রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে তথ্যানুসন্ধান কমিটির প্রধান ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ এছাক মিয়া বলেন, ”আমরা হামলায় আহত শিক্ষার্থী, তৎকালীন-বর্তমান হল প্রভোস্ট, অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সব পক্ষের তথ্য যাচাই করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ এ ব্যপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. মোখলেসুর রহমান বলেন, ”বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তথ্যানুসন্ধান কমিটির রিপোর্ট পেয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।”

যাযাদি/এআর