রাবিতে স্মার্ট আইডি কার্ডে করণীয় নির্ধারণে কমিটি গঠন
প্রকাশ | ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:০৮

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সালে চালু হওয়া স্মার্ট আইডি কার্ডের মাধ্যমে ২৮টি সেক্টরে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার কথা। তবে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও ফর্ম-ফিলাপের সময় ছাড়া আর কোনো কাজেই লাগে না এই স্মার্ট কার্ড। ফলে স্মার্ট কার্ডের ফি কমানোর দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ ডিসেম্বর 'স্মার্ট আইডি কার্ডের দাম কমানোর দাবি রাবি শিক্ষার্থীদের' শিরোনামে নিউজ প্রকাশ করে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকা।
এ বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যবিশিষ্ট করণীয় নির্ধারণ কমিটি গঠিত হয়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুপারিশ প্রদান করতে বলা হয়েছে।
প্রকাশিত ওই নিউজে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু হয় স্মার্ট আইডি কার্ড। এই কার্ড নিতে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে অতিরিক্ত ৪০০ টাকা করে ফি দিতে হয়। তবে উপযুক্ত অবকাঠামো গড়ে না তোলায় আধুনিক এ কার্ড শিক্ষার্থীদের কোনো কাজেই আসছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই সকল সুবিধা না পাওয়ায় স্মার্ট আইডি কার্ডের দাম কমানোর দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনতে দেশের প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ২০১৭ সালে স্মার্ট আইডি কার্ড চালু করেন তৎকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ মিজানউদ্দিন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, ইন্টারনেট সার্ভিস, পেমেন্ট সিস্টেম, মেডিকেল কার্ড ও লাইব্রেরি কার্ড, বাস কার্ডসহ ২৮টি সেক্টরে এ কার্ডের ব্যবহার নিশ্চিত করার কথা ছিল। ফলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির সময় স্মার্ট কার্ড বাবদ অতিরিক্ত ৪০০ টাকা ফি নেওয়া হয়।
কার্ডে শিক্ষার্থীদের নাম, নিবন্ধন নম্বর, আইডি কোড, ছবি, বিভাগ, হল কোড, বর্ষ ব্যক্তিগত সব তথ্য সংরক্ষণ করা হয়। এ কার্ড ব্যবহার করে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার নম্বরপত্র ও সনদপত্র তোলা, গ্রন্থাগার, বিভাগ, ইনস্টিটিউট, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস, হল অফিস এবং নিরাপত্তাবিষয়ক বিভিন্ন কাজ করার সুযোগ পাবেন বলে বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সূত্রে জানা যায়, স্মার্ট কার্ড বাবদ ২০১৬-১৭ সেশনের ৪ হাজার ১৪৫ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা করে প্রায় ১৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আদায় করা হয়। ২০১৭-১৮ সেশনের ৪ হাজার ১১৯ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৪৭ হাজার ৬০০ টাকা, ২০১৮-১৯ সেশনের ৪ হাজার ১৭৩ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৬৯ হাজার ২০০ টাকা, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ১৫১ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৬০ হাজার ৪০০ টাকা।
২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ১৭৩ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় লাখ ১৬ হাজার ৬৯ হাজার ২০০ টাকা ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ৪ হাজার ২০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রায় ১৬ লাখ ৮ হাজার টাকা। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৭৮৩ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৭ লক্ষ ৫৪ হাজার এবং সর্বশেষ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের ৪ হাজার ৩৩২ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১৭ লক্ষ ৩২ হাজার ৮শত টাকা আদায় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত ৭ বছরের কার্ড ক্রয় বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রায় ১ কোটি ১ লক্ষ ৩০ হাজার ৪০০ টাকা আদায় করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর প্রশাসক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন মজুমদার বলেন, স্মার্ট আইডি কার্ডের ফি কমানো নিয়ে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হলে আমাদের নজরে আসে। এই সেবা সহজতর প্রক্রিয়ায় কীভাবে শিক্ষার্থীরা পেতে পারে সে বিষয়ে গঠিত এই কমিটি সুপারিশ করবেন। তাদের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
যাযাদি/ এম