পিএসসি'র তিন বিতর্কিত সদস্যের নিয়োগ বাতিলের দাবি শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন
প্রকাশ | ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:১৮

আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পিএসসি'র তিন বিতর্কিত সদস্যের নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিতর্কিত ৩ সদস্য হলেন - ডা.শাহীনা সোবহান,ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ)এফ জাগরুল আহমেদ ও মিজানুর রহমান ।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম এন্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক জালাল আহমদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র মামুন হাসান, ফার্সি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ছাত্র আল আমিন মিরা,নজরুল ইসলাম, শান্তি ও সংঘর্ষ বিভাগের শিক্ষার্থী রাখেশ, বাংলা বিভাগের ছাত্র মোঃ আবু হানিফ আল ইমরান, প্রমূখ।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, "পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের তিনজন দোসর কে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)'র সদস্য হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে গত ২জানুয়ারি ২০২৫।তাদের মধ্যে ডা.শাহীনা সোবহানের বাবা সৈয়দ আব্দুস সোবহান ১৯৭৯ সালে জামালপুর ৫ আসন থেকে আওয়ামীলীগের এমপি ছিলেন।
১৯৭৫ সনে বাকশাল গঠিত হলে তিনি সম্পাকমন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সনে শেখ মুজিবের হত্যাকান্ডের পর তিনি আত্মগোপন করেন। ১৯৭৬ সনের ৪ মার্চে তিনি গ্রেপ্তার হন।এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী দীপু মনির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিলেন ঢাকা মেডিকেলে পড়ার সময়। তিনি বির্তকিত জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্য ও জনপ্রশাসন সচিব মোখলেস সাহেবের স্ত্রী ডক্টর বেলির সুপারিশে নিয়োগ প্রাপ্ত।
তারা আরো জানান, "ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ)এফ জাগরুল আহমেদ আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন ।তিনি ২০১৪ সালে আয়নাঘর মানে ডিজিএফআইয়ের পরিচালক ছিলেন ও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত।২০১৮সালে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগ করে অবসরে যান।"
শিক্ষার্থীরা আরো বলেন, "ড. মো. মিজানুর বিসিএস ৮৫তম ব্যাচের কর্মকর্তা। আওয়ামী লীগের সময়ে বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বিয়াম ফাউন্ডেশনকে প্রশাসন ক্যাডারদের ‘কেন্দ্রবিন্দু’ ধরা হয়ে থাকে। উনিও আওয়ামী লীগের আমলে বিভিন্ন দূতাবাসে প্রাইজ পোস্টিং পেয়েছেন।"
শিক্ষার্থীরা আগের উদাহরণ দিয়ে বলেন, "এর আগে আওয়ামী লীগের সুবিধাবাদী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ডাঃ জালালকে পিএসসি’র সদস্য করার জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ছাত্র জনতা রুখে দিয়েছে।"
সামরিক কর্মকর্তাদের পিএসসি তে নিয়োগের যৌক্তিকতা নেই বলে জানান শিক্ষার্থীরা। কারণ
সামরিক প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা পিএসসি’তে প্রাসঙ্গিক নয়।
পিএসসিতে আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীদের নিয়োগ না দেওয়ার আহবান জানিয়ে তারা বলেন, "চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের শুরুটা ‘কোটা বিরোধীতিা ’কে কেন্দ্র করেই হয়েছিল। আর কোটার ‘প্রয়োগ’ মেলে পিএসসি’র নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে। তাই পিএসসিতে পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের তিন দোসরের নিয়োগ শহীদের আত্মার সাথে প্রতারণা।আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়োগ দিলে পিএসসি ঘুষ, দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হবে। "
বিতর্কিতদের কে কারা নিয়োগ দিচ্ছে এমন প্রশ্ন তুলে শিক্ষার্থীরা জানান, "চব্বিশের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ফসল বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রশাসনে এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে পতিত সরকারের দোসররা। তারাই প্রশাসনকে উল্টো পথে নিয়ে যাচ্ছে। সংস্কারের পথে বারবার বাধার সৃষ্টি করছে। বিতর্ক সৃষ্টি করছে।"
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নিয়োগের দাবি জানিয়ে তারা বলেন, সকল সাংবিধানিক পদে আপাতত সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে গণশুনানী করে গ্রহণযোগ্য ও দক্ষ ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য আমরা আহবান জানাচ্ছি।
যাযাদি/ এম