বুয়েট ও মেডিকেলে চান্স পেল সখীপুরের যমজ বোন
প্রকাশ | ০১ মার্চ ২০২৫, ১৯:২১

সখীপুরে শিক্ষক দম্পতির যমজ দুই মেয়ের একজন বুয়েটে, অন্যজন মেডিকেলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। মেয়েদের এ সফলতায় প্রশংসায় ভাসছেন বাবা জুয়েল মিয়া এবং মা চায়না আক্তার।
যারীন তাসনীম ও যাহরা তাসনীম যমজ বোন। মায়ের পেট থেকে দুনিয়ায় আসার পর থেকেও স্কুল-কলেজের বেঞ্চে একসঙ্গে ছিলেন। এক টেবিলে পড়াশোনা, এক টেবিলে খাওয়া দাওয়া, এক বিছানায় ঘুমানো। এভাবেই তাদের বেড়ে ওঠা। আর এমনি করে কেটেছে ১৭টি বছর।
ছোট বেলা থেকেই একজনের স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়া, অন্যজনের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার। ভর্তি পরীক্ষায় যারীন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) এবং যাহরা টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
যারীন ও যাহরা টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার শিক্ষক দম্পতি আবু জুয়েল ও চায়না আক্তারের যমজ মেয়ে। শিক্ষাজীবনে পিএসসি থেকে শুরু করে সব পরীক্ষায় তাঁরা জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। যারীন-যাহরার বাবা আবু জুয়েল উপজেলার সূর্য তরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক আর মা চায়না আক্তার উপজেলার শান্তিকুঞ্জ একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কচুয়া গ্রামে।
বুয়েটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া যারীন তাসনীম, এর আগে এইচএসসি পরীক্ষায় রাজধানীর হলিক্রস কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা একসঙ্গে খেলাধুলা, খাওয়া এবং পড়াশোনা করেছি। বড় হয়েও একই বিছানায় ঘুমিয়েছি। স্কুল-কলেজে একই বেঞ্চে বসে পড়াশোনা করেছি। শুধু কলেজ ছাড়া ওয়ান থেকে টেন পর্যন্ত এক সেট বইয়ে দুজন পড়েছি। আমাদের কখনো মোবাইল ফোন না। তবে কলেজে দুজনে মিলে একটি বাটন ফোন চালিয়েছি। ১৭ বছর একসঙ্গে থেকেছি। স্বপ্নপূরণে ও ভবিষ্যৎ জীবন গড়তে এখন থেকে আমাদের আলাদা থাকতে হবে।’
যারীন বলেন, স্কুলজীবনে গণিত বিষয়টি বেশি ভালো লাগত । আর কলেজে উঠে পদার্থ পড়তে বেশি ভালো লাগত। এ কারণে তিনি মনে করতেন প্রকৌশলী হওয়া যাবে। আল্লাহ তাঁর আশা পূরণ করেছে। তিনি সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন।
অপরদিকে বয়সে দুই মিনিটের ছোট যাহরা তাসনীম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। চিকিৎসক হয়ে সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, সাধারণ অসহায় রোগীদের সেবা করতে চাই। তিনি দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন । সে যেন আমার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে।’
যারীন-যাহরার মা চায়না আক্তার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই যারীন ইঞ্জিনিয়ার আর যাহরা ডাক্তার হতে চেয়েছিল। আল্লাহর অশেষ রহমত এবং মেয়েদের চেষ্টা ও পরিশ্রমে স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।’
সূর্য তরুণ শিক্ষাঙ্গন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘ওদের আমি গণিত পড়িয়েছি। ওরা আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। দোয়া করি, ওরা বড় হয়ে ভালো মানুষ হবে। দেশ ও দশের সেবা করবে।’
যাযাদি/ এমএস