ববি উপাচার্যের পদত্যাগ আন্দোলনে যোগদিলেন শিক্ষকরা
প্রকাশ | ০৮ মে ২০২৫, ১৪:৫৯

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ভিসি অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত লাইব্রেরিয়ান পদত্যাগ করেছে। এর আগে আরো তিন জন শিক্ষক প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করেছে । এর আগে ভিসি পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে ১৫ বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
বৃস্পিতিবার (৮ মে ) সকাল সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দেন শিক্ষকরা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বিগ্ন শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে বিবৃতি পাঠ করা হয়। পরে সাড়ে বারোটার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় গ্রাউন্ড ফ্লোরে এসে শেষ হয় ।
শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন, কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এর চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক, বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার, সহকারী অধ্যাপক উন্মেষ রয় উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এটিএম রফিকুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিকসহ অন্যান্যরা।
শিক্ষার্থীদের সকল দাবির প্রতি সংহতি প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিন বলেন,“একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেট সভা থেকে আমাকে বেআইনিভাবে ও সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে। আমাকে 'ফ্যাসিস্ট' আখ্যা দিয়ে অপমানজনকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়। আমাদের প্রতিষ্ঠানের আইনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, কীভাবে কাউকে এসব পদে অন্তর্ভুক্ত বা অব্যাহতি দেওয়া যাবে। অথচ সেই আইনকে উপেক্ষা করে, কোনো আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই আমাকে অপসারণ করা হয়েছে। এ ধরনের আচরণ প্রশাসনিক স্বেচ্ছাচার ও দমননীতির স্পষ্ট প্রমাণ।”
এ সময় উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর এটিএম রফিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষার্থীদের নামে যে মামলা দেয়া হয়েছে তার সাথে আমি একমত না । আমি তখন প্রক্টর ছিলাম কিন্তু মামলার বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। সম্প্রতি একটা জিডি হয়েছে । এর সাথেও আমি কোনো ভাবেই একমত না । আমার সন্তানরা কেন মামলা খাবে ? তাদের ক্যারিয়ার আছে । তাদের জীবনে কেন লাল কালির দাগ পড়বে। আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিন স্যারকে সম্প্রতি একটি চিঠি দেয়া হয়েছে । চিঠিটা আমি পড়েছি । এরকম ভাষা কোনো ভাবেই কাম্য নয় । আমাদের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিতেই আমি আজকে এখানে দাড়িয়েছি।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, আগামীকাল গুচ্ছের ভর্তি পরীক্ষা রয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি ভর্তি পরীক্ষায় উপাচার্যের উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক নয়, তাই উপাচার্যকে কোনভাবেই ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় সার্বিক সহযোগিতা আমরা করব যেন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পরীক্ষা শেষ হয়।
এছাড়াও কাজ নেই মজুরি নেই ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারিরাও কর্মসূচিতে অংশ নেন৷ পরবর্তী কর্মসূচি হিসেবে শিক্ষার্থীরা শুক্রবার অনুষ্ঠিত গুচ্ছ পরীক্ষায় উপাচার্যকে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেন৷