জবির সাবেক শিক্ষার্থীরা যোগ দিয়েছেন আন্দোলনে
প্রকাশ | ১৬ মে ২০২৫, ১৩:০৭

তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৬ মে) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ শীর্ষক ব্যানারে কাকরাইল মোড়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যোগ দেন তারা।
এসময় সাবেক শিক্ষার্থী ত্রিদিব সাহা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের ওপর ঘাত-প্রতিঘাত, এটা আমরা মেনে নিতে পারি না। উপদেষ্টা যেভাবে আমাদের ছাত্র সমাজের উপরে হুমকি দিচ্ছেন, তিনি আমাদের আন্দোলন করতে দেবেন না! উনি বলার কে? এ দেশ আমাদের। রক্ত দিয়েছে আমার ছাত্র ভাইয়েরা।
আমাদের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান এবং সাবেক যারা আছেন সবাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামাবো না। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা যেভাবে এ রাষ্ট্র থেকে গিয়েছেন জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করে, দাবি আদায় না হলে যারাই ক্ষমতায় থাকবেন তাদেরও একই পরিণতি হবে।’
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এ তিন দফা দাবি যৌক্তিক। অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত এ তিন দফা দাবি মেনে নেওয়া উচিত। দাবিগুলো পূর্ণাঙ্গরূপে বাস্তবায়নের ঘোষণা যতক্ষণ না দেওয়া হবে, ততক্ষণ এ আন্দোলন চলবে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও বিচারের দাবি জানান বক্তারা।
এসময় আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. জহিরুল ইসলাম শিকদার। কার্যকরী সভাপতি আলতাফ হোসাইন, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ সজল, সাবেক শিক্ষার্থী অ্যাডভোকেট মহসীন বিশ্বাস প্রমুখ।
এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩মে) দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।
পরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিংয়ে এলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।
সংঘর্ষের পর শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারি আহত ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।
আন্দোলনকারীদের তিন দফা দাবি হলো- আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।