রাবি শিক্ষার্থীর গবেষণায় জুলাই অভ্যুত্থানে শিশু হত্যা

প্রকাশ | ১৮ মে ২০২৫, ১৮:৫০

রাবি প্রতিনিধি
ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী মো. সাব্বির শেখের গবেষণায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের শিশু হত্যাকাণ্ডের বিবরণ উঠে এসেছে। 
যেখানে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত মোট ৮৯ শিশুকে নৃশংসতায় প্রাণ দিতে হয়েছে। 
নিহত শিশু-কিশোরদের সবার বয়স ৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্য।

মো. সাব্বির শেখ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। 
ইরান ভিত্তিক আন্তর্জাতিক জার্নাল 'জার্নাল অফ ইনজুরি এন্ড ভায়োলেন্স রিসার্চ' এ "Violence and Trauma towards Children and Adolescents in the July Mass Uprising (2024) in Bangladesh: A Socio-demographic Analysis of 89 Deaths" শিরোনামে তার এই গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে। 
এটি ইরানের কেরমানশাহ ইউনির্ভাসিটি অফ মেডিকেল সায়েন্সেস থেকে প্রকাশিত ওপেন-একসেস পিয়ার-রিভিউড মেডিকেল জার্নাল।

গবেষণা সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সর্বমোট ৮৯ জন শিশু-কিশোরকে হত্যা করা হয়েছে। 
তাদের বয়স সীমা ছিল ৪ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে এবং গড় বয়স ছিল ১৫.২ বছর। 
১৮ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৫৬ জন মারা যায় এবং আহত ৩৩ জন মারা যায় ৫ আগস্টের পরে। 
এর মধ্যে ৫৮ জন মারা যায় ঢাকায় এবং বাকি ৩১ জন মারা যায় ঢাকার বাইরের ১৬ টি জেলায়। 
৮৯ জন শিশু-কিশোরের মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় ৭৯ জন,  পুড়ে মারা যায় ৯ জন এবং একজনের মৃত্যু হয় স্প্লিন্টারের আঘাতে। 
এর মধ্যে ৪২ জন ছাত্র এবং ২৯ জন শিশুশ্রমের সাথে জড়িত ছিল। এই বিশ্লেষণে দেখা গেছে প্রায় ৯০ শতাংশ শিশু-কিশোর গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে, যা সশস্ত্র সংঘাতের তৎপরতা নির্দেশ করে এবং ঢাকা ছিল সহিংসতার কেন্দ্রস্থল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, 'আমরা ফ্যাসিবাদী হাসিনার সহিংস কর্মকাণ্ড, হত্যাকাণ্ড, এবং জুলাই অভ্যুত্থান ও এর অবদানকে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বাঁচিয়ে রাখতে চাই। 
আমাদের এই গবেষণা তারই সামান্য একটা প্রয়াস মাত্র। তাছাড়া হাসিনা সরকারের ফ্যাসিবাদি শাসনকালে সংগঠিত অত্যাচার, সহিংসতা এবং ট্রামাটিক  ঘটনা নিয়ে গবেষণা কাজ চলছে।'

গবেষণা পত্রটির অন্য এক অথর 'বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন' এর ড. মোহাম্মদ সরোয়ার হোসেন সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেন 'শুনতে অবাক লাগলেও, আমরাই প্রথম যারা জুলাই নিয়ে ফুল রিসার্চ পেপার পাবলিকেশন করেছে।'

এছাড়া এই গবেষণার কো-রেসপন্ডিং অথর হিসেবে ছিলেন বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো এস এম ইয়াসির আরাফাত।